Ajker Patrika

পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা

বেল্লাল হোসেন, দশমিনা (পটুয়াখালী)
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১২: ১১
পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা

দশমিনায় বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি গাছ দিয়ে সড়কের পাশে সামাজিক বনায়ন করা হচ্ছে। অল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় বন বিভাগ এই ধরনের গাছ দিয়ে বনায়ন করছে। ফলে বনায়নের নামে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সড়কের দুই পাশে রোপণ করা এই বিদেশি গাছগুলো পরিবেশবান্ধব নয়।

উপজেলা বন বিভাগ থেকে জানা যায়, গত কয়েক দশক ধরে দেশি–বিদেশি প্রজাতির গাছ দিয়ে বনায়ন শুরু হয়। জানা গেছে, এই সব গাছের ছায়ায় ধান গাছে রোগ ও পোকার আক্রমণ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাছের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধানখেত বিনষ্ট হচ্ছে। এর মধ্যে একাশিয়া বা আকাশমণি গাছের পাতা সহজে পচে না। এতে কৃষিজমিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রকৃতি, পরিবেশ ও কৃষি খেতে ব্যাপক ক্ষতি বয়ে আনা গাছ দিয়ে বনায়ন বন্ধের দাবি তুলেছেন পরিবেশবিদ ও গবেষকেরা। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও গ্রামগঞ্জের রাস্তার দুপাশ এই সব গাছের সারিতে ভরে উঠছে।

উপজেলা বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দাসপাড়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর রাড়ী, মজিদ হাওলাদার, জামাল হাওলাদার, খালেক রাড়ী ও শঙ্কর চন্দ্রসহ আরও অনেকে বলেন, রাস্তার দুপাশে এসব গাছ কৃষি জমি নষ্ট করে। মৎস্য চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব গাছ। কৃষকেরা বলেন, একাশিয়া গাছের ছায়ায় ধান থেকে শুরু করে কোনো ধরনের চাষাবাদ সম্ভব হয় না। একইভাবে মৎস্য খামারের পাশে এই গাছ মৎস্য চাষাবাদেরও ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এ গাছের ছায়ায় মুগ, মসুরি ও খেসারি ডালের অঙ্কুরোদ্‌গম হয় না।

দক্ষিণ দাসপাড়া গ্রামের সামাজিক বনায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক বলেন, ‘আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন প্রজাতির গাছের বনায়ন শুরু হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। বিদেশি প্রজাতির এই গাছগুলো স্থানীয় প্রজাতিদের জায়গা দখল করে সেগুলোকে বিপন্ন করে তোলে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভিন্ন পরিবেশ থেকে যে কোনো প্রজাতি এনে বিস্তার ঘটতে দিলে কালক্রমে তা আগ্রাসী হয়ে ওঠে। আমাদের দেশেও এই গাছগুলো আগ্রাসী হয়ে উঠছে এবং পরিবেশের ক্ষতি বয়ে আনছে। এই সব গাছ দিয়ে বনায়ন পুরোপুরি বন্ধ হওয়া উচিত।’

এ ব্যাপারে উপজেলা বন কর্মকর্তা অমিতাভ চন্দ্র বলেন, ‘আগে এক সময় কাঠের চাহিদা মেটাতে এ সব গাছ দিয়ে বনায়ন শুরু হয়। বর্তমানে এ সব গাছ রোপণ এবং সরকারি নার্সারিগুলোতে চারা উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত