Ajker Patrika

বিষাক্ত বর্জ্যে ফসল নষ্ট ক্ষতিপূরনের দাবি

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ১২
বিষাক্ত বর্জ্যে ফসল নষ্ট ক্ষতিপূরনের দাবি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত যমুনা সারকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী জমিতে। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা। এর জন্য তারা ক্ষতিপূরণ দাবি করলেও কারাখানা কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করছে।

তবে যমুনা সার কারখানার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই কাজ চলমান আছে। যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষ হলে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে সুপারিশ পাঠানো হবে।

জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত তরল বর্জ্য দীর্ঘদিন ধরে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে কারখানার চারপাশের জমির ফসল, পুকুরের মাছ, ফলজ ও বনজ গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছে। পরে তাঁরা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেছেন।

কারখানার পাশের চরপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়া ও জরিনা বেগম বলেন, কারখানার বিষাক্ত পানি তাদের আবাদি নিচু জমিতে ছড়িয়ে পড়ায় তাদের জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এসব জমি কারখানা কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ অধিগ্রহণ করে নির্গত পানির স্থায়ী বন্দোবস্ত করার আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রতিনিয়ত ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

তিতাস মোড়ের মতি মিয়া বলেন, কারখানার বর্জ্যে তাদের ফলজ ও বনজ গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক দফা কারখানা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে ক্ষতিপূরণের দাবি জানালেও কোন কাজ হয়নি। পরে তারা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করেও দাবি আদায় হয়নি। পরে ওই ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলো অধিগ্রহণ করে পানির স্থায়ী বন্দোবস্ত করবেন বলে আশ্বাস দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। বছর পেরিয়ে গেলেও সে আশ্বাসের কোনো বাস্তবায়ন হয়নি।

পোগলদিঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রশিদ, ব্যবসায়ী লিটন মিয়া, জয়নাল আবেদীন ও মুক্তিযোদ্ধা সাবের হোসেন বলেন, পাইপযোগে যমুনা সার কারখানার বিষাক্ত পানি ফেলা হচ্ছে পাশের যমুনা নদীতে। এতে মরে যাচ্ছে নদীর মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী। এতে এই এলাকার জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। অনতিবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তারা।

ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মোশরেকুল আলম লিচু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কারখানার বিষাক্ত তরল বর্জ্য চারপাশে ছড়িয়ে পড়ায় মরে গেছে পুকুরের মাছ, জমির ফসলসহ ফলজ ও বনজ গাছপালা। নানা কর্মসূচি পালন করে ক্ষতি পূরণের দাবি জানিয়ে আসলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তা শুনেনি। কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষাক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আশ্বাস দিলেও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণে এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে হতাশা বাড়ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলার পোগলদিঘা ইউপি চেয়ারম্যান সামস্ উদ্দিন জানান, যমুনা সার কারখানা নির্গত বিষাক্ত পানি পাশের আবাদি জমি ও পুকুরের মিশে গেছে। এতে জমির ফসল ও পুকুরের মাছ মরে গেছে।

এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার জিএম (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই করণের কাজ চলমান আছে। যাচাইয়ের কাজ শেষ হলে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে সুপারিশ পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের পতন হলে, এরপরই রাশিয়া—অভিমত রুশ বিশ্লেষকদের

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

লাইভ-২ (২৩ জুন, ২০২৫) ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপল ইসরায়েল, তেহরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি থেকে বিদায় নিচ্ছে সাইফ পাওয়ারটেক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত