Ajker Patrika

কসবার সীমান্ত হাট নীরব, কষ্টে আছেন ব্যবসায়ীরা

রুবেল আহমেদ, কসবা
কসবার সীমান্ত হাট নীরব, কষ্টে আছেন ব্যবসায়ীরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাট আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ। মহামারি করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর দুই দেশের সিদ্ধান্তে হাট বন্ধ হয়ে যায়। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ অন্য কাজ বেছে নিয়েছেন। তবে কর্মহীন হয়ে হাটের ব্যবসায়ীদের অনেকেই কষ্টে জীবনযাপন করছেন। তাই হাট খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হরে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী হাট বন্ধ ঘোষণা করে দুই দেশের সীমান্ত হাট পরিচালনা কমিটি। হাটে দুই দেশের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম ঠেকাতে এবং করোনা প্রতিরোধের কথা চিন্তা করে বন্ধ করা হয় বলে সে সময় জানিয়েছে কমিটি।

এর আগে দুই দেশের ৫০টি করে ১০০টি দোকান নিয়ে হাটে বসতেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি রোববার ছিল হাট বসার দিন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলতো বেচাকেনা। দুই দেশের ক্রেতা বিক্রেতাদের প্রচুর সমাগম হতো এই হাটে।

পাশাপাশি হাটের বাইরে দেখতে আসা লোকজনের প্রচুর ভিড় হতো। হাটে কাপড়, কসমেটিকস, জুতা, ফল, ইস্পাত সামগ্রী, শুঁটকি, ক্রোকারিজ ও জামদানি কাপড়সহ বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান বসতো। হাটের বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসত ভারতীয় পণ্য কেনার জন্য। আবার ভারতীয় ক্রেতারা আসতেন এ দেশের শুঁটকি, ক্রোকারিজ ও জামদানি কাপড় কিনতে। এ ছাড়া এই হাট দুই দেশে বাসকারী স্বজনদের মিলনমেলায় পরিণত হতো।

তবে হাট বন্ধ থাকায় এখন আর লোকজন সেখানে যায় না। শুধু দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর লোকজনকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।সেখানে কোনো লোকজনকে যেতে দেওয়া হয় না। ব্যবসায়ীদের প্রতি বছর ব্যবসা করার লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়েছে। বন্ধ থাকায় সেই কার্যক্রমও বন্ধ আছে। আবার খুললে সেই সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন। হাটের ব্যবসায়ীদের একটি কমিটি ছিল সেটিও এখন বিলুপ্ত।

হাটে কাপড় ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অলিউল্লাহ সরকার অতুল বলেন, প্রতি সপ্তাহে একদিন ব্যবসা করেছি। তবু ভালোই ছিলাম। যা আয় হতো তা দিয়েই চলতে পারতাম। হাট বন্ধ থাকায় চলতে সমস্যা হচ্ছে। অন্য কাজ করতে হচ্ছে এখন। কবে আবার খুলবে তাতো বলা যায় না।

আরেক ব্যবসায়ী পলাশ বলেন, হাটে ব্যবসা করে ভালোই আয় হতো। তখন তেমন অভাব ছিল না। ভালো বেচাকেনা হতো। হাট বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ে গেছি। অন্য ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করব সেই পুঁজিও নেই। বর্তমানে পেটের তাগিদে ছোট একটি চাকরি করছি। পরিবার নিয়ে একপ্রকার বেঁচে আছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম বলেন, মহামারি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। করোনা শেষে দুই দেশের সিদ্ধান্ত হলে আবার হাট বসবে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জুন মাসে সীমান্তের ২০৩৯ নম্বর পিলারের কাছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কসবা সীমান্ত হাটের উদ্বোধন করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত