Ajker Patrika

নিলামে উঠছে দেশের প্রথম শিল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ১৮
নিলামে উঠছে দেশের প্রথম শিল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নিলামে বিক্রি হচ্ছে দেশের প্রথম শিল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট। প্রায় শত বছরের পুরোনো ভবনটির নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য ছয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে দরপত্র জমা দিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় লোকজন ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা ঐতিহ্যবাহী এ ভবনটি ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষাবিদ, ইতিহাস গবেষক এবং খুলনা অঞ্চলের ইতিহাসের গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ১৯০৪ সালে বাংলাদেশ ভূসীমানায় প্রথম শিল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন চিত্রশিল্পী শশীভূষণ পাল। বাংলাদেশের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পশিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন তিনি। তার হাতে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুল অব আর্ট। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৪১ বছর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শশীভূষণ।

বর্তমান যশোর রোডের পূর্ব পাশে নিজ বাড়িতে মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট নামে এই অঙ্কন বিদ্যাপীঠটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি জেলা বোর্ড ও সরকারি অনুদান পেতে শুরু করে। ১৯২৯ সালে শশীভূষণ পালের বাড়ির অপরপাশে সরকারিভাবে এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়।

সময়ের পরিক্রমায় মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট নামের সেই বিদ্যায়তনটি খুলনার গল্লামারী এলাকায় স্থানান্তরিত করে ১৯৮৩ সালে প্রথমে শশীভূষণ আর্ট কলেজ, পরে খুলনা আর্ট কলেজে রূপান্তরিত হয়। ২০০৯ সালে সেটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চারুকলা ইনস্টিটিউট হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

১৯৮০ সালে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ১৯৯১ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এখানে। বর্তমানে এই দুটি প্রতিষ্ঠানসহ এখানে রয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। আর পরিত্যক্ত ভবনটিতে প্রথমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় তা বন্ধ করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় অপসারণ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ জানাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন ড. নিহার রঞ্জন সিংহ বলেন, আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করছি। খুব শিগগিরই শশীভূষণ পালের স্মৃতি রক্ষায় আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করব। গতকাল বুধবার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ শিল্পীদের সঙ্গে আমাদের সভা হয়েছে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি হ‌ুমায়ূন কবির ববি বলেছেন, ইতিমধ্যে ভবন রক্ষায় আমরা সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ করেছি। গত মঙ্গলবার দেশের বরেণ্য শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা শশীভূষণ পালের স্মৃতি রক্ষায় ভবনটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। আমরাও বিভিন্ন আর্কিটেকচার সহ কলাকুশলীদের সঙ্গে কথা বলছি কোন প্রক্রিয়ায় এটিকে সংরক্ষণ করা যায়।

এ ব্যাপারে জন উদ্যোগের সদস্যসচিব মহেন্দ্র নাথ সেন বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্যকে নষ্ট করা যাবে না। ওই ভবনটাকে সংরক্ষণ করে নতুন ভবন নির্মাণ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হবে: সেনাপ্রধান

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

আবাসন কোম্পানির অনিয়ম অনুসন্ধানে গড়িমসি, দুদকের উপপরিচালক বরখাস্ত

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

বিপুল বকেয়া সত্ত্বেও ব্যবসা হারানোর ভয়ে বাংলাদেশ-নেপালে সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত