Ajker Patrika

বাজারে আড়াল রেললাইন

বাজারে আড়াল রেললাইন

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইন দখল করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সপ্তাহে দুই দিন বসছে হাট। এতে ক্রেতা-বিক্রেতারা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে বেচাকেনা করেন। ট্রেন আসার সংকেতে অনেকে জিনিসপত্র গুছিয়ে নিলেও পরক্ষণেই আবার বসেন। জানা গেছে, সংশ্লিষ্টদের নিষেধ করলেও বিষয়টি তাঁরা আমলে নিচ্ছেন না।

স্থানীয়রা জানান, কাওরাইদ বাজারের বেচাকেনা চলে রেললাইনের ওপর। ঝুঁকি নিয়ে বেচাকেনা চলে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। সপ্তাহে দুই দিন (বৃহস্পতি ও রোববার) ঢাকা পড়ে পুরো রেললাইন। ট্রেন এলে দোকানিরা ডাকাডাকি শুরু করেন। মালামাল ফেলে সরে যান দোকানি ও ক্রেতারা। বহু বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে রেললাইনের ওপর বসছে এ বাজার।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ রেললাইনের ওপর বসেছে হাট। ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসেছেন রেললাইনের ওপর।

হাঁস-মুরগি বেচাকেনা চলে রেললাইনের ওপরই। দোকানি আর ক্রেতাদের সমাগমে ঢাকা পড়েছে রেললাইনটি। ট্রেন এলে ডাকাডাকি শুরু হয়, ট্রেন আসছে; সবাই সরে যাও। এরপর দোকানিরা দোকান ফেলে দৌড়াদৌড়ি করে নিরাপদ আশ্রয় চলে যান। কোনো কোনো সময় মালামাল রেললাইনের ওপর থেকে সরিয়ে না নিতে পারলে পিষে যাচ্ছে ট্রেনের চাকায় নিচে।

কাওরাইদ বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘ইজারাদার আমাদের যেখানে বসতে বলেন, আমাদের তো সেখানেই বসতে হয়। ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বেচাকেনা করি। ট্রেন এলে আমরা ডাকাডাকি করে নিরাপদ আশ্রয় চলে যাই। বাজারের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও সেটি অবৈধ দখলে রয়েছে।’

বাজারে হাঁস-মুরগি বিক্রি করতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাঝেমধ্যে শাকসবজি ও হাঁস-মুরগি বিক্রি করতে আসি। রেললাইনের ওপর বাজার। এ জন্য আমাদের এখানেই বেচাকেনা করতে হয়।’

শাকসবজি কিনতে আসা আসলাম মিয়া বলেন, ‘আমরা তো বাধ্য হয়ে বাজার করতে আসি। বাজার বসে রেললাইনের ওপর। ঝুঁকির মধ্যেই কেনাকাটা করতে হয়। বাজার একটি নির্দিষ্ট নিরাপদ জায়গায় সরানো উচিত। নইলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।’

কাওরাইদ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বলেন, ‘বাজারের নির্দিষ্ট জায়গা কাঠ ব্যবসায়ীরা দখলে রেখেছেন। পুরো বাজারে এলোপাতাড়িভাবে বিভিন্ন ধরনের কাঠ ফেলে রাখা হয়েছে। যার কারণে অনেকেই বাধ্য হয়ে রেললাইনের ফাঁকা জায়গায় দোকান বসান।’

কাওরাইদ রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার আল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন অনুযায়ী কোনোভাবেই রেললাইনের ওপর বা পাশে হাট-বাজার বসানোর নিয়ম নেই।

এর আগে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হলেও তারা তা মানছে না। বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বাজার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’

কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, ‘রেললাইনের ওপর হাট বাজার না বসানোর জন্য বাজার ইজারাদারকে জানানো হয়েছে। তবু ওরা কথা শুনছে না।’ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হবে।

রেললাইনের ওপর থেকে বাজার সরানোর উদ্যোগ নেবেন বলেও জানান তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত