Ajker Patrika

এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই বন্য হাতি হত্যা

কক্সবাজার ও চকরিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ২১
এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই বন্য হাতি হত্যা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে আরও একটি বন্য হাতি হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে হারবাং ইউনিয়নে ছড়াখোলা গ্রামে বনের পাশে পুঁতে রাখা হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

এর আগে গত মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের পূর্ণগ্রাম এলাকায় একটি হাতিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

বন বিভাগের চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহীন বিপ্লব বলেন, গতকাল সকালে স্থানীয় লোকজন ও বনকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারি, একটি হাতিকে হত্যা করা হয়েছে। হাতিটি ৫-৬ দিন আগে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে মারা যায়। এরপর দুর্বৃত্তরা হাতিটি মাটিতে পুঁতে ফেলে।

বন বিভাগের ঈদগাঁহ রেঞ্জ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খান বলেন, খুটাখালীর বনে হাতি হত্যার ঘটনায় পাশের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের টেরিঢেবা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীপাড়ার দু অং মার্মার ছেলে মংহ্লা মার্মা (৪২) ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কাইন্দার বিলের টুম্পাপাড়ার মে মং মার্মার ছেলে অং থোয়াই চিং মার্মার (৪৫) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার পর মংহ্লা মার্মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী বলেন, হাতি দুটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে এক বছরে কক্সবাজারের ৮টি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি হাতিকে গুলি ও বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে এসে হত্যার শিকার হচ্ছে বন্য হাতি।

বন বিভাগ ও পুলিশ জানায়, গত ২৫ সেপ্টেম্বর টেকনাফের শালবন পাহাড়ের ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ি ঝিরিতে একটি বন্য হাতির শাবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। একই এলাকায় ছয় দিন আগে আরও একটি হাতির শাবকের মৃত্যু হয়।

এর আগে ৩১ আগস্ট রামু উপজেলার খুনিয়া পালং এলাকায় বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে আরও একটি হাতি হত্যা করা হয়। গত বছরের নভেম্বর মাসে চকরিয়া ও রামু উপজেলায় দুর্বৃত্তের গুলি ও বৈদ্যুতিক শকে ১২ দিনের মাথায় তিনটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল।

বন বিভাগের তথ্য মতে, গত চার বছরে বৈদ্যুতিক শক, চোরাশিকারিদের গুলি ও নানা কারণে কক্সবাজারের ২১টি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত চার বছরে তিন উপজেলায় রোহিঙ্গা বসতি, সরকারি প্রতিষ্ঠান তৈরি ও নানাভাবে প্রায় ২০ হাজার একর বনভূমি বেদখল হয়ে গেছে। এতে হাতির আবাসস্থল নষ্ট হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ ২০১৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) জরিপে জানা যায়, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় ২৬৮টি এশিয়ান হাতির বসবাস রয়েছে। এই জরিপে হাতি চলাচলের ১২টি করিডর চিহ্নিত করা হয়। এসব করিডর দিয়ে হাতি খাদ্যের সন্ধানে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা ঘুরে বেড়ায়। এসব করিডর দখল ও স্থাপনা নির্মাণ হওয়ায় হাতির দল আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বনাঞ্চল উজাড় ও বনভূমি দখল হয়ে যাওয়ায় বন্য হাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত