Ajker Patrika

রোদে থাকলেই ভিটামিন

মাসুমা চৌধুরী
রোদে থাকলেই ভিটামিন

সুষম খাবারের অন্যতম অনুষঙ্গ ভিটামিন। প্রতিবেলার খাবারে এর উপস্থিতি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। নইলে শরীরে এর ঘাটতিজনিত বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। কয়েক ধরনের ভিটামিনের মধ্য ভিটামিন ডি একটি। এটি চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন।
 
উৎস
ভিটামিন ডি-কে ‘সানশাইন ভিটামিন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পর্যাপ্ত সূর্যের আলো ত্বকের সংস্পর্শে আসার পর শরীর ভিটামিন ডি তৈরি করে। এর জন্য নিয়মিত সূর্যের আলোয় সময় কাটানো দরকার।

প্রতিদিন বা সপ্তাহে সানস্ক্রিন ছাড়া কমপক্ষে দুবার মুখ, বাহু, হাত ও পায়ে সাধারণত ৫ থেকে ২৫ মিনিট সূর্যের আলো লাগানো দরকার। পাশাপাশি চর্বিযুক্ত মাছ, সামুদ্রিক খাবার, কুসুমসহ ডিম, দুধ ও সূর্যের আলোয় বেড়ে ওঠা মাশরুম খাওয়া উচিত। এ ছাড়া খোলা জায়গায় চরে বেড়ায় এমন প্রাণীর মাংসেও ভিটামিন ডি থাকে।

ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারকতটুকু দরকার 
ভিটামিন ডির প্রস্তাবিত দৈনিক পরিমাণ

  • ০ থেকে ১ বছরের শিশুদের ৪০০ আইইউ
  • ১ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের ৬০০ আইইউ
  • ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের ৮০০ আইইউ

ভিটামিন ডির অভাবজনিত সমস্যা

  • ভিটামিন ডির অভাবে হাড় পাতলা, ভঙ্গুর বা ভুল আকারে বেড়ে উঠতে পারে।
  • শিশুদের হাড় নরম হয়ে ধনুকের মতো বেঁকে যায় ও রিকেটস রোগ হতে পারে।
  • বয়স্কদের হাড়ক্ষয় হয় বা অস্টিওম্যালাসিয়া হতে পারে।
  • এর ঘাটতিতে শিশুদের বৃদ্ধি কমে যায়।
  • ভিটামিন ডির ঘাটতিতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
  • এর অভাবে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ হতে পারে।
  • শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে।
  • এর অভাবে ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।
  • ভিটামিন ডির অভাবে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।  
  • গর্ভকালীন ভিটামিন ডির অভাবে শিশুর ওজন কম ও অকালপ্রসব হতে পারে।
  • দাঁতের গঠন সঠিক না-ও হতে পারে ভিটামিন ডির অভাবে। 

ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম
ভিটামিন ডি অন্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণ এবং পেশি ও হাড়ের স্বাভাবিক কাজ করতে সাহায্য করে। এতে রক্তে পর্যাপ্ত সিরাম ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের ঘনত্ব বজায় থাকে। এটি খিঁচুনি প্রতিরোধ করে, হাড়ের বৃদ্ধি ও পুনর্নির্মাণের জন্য কাজ করে। ক্যালসিয়ামের সঙ্গে ভিটামিন ডি বয়স্ক ব্যক্তিদের হাড়ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। 

করোনার চিকিৎসায়
কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে ভিটামিন ডির অভাব দেখা গেছে, যা উচ্চমৃত্যু হারের জন্য দায়ী বলে জানা গেছে। ভিটামিন ডি আসলে নিউমোনিয়া বা শ্বাসপ্রদাহ, প্রদাহজনক ও থ্রম্বোসিসের রোগীর তীব্রতা হ্রাস করে। তাই মহামারির প্রভাব হ্রাস করার জন্য কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় ভিটামিন ডি তুলনামূলকভাবে বেশি ব্যবহার হয়। এ ছাড়া রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও ভিটামিন ডি কার্যকর। 

সতর্কতা
মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত ভিটামিন ডির জন্য তৈরি হওয়া হাইপারক্যালসেমিয়া কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে। 
এতে এমনকি কিডনির ক্ষতিও হতে পারে। কারণ খুব বেশি ভিটামিন ডি থাকার ফলে ক্যালসিয়ামের শোষণ বেড়ে যায়। এর ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ভিটামিন ডি শরীরে ‘ভিটামিন ডি বিষাক্ততা’ বাড়াতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত ভিটামিন ডি ক্যাপসুল গ্রহণ করা যাবে না।
 
লেখক: পুষ্টিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত