Ajker Patrika

বেসরকারি মেডিকেল: ভর্তির অটোমেশনে বিপত্তি

রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
বেসরকারি মেডিকেল: ভর্তির অটোমেশনে বিপত্তি

চলতি বছর থেকে দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সরকারি কলেজের মতো অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এতে মেধাক্রম অনুসারে শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হওয়ায় ভর্তি-ইচ্ছুকেরা পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যাশিত কলেজে ভর্তি হতে না পারায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা হতাশ হচ্ছেন। এমনকি এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। তবে এ ধরনের আপত্তি যুক্তিসংগত নয় বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, আগে সারা দেশে একযোগে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি শেষ হলে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ ছিল। এতে শিক্ষার্থীরা পছন্দমতো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেতেন। চলতি বছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে পরিবর্তন আনা হয়। এতে প্রথমে শিক্ষার্থীদের ৫টি মেডিকেল কলেজে ভর্তির পছন্দ রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে এই নীতি পরিবর্তন করে ছেলেদের জন্য ৬০টি মেডিকেল কলেজ এবং মেয়েদের জন্য ৬৬টি মেডিকেল কলেজের তালিকা করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী একটি নির্দিষ্ট মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বলে খুদে বার্তা দেওয়া হয়। ওই কলেজে ভর্তি হতে চাইলে ১০০ টাকা দিয়ে ভর্তির নিশ্চায়ন করতে বলা হয়।

বিষয়টিতে উদ্বেগ জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী বরাবর লিখিতভাবে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, এবার বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে অটোমেশন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। ১৮ জুন ১০০ টাকা জমা দিয়ে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়নের শেষ দিনে মাত্র তিন হাজার ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী নিশ্চিত করেছেন। এতে বেসরকারি মেডিকেলগুলোতে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আসন শূন্য থাকতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি মেডিকেলে ভর্তি প্রক্রিয়া মেধার ভিত্তিতে অটোমেশনেই সম্পন্ন করা হয়। সেখানে তো কারও আপত্তি থাকে না। তাই বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির ক্ষেত্রেও কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। তিনি বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থী-সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের ৪০ শতাংশ আসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ। তারপরেও সমস্যা দেখা দিলে সেটি সমাধানে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৈরি ভর্তি-ইচ্ছুক তালিকায় দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকায় বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীরা ঢাকার বাইরে গ্রামে-গঞ্জের কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। যেখানে মানিয়ে নেওয়া তাঁদের পক্ষে কষ্টসাধ্য। আবার মফস্বলের অনেকে রাজধানীতে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু এখানকার ব্যয় বহন তাঁদের পক্ষে কঠিন।

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান বলেন, অটোমেশন প্রক্রিয়ায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে সংকট তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো কলেজ শিক্ষার্থী পাচ্ছে না, সবার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। এই বছর ৪৯ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির আবেদন পড়েছে মাত্র ৬ হাজার ৩২০টি। অথচ বেসরকারি কলেজের আসনসংখ্যা ৬ হাজার ৫০০। অর্থাৎ আসনের তুলনায় কমসংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।

সামগ্রিক বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে সরকারি বা বেসরকারি কোনো মেডিকেল কলেজের রেটিং নির্ধারণ করা নেই। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করা হয়। সেই তালিকায় মেধার ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকেন। এই বছর বেসরকারি মেডিকেলে প্রথমবারের মতো অটোমেশন চালু করায় অনেকের কাছে বিষয়টি জটিল মনে হচ্ছে। তবে আগামী বছর থেকে এই প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত