Ajker Patrika

গ্রিনহাউস গ্যাসের হটস্পট মাতুয়াইলের ময়লার ভাগাড়

গ্রিনহাউস গ্যাসের হটস্পট মাতুয়াইলের ময়লার ভাগাড়

ঢাকা: বাংলাদেশে মিথেন গ্যাস নিঃসরণের অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠেছে রাজধানীর মাতুয়াইলের ময়লার ভাগাড়। কানাডাভিত্তিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান জিএইচজিস্যাট এমনটি জানিয়েছে।

জিএইচজিস্যাট-এর বরাত দিয়ে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৪ হাজার কেজি মিথেন গ্যাস নির্গত হচ্ছে। এই পরিমাণ মিথেন গ্যাস প্রতি ঘণ্টায় ১ লাখ ৯০ হাজার সাধারণ গাড়ি থেকে নিঃসরিত গ্রিনহাউস গ্যাসের সমান।

বাংলাদেশ মিথেন গ্যাসের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে, সম্প্রতি ব্লুমবার্গে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী গ্যাস মিথেন। এটি গত দুই দশকে কার্বন ডাই অক্সাইডের (যাকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়) চেয়েও ৮৪ গুণ বেশি ক্ষতি করেছে বায়ুমণ্ডলের। বর্ণ–গন্ধহীন এই গ্যাস পৃথিবীতে আসা সূর্যের তাপ ধরে রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে, যা বৈশ্বিক উষ্ণতা আরও দ্রুত বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এ নিয়ে জিএইচজি স্যাটের প্রেসিডেন্ট স্টিফেন জার্মেইন বলেন, আমরা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে মিথেনের নিঃসরণের জন্য নির্দিষ্ট উৎসকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। গত ১৭ এপ্রিল তাদের হুগো স্যাটেলাইটে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল থেকে বিপুল পরিমাণ মিথেন নিঃসরণ হচ্ছে।

জার্মেইন আরও বলেন, এটি একটি উৎস। কিন্তু এতো মিথেন নিঃসরণের জন্য এটি পর্যাপ্ত নয়। পরিস্থিতি এখনও রহস্যজন এবং আমরা এটি পর্যবেক্ষণ করতে থাকবো।

এর আগে বাংলাদেশের আকাশে মিথেন গ্যাস নিঃসরণের ১২তম সর্বাধিক হার শনাক্ত করে প্যারিসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কেরোস এসএএস।

বাংলাদেশে পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলছে, তারা পরিস্থিতির বিষয়ে অবগত। এ নিয়ে এক ই–মেইলে ব্লুমবার্গকে বাংলাদেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল থেকে মিথেন নির্গমন মূল্যায়ন ও তা প্রশমন ব্যবস্থা ঠিক করতে পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যেই তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০১৩ সালের স্বল্পকালীন জলবায়ু দূষণ হ্রাস পরিকল্পনায় গৃহীত পদক্ষেপে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে মিথেন নিঃসরণ ১৭ থেকে ২৪ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ২৫ থেকে ৩৬ শতাংশ কমতে পারে। এছাড়া, গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক থেকে লিকের মাধ্যমে মিথেনের নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশ ডেনমার্কের সহায়তাও নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল্লাহ সিদ্দিক ভুঁইয়া ব্লুমবার্গকে বলেন, ১৮১ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার টন বর্জ্য ফেলা হয়। তরল বর্জ্য ও গ্রিনহাউস গ্যাস ব্যবস্থাপনায় সিটি করপোরেশন জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থ সহায়তা পেয়েছে। তবে সেখানে ঠিক কী পরিমাণ মিথেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে, তার সঠিক হিসাব নেই।

বিজ্ঞানীরা সবে বিশ্বব্যাপী মিথেনের সবচেয়ে বড় উৎসগুলো চিহ্নিত করতে শুরু করেছেন। গ্লোবাল মিথেন ইনিশিয়েটিভের তথ্যমতে, গবাদিপশু, তেল-গ্যাস শিল্প থেকে লিক হওয়া, ময়লার ভাগাড় ও কয়লার খনি হচ্ছে মিথেন নিঃসরণের কয়েকটি বৃহৎ উৎস।

বর্তমানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এই ফোরামের ৪৮টি সদস্য দেশে বাস করেন ১২০ কোটি মানুষ। এরাই সবচেয়ে বেশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত