Ajker Patrika

স্ত্রীকে ধাক্কার পর স্বামীকে লাথি দিয়ে ফেলে বাস চাপায় হত্যা

স্ত্রীকে ধাক্কার পর স্বামীকে লাথি দিয়ে ফেলে বাস চাপায় হত্যা

গাজীপুরের শ্রীপুরে পথচারী এক পোশাক শ্রমিককে গাড়ি থেকে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেন তাকওয়া পরিবহনের সহকারী। এরপর তাঁকে পিষে দিয়ে যায় বাসটি। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্ত্রীকে ধাক্কা দেওয়ার প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। 

নিহত শহিদুল্লাহ (৫০) উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন। গুরুতর আহত তাঁর স্ত্রীর নাম সাহেরা খাতুন (৪৬)। 

তাকওয়া পরিবহনের বাসটি আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। 

শুক্রবার (২৩ জুন) রাত ৮টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের রঙিলা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় বাসিন্দা জব্বার মিয়া বলেন, সকালে তাঁরা স্বামী–স্ত্রী আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাতে বাসায় ফেরার পথে বাড়ির পাশে রঙিলা বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মহাসড়ক পার হওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। শহিদুল্লাহ রাস্তা পার হয়ে অন্য পাশের দাঁড়িয়ে স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। স্ত্রী সাহেরা খাতুন রাস্তা পার হয়ে পাশ দিয়ে হেঁটে স্বামীর দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাকওয়া পরিবহনের দু’টি বাস পাল্লা দিয়ে বেপরোয়া গতিতে যাওয়ার সময় একটি বাস সাহেরাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। শহিদুল্লাহ বাসটির গেটে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় চালকের সহকারী তাঁকে লাথি দিয়ে ফেলে দিলে বাসটি তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যেতে থাকে। স্থানীরা হইচই করে বাসটির গতিরোধ করে। তবে বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘স্ত্রীকে ধাক্কা দেওয়ার পরপরই শহিদুল্লাহ বাসটিতে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় চালকের সহকারী তাঁকে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দিয়ে তাঁর ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে নেন। এতে ঘটনাস্থলেই শহিদুল্লাহর মৃত্যু হয়। ফিলিং স্টেশনের সামনে ঘটনা ঘটায় এখানকার অনেকেই দৃশ্যটি দেখতে পেয়েছে।’ 

স্ত্রীকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতাল আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে মমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছেআলহেরা মেডিকেল সেন্টারের কর্তব্যরত এক চিকিৎসক জানান, শহিদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আর গুরুতর আহত সাহেরা খাতুনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কঙ্কণ কুমার বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত শ্রমিককে লাথি দিয়ে ফেলে গাড়ির নিচে চাপা দিয়ে মেরেছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি জব্দ করা হয়েছে। ঘাতক চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করতে কাজ করছে পুলিশ। মরদেহটি হাসপাতালে রয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত