Ajker Patrika

ইউরোপে পাঠাবে বলে টাকা নিয়ে লাপাত্তা দালাল, ১৬ যুবকের আত্মহত্যার হুমকি

লবীব আহমদ, সিলেট
ইউরোপে পাঠাবে বলে টাকা নিয়ে লাপাত্তা দালাল, ১৬ যুবকের আত্মহত্যার হুমকি

দেশে তেমন কিছু করতে না পারায় পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ জন্য শেষ সম্বল বাড়িভিটা বিক্রি ও ধারদেনা করে ৭ লাখ টাকা দেন এক ট্রাভেলস কোম্পানি মালিককে। পরে ভিসা দেখিয়ে ফ্লাইটের দুটি তারিখও দেন ওই ট্রাভেল মালিক। সবশেষ ফ্লাইটের একটি তারিখ দিয়ে নির্ধারিত সময়ের তিন আগে লাপাত্তা হয়ে যান সেই ব্যক্তি।

প্রতারিত যুবক সিলেটের গোলাপগঞ্জের মোল্লারচকের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল মালিকের ছেলে টিপু সুলতান। একইভাবে প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন ওই এলাকার ১৬ জন যুবক। তাঁরা একযোগে ফেসবুক লাইভে এসে আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আছিরগঞ্জ বাজারে এক প্রতিবাদ সভা করে তাঁরা এমন হুমকি দেন। 

অভিযুক্ত ট্রাভেলস কোম্পানির মালিক জহির উদ্দিন গোলাপগঞ্জের আছিরগঞ্জ বাজারের আমকোনা গ্রামের মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে। তিনি ওই বাজারের আজিজ ট্রাভেলস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। জহির উদ্দিন বিভিন্ন দেশে লোক পাঠান। এর আগে তাঁর মাধ্যমে ওই এলাকার বেশ কয়েকজন সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গেছেন।

এখন ধারদেনার টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তা, বাড়িভিটাও নেই টিপু সুলতানের। তিনি বলেন, ‘বাড়িভিটা বেচে ও ধারদেনা করে ৭ লাখ টাকা দেই আজিজ ট্রাভেলসের মালিক জহির উদ্দিনের কাছে। এলাকার হওয়ায় তাকে বিশ্বাস করতে দ্বিধা করিনি। যার কারণে আমি, আমার চাচাতো ভাই আলফাছ উদ্দিন ও ভাতিজা আব্দুল্লাহ আল নাহিদ একসাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন ধাপে টাকা দেই। প্রথমে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার সময় আমরা তিনজন মিলে দেড় লাখ টাকা দেই। পরে সরাসরি তার হাতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করে তিনজনে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। সবশেষ পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে জনপ্রতি ৩ লাখ করে ৯ লাখ টাকা দেই গত জানুয়ারির ২৬ তারিখ।’

গত ফেব্রুয়ারির ১২ ও ১৩ তারিখের ফ্লাইট মিস হওয়ার কারণে ২৩ ফেব্রুয়ারি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে আর কোনো খোঁজখবর নেই জহির উদ্দিনের। প্রতারিত হয়েছেন ১৬ জন যুবক। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জহির উদ্দিন রোমানিয়া ও তিউনিসিয়ায় পাঠাবেন বলে গোলাপগঞ্জের ১৬ জনের কাছ থেকে তাঁদের পাসপোর্ট ও সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরে টাকা ও পাসপোর্ট নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।

প্রতারিত যুবকেরা হলেন—১০ নং উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়নের খাগাইলের আব্দুস সোবহান, আলী হোসেন, আমকোনার সাইদ আহমদ, ফখর মিয়া, আব্দুল ওদুদ, মোল্লারচকের আলফাছ উদ্দিন, টিপু সুলতান, আব্দুল্লাহ আল নাহিদ, বাগলা গ্রামের নাসির উদ্দীন, হীরা মিয়া, তিলপাড়া ইউনিয়নের দেবারাই গ্রামের দুলাল মিয়া, বুধবারী বাজারের চন্দর পুরের আলী, কালপাড়া গ্রামের কামরান হোসেন কবির, আহমদপুরের আলী হোসেনসহ আরও দু’জন।

টাকা চাওয়ায় সম্প্রতি জহিরের চাচা নুর উদ্দিন তাঁদের ও আত্মীয়–স্বজনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে হয়রানি করছেন বলেও প্রতিবাদ সভায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছোট ভাই সোবহানকে রোমানিয়া পাঠানোর জন্য জহিরের নুর উদ্দিনের মাধ্যমে তাঁকে ৬ লাখ টাকা দেন। রোমানিয়া যাওয়ার নির্দিষ্ট তারিখও দেন জহির। এখন কিস্তি সামলানোর পাশাপাশি অন্যান্য ঋণও তাঁকে শোধ করতে হচ্ছে। 

আরেক ভুক্তভোগী আলী হোসেন বলেন, ‘জহির আমাকে বলে, ৬ লাখ টাকা দিলেই রোমানিয়া পৌঁছিয়ে দিবে। একথা শুনে আমি ব্যাংক থেকে দেড় লাখ টাকা লোন তুলে সব মিলিয়ে ২ লাখ টাকা দেই জহিরকে। সে আমাকে ভিসার কাগজ দেখায় এবং বাকি ৪ লাখ টাকা রেডি রাখার কথা বলে। সে ঢাকা থেকে এলেই সেই ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। এর আগেই সে লাপাত্তা। এখন আমাকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে কিস্তি দিতে হচ্ছে। আট সদস্যের পরিবার চালাব, নাকি কিস্তি চালাব!’ 

আব্দুস সালামের টাকা লেনদেনের বিষয় অস্বীকার করে নুর উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভাতিজায় দালালি করলেও আমি এসবের সাথে জড়িত না। কোনো কারণ ছাড়াই তারা আমাকে দুই দিন ধরে নিছে। আমার কোনো নিরাপত্তা নাই। যার কারণে কোর্টে মামলা করতে বাধ্য হই। তারাও আমার নামে মামলা করছে। কোর্ট আমাকে কোনো প্রকার লেনদেনের সাথে জড়িত না পেয়ে জামিন দেন।’

জহির উদ্দিনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করলে প্রথম কেটে দেন। পরে মেসেজে পাঠিয়ে ব্যস্ততার কথা বলেন। ঘটনা তাঁর এলাকার বলে স্বীকার করলেও এসব ব্যাপারে জানেন না বলে দাবি করেন। এ নিয়ে আর কোনো কথা বলতে তিনি রাজি হননি।

এ ঘটনার বিষয়ে গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘ঘটনা সত্য। জহিরের পরিবারের সাথে এলাকার, পঞ্চায়েতের মুরব্বিরা বসেও এটার কোনো সমাধান করতে পারেননি। প্রায় কোটি টাকা মেরে জহির এখন দেশের বাইরে। আমরাও সালিসে বসছিলাম এটার সমাধান করার জন্য। কিন্তু জহিরের পরিবারের কেউই আসেনি। যারা প্রতারিত হয়েছে, বর্তমানে তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।’

নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলে সাতজনকে আসামি করে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন জহির উদ্দিনের চাচা নুর উদ্দিন। আবার ভুক্তভোগীদের মধ্যে উপজেলার জাঙ্গালহাটার পালপাড়া গ্রামের কামরান হোসেন কবির (৩৪) বাদী হয়ে জহির উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নামে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। তবে এলাকার সালিসের পরামর্শে পরে মামলা তুলে নিয়েছেন।

কিন্তু টাকার আদায়ের বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় উপজেলার বাদেপাশা ইউনিয়নের মোল্লারচক গ্রামের টিপু সুলতান বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, মামলার তদন্ত চলছে। সব ইমিগ্রেশনে খবর দেওয়া হয়েছে। জহিরের ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যার ঘটনায় ২ শুটার শনাক্ত, গ্রেপ্তার যেকোনো সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৬
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ফটকে তারিক সাইফ মামুনকে গুলিতে হত্যা করা হয়। ইনসেটে তারিক সাইফ মামুন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ফটকে তারিক সাইফ মামুনকে গুলিতে হত্যা করা হয়। ইনসেটে তারিক সাইফ মামুন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাইফ মামুনকে হত্যার ঘটনায় দুই পেশাদার শুটারসহ চারজনকে শনাক্ত করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শুটার দুজনের মধ্যে একজন ধানমন্ডি, আরেকজন তেজগাঁও এলাকার একাধিক মামলার আসামি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, যেকোনো সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে।

গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ফটকে মামুনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, হামলার সময় দুজন শুটার পিস্তল চালিয়ে হামলা চালায়, তবে আশপাশে অন্তত দুটি ব্যাকআপ টিম ছিল, ওই টিমের সদস্যদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। মামুনকে হত্যার পর হামলাকারীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে তারা দেশের ভেতরেই অবস্থান করছে এবং তাদের ধরার জন্য পুলিশ একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে। এ অবস্থায় সীমান্তে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. মোস্তাক সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা দুজনকে শনাক্ত করেছি। তারা দেশেই আছে। তাদের গ্রেপ্তারের খুব কাছাকাছি রয়েছি।’

ডিএমপির অপর এক কর্মকর্তা বলেন, শুটাররা মুখে মাস্ক ও মাথায় টুপি পরিধান করলেও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। মামুন হত্যার আগে অন্তত একজন তাঁকে অনুসরণ করছিল। হামলার আগে তাদের পরিকল্পনা সূক্ষ্মভাবে ছিল এবং তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে। তাদের মধ্যে একজনের নাম রুবেল, অপরজন ইব্রাহীম। এ ছাড়া আরও দুটি দল আলাদাভাবে হত্যাকাণ্ডে ব্যাকআপ টিম হিসেবে কাজ করেছে। এতে সোহেল ও কামাল নামে দুই সন্ত্রাসীর নাম এসেছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একাধিক পুলিশের টিম কাজ করছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।’

মামুনের একসময় ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বন্ধু ইমনের সঙ্গে পারিবারিক ও চাঁদাবাজি-সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব তীব্র ছিল। এ কারণে ইমনের অনুসারীরা একাধিকবার হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ২০১৭ সালে তেজগাঁওয়ে মামুনের ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছিল, তখনো তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীল নিহত হন।

মামুন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং শুটারদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মল্লিক এহসান আহসান সামী জানান, গুলিতে নিহত ব্যক্তিটি শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন। তিনি কোনো ব্যবসায়ী নন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত