Ajker Patrika

পিলারের ওপর সাঁকো সেতুর খবর নেই

শরিফুল আলম রাসেল, তারাকান্দা
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ৩৩
পিলারের ওপর সাঁকো   সেতুর খবর নেই

তারাকান্দা উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের হিরারকান্দা ও গোয়ালকান্দি গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে রাংসা নদী। এ নদীর ওপর একটি সেতু তৈরির জন্য বসানো হয়েছিল পিলার। কিন্তু সেতু আর হয়নি। ওই পিলারের ওপর বসানো হয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো।

নড়বড়ে ওই সাঁকোটি দিয়েই প্রতিদিন পার হচ্ছেন ছয় গ্রামের মানুষ। একটি সেতুর অভাবে পণ্য পরিবহনেও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে ওই স্থানে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে জানা যায়, হিরারকান্দা ও গোয়ালকান্দি গ্রামের মানুষ ছাড়াও দর্জিগাতি, নন্দীপুর, নারায়ণপুর ও বনপলাশিয়া গ্রামের মানুষ সাঁকো দিয়ে পারাপার হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের নদীটির ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি প্রায় দুই যুগের। কিন্তু তা পূরণ হয়নি। সেতু না হওয়ায় নদী পারাপারের জন্য সাঁকোটিই ভরসা। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় সুপারিগাছ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হয় তাদের।

হিরারকান্দা গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, রাংসা নদীতে সেতু না থাকায় দক্ষিণ পাড়ের পাঁচটি গ্রামের লোকজন অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। নদীর উত্তর পাড়ে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থাকায় দক্ষিণ পাড়ের শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা-দীক্ষায় অনেক পিছিয়ে আছে।

কৃষক ফরমান আলী বলেন, ‘সেতু না থাকায় প্রতি মণ ধান হাঁটে নিয়ে যেতে ২০ টাকা বেশি ভাড়া লাগে।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের আগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সাঁকোর বদলে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর সেতু নির্মাণ হয় না। ২০০৩ সালে সেতু নির্মাণের কাজ শুরুও হয়েছিল। সে সময় সেতুর পিলার নির্মাণ হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সেতু নির্মাণ হয়নি। পরে পিলারের ওপর রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়। এরপর সরকারি অর্থায়নে সাঁকোটি সংস্কার করা হয়।

গোয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমান বলেন, ‘সাঁকোটির খুব কাছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সবাই শিশু। সাঁকো থেকে নদীর গভীরতা অনেক। এ অবস্থায় শিশুরা খুব বেশি ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোটি পার হয়।’

গোয়ালকান্দি গ্রামের আবু তাহের বলেন, ‘সেতু না থাকায় এলাকার অসুস্থ রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া-আসায় চরম বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মদন চন্দ্র সিংহ বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় আমি এলাকাবাসীর এ দুর্ভোগের বিষয়টি একাধিকবার জানিয়েছি। তা ছাড়া স্থানীয় সাংসদকেও এখানেও সেতু নির্মাণের জন্য কয়েকবার মৌখিকভাবে বলেছি। আমার আর কী করার আছে?’

জানতে চাইলে তারাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিউল্লাহ খন্দকার বলেন, ‘সেতুটির বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবনা পাস হলে সেতুর কাজ শুরু করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত