Ajker Patrika

পাড়ের বালু দিয়েই নদের পাড় মেরামত, ভাঙন

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
পাড়ের বালু দিয়েই নদের পাড় মেরামত, ভাঙন

ভাঙন রোধে নদের পাড় মেরামত করার জন্য সেই পাড় থেকেই করা হচ্ছে বালু উত্তোলন। অভিযোগ উঠেছে, মেরামত করা স্থানের মাত্র ১০ হাত দূর থেকেই বালু তুলে জিও ব্যাগে ভর্তি করা হয়। এতে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গঙ্গারামখালী গড়াই নদসংলগ্ন এলাকায় ভাঙা স্থান মেরামত করতে গিয়ে নতুন করে সমতলভূমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙনের স্থান থেকে দূরের জায়গার বালু উত্তোলন করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শ্রমিকেরা সরকারি কাজে বাধা না দিতে বলে কাজ চালিয়ে যান। এদিকে জিও ব্যাগভর্তির জন্য বালু তোলার কথা থাকলেও সেই বালু বাইরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা গেছে, গড়াই ও মধুমতির ভাঙন রোধে মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েক বছর ধরে জরুরি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন স্থানে জিও ব্যাগ ফেলছে। তারই অংশ হিসেবে সাত দিন ধরে শ্রীপুর উপজেলার গড়াই নদের পাড় ঘেঁষে কাজ চলছিল। কিন্তু জিও ব্যাগের ভারে সমতল জমি থেকে শুরু করে ঘরবাড়ির উঠোন পর্যন্ত নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত বুধবার সরেজমিনে এ ঘটনার সত্যতা মিলেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রানু বেগম বলেন, ‘গড়াই নদের বাঁকে নদীভাঙনপ্রবণতা বেশি ছিল। সে জন্য সরকারিভাবে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছিল। আমরা এলাকাবাসী অভিযোগ দেই যেন দূরে থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। কিন্তু এখানে যাঁরা কাজ করছিলেন তাঁরা আমাদের হুমকি দেন। তাঁরা বলেন, সরকারি কাজে বাধা না দিতে। নদীপাড়ের ১০ হাত দূর থেকে বালু উত্তোলন করে জিও ব্যাগ ভর্তি করেন তাঁরা। ফলে সমতলভূমি ধসে গেছে। গাছপালা থেকে শুরু করে একমাত্র মাটির সড়কটিও অচল হয়ে গেছে। উপকার করতে এসে আমাদের জমিতে আরও ভাঙন ধরিয়ে দিয়েছে সরকারি এ কাজ।’ তিনি আরও বলেন, ‘বালু তুলছে জিও ব্যাগ ভরার জন্য অথচ তাঁরা এই বালু বাইরেও বিক্রি করেছেন বলে আমরা জানি।’

স্থানীয় বাসিন্দা শান্তি রাম মণ্ডল বলেন, ‘যারা বালু তুলেছেন তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারি কাজের কথা বলে নিয়ম না মেনে নদীর ঘাট এলাকা থেকে বালু তুলছেন। ফলে পাড়ের মাটি নিচ থেকে ফাঁকা হয়ে গেছে। এতে কয়েক একর সমতল জমি ধসে গেছে। ধসে যাওয়ার পর যাঁরা কাজ করছিলেন তাঁরা পালিয়ে গেছেন। বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি এসেছিলেন, কিন্তু কোনো সুরাহা করতে পারেননি।

স্থানীয় দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর সবুর বলেন, ‘পাড় ধসে যাওয়ার পর আমি ওপরের নির্দেশে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি ওখানে নিয়মের বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। পাড় মেরামত করার জন্য সেই পাড়েরই বালুই তোলা হয়েছে। আমি আগে থেকে জানতাম না। ভুক্তভোগী লোকজন বললেন, সরকারি কাজ তাই কাউকে না বলার জন্য তাঁদের হুমকি দিয়েছিল। এ ক্ষতির জন্য ব্যবস্থা নিতে ওপরের মহলকে জানিয়েছি।’

মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন জানান, বিষয়টি তাঁরা অবগত। পরিদর্শন করেছেন। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন। বালু বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি জানেন না। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত