Ajker Patrika

দিনে শ্রমজীবী রাতে মোটরসাইকেল চুরি করতেন তাঁরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দিনে শ্রমজীবী রাতে মোটরসাইকেল চুরি করতেন তাঁরা

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রং মিস্ত্রি, গাড়ি চালকসহ বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশে ঘুরে টার্গেটকৃত মোটরসাইকেল ও গাড়ি চুরি করত একটি চক্রে। এই চক্রে দালালসহ বিভিন্ন পেশার অন্তত দুই ডজন চোর জড়িত। যারা ৪-৫ জন মিলে একেকটি দলে ভাগ হয়ে চুরি করেন।
মোটরসাইকেল ও গাড়ি চোরচক্রের অন্যতম মূল হোতা সৈয়দ মাহামুদ হাসান (৩৭) এবং তাঁর প্রধান দুই সহযোগী মিরাজ হোসেন (৩২) ও মো. আল আমিনকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৩। গতকাল শুক্রবার পৃথক অভিযানে রাজধানীর মিরপুর ও যশোর জেলার কোতোয়ালি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে  চোরাই মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। 

আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলের টিকাটুলিতে র‍্যাব-৩–এর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান র‍্যাব-৩–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই ও ছিনতাইকৃত মোটরসাইকেল ও গাড়িগুলো একটি বৃহৎ সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে রং, ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর পরিবর্তন এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, গত ২৯ এপ্রিল রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুকের বাসার গ্যারেজে রাখা ২ টি ‘এ্যাপাচি-ফোর ভি’ মোটরসাইকেল চুরি হয়। পরদিন ভোরবেলা মোটরসাইকেল দুটির মালিক তাঁদের মোটরসাইকেলগুলো খুঁজে না পেয়ে সবুজবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি র‍্যাবের নজরে আসলে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি বৃহৎ সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল চোরচক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন,  ‘চক্রটি কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করে। প্রথমত মাহামুদের নেতৃত্বে একদল মাঠপর্যায়ে মোটরসাইকেল বা গাড়ি চুরির উদ্দেশ্যে টার্গেট করে। ওই টার্গেটকে সামনে রেখে রেকির মাধ্যমে মোটরসাইকেল রাখার স্থান বা বাসা চিহ্নিত করে। পরবর্তীতে সময়-সুযোগ বুঝে তাঁরা মোটরসাইকেলের তালা ভাঙা ও কাটার মতো কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে রাতের আঁধারে টার্গেটকৃত বাসায় ঢুকে মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে কৌশলে রাজধানী ছেড়ে অন্য জেলায় চলে যান তাঁরা। সেখানে চোরচক্রের সদস্যদের কাছে মোটরসাইকেল হাতবদল করার পর তাঁরা তাঁদের নিজেদের ওয়ার্কশপে নিয়ে মোটরসাইকেলের রং, ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর, নম্বর প্লেট ইত্যাদি পরিবর্তন করে ফেলেন। মোটরসাইকেলের যন্ত্রপাতি পরিবর্তনের কার্যক্রম চলমান থাকার পাশাপাশি এ চক্রের আরেকটি দল বিআরটিএ তে দালালদের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তনের কার্যক্রম চালান।’

তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে বিআরটিএর সুজন নামে একজন দালালের নাম উঠে আসে তিনিও চোরচক্রের একজন অন্যতম সদস্য। তাঁর মাধ্যমেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পরিবর্তন করা হত, ভুয়া ট্যাক্স টোকেন, রোড পারমিট, ফিটনেস সনদ, ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করা হয়ে থাকে। 

আসামি আল-আমিন রং-মিস্ত্রীর কাজের আড়ালে তাঁদের চোরাইকৃত মোটরসাইকেলগুলো বিক্রয়ের জন্য গ্রাহক সংগ্রহ করে থাকেন। এ ছাড়া মিরাজ তাঁর পেশা গাড়ি চালানোর আড়ালে এসব চোরাইকৃত মোটরসাইকেলগুলো বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে একস্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরের কাজ করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হবে: সেনাপ্রধান

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

পাহাড়ের মাটিতে এখন মরুভূমির ফলের স্বাদ

আবাসন কোম্পানির অনিয়ম অনুসন্ধানে গড়িমসি, দুদকের উপপরিচালক বরখাস্ত

বিপুল বকেয়া সত্ত্বেও ব্যবসা হারানোর ভয়ে বাংলাদেশ-নেপালে সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত