Ajker Patrika

পোশাক কিনে দেওয়ার কথা বলে মেয়েকে হত্যার অভিযোগ, বাবা আটক

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ০৪
পোশাক কিনে দেওয়ার কথা বলে মেয়েকে হত্যার অভিযোগ, বাবা আটক

কিশোরগঞ্জে বৃষ্টি আক্তার নামে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের খিলপাড়া বন্দের বাইত এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতেই শিশুটির বাবা আরজু মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। আরজু মিয়া রশিদাবাদ ইউনিয়নের শিমুলিয়া এলাকার বাসিন্দা। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আরজু মিয়া ও ফাতেমা আক্তারের ২০১০ সালে বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর কলহের কারণে দেড় বছর আগে তাঁরা আলাদা বসবাস করতেন। চার মাস আগে আরজু ও ফাতেমার ডিভোর্স হয়ে যায়। ডিভোর্সের পর বড় ছেলে ফাহিম বাবার সঙ্গে ও দুই মেয়ে বৃষ্টি আক্তার ও জান্নাতুল মায়ের সঙ্গে থাকত। 

সংসার চালানোর জন্য ফাতেমা জেলা শহরের নগুয়া এলাকার একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। গতকাল দুপুরে আরজু মিয়া ফাতেমা আক্তারের বাড়িতে যান। পরে বৃষ্টি ও জান্নাতুলকে শীতের কাপড় কিনে দেওয়ার কথা বলে তাদের নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাতে আরজুর স্বজনেরা ফাতেমাকে জানায় তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলছে। পরে সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের খিলপাড়া বন্দেরবাইত এলাকা থেকে পুলিশ গিয়ে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করে। 

বৃষ্টির মা ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার সকালে কাজে যাই। আমি বাড়িতে না থাকা অবস্থায় দুপুরে আরজু আমাদের বাড়িতে এসে বৃষ্টি ও জান্নাতুলকে নিয়ে যায় শীতের কাপড় কিনে দেওয়ার কথা বলে। বিকেলে বাড়িতে কল দিলে বিষয়টা জানতে পারি। আমি তখন আমার ফুফুকে বলি, আপনি কেন মেয়েদের তার সঙ্গে যেতে দিলেন। সে কেমন তা তো আপনারা জানেন। ফুফু আমাকে বলেন, শীতের কাপড় কিনে দেবে বলল, তাই যেতে দিয়েছি। শত হলেও তো আরজু তাদের বাবা।’ 

ফাতেমা আক্তার আরও বলেন, ‘রাত ৮টায় বৃষ্টি তার বাবার মুঠোফোন থেকে কল দিয়ে বলে, আব্বা বলতেছে রাতে আব্বার সঙ্গে থাকতাম। পরে আমি বৃষ্টিকে না করি ওইখানে থাকতে। এই কথা শোনামাত্রই আরজু আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আরজুর ভাতিজা আমাকে ফোন দিয়ে বলে, বৃষ্টিকে তো মাইরা ফেলছে। এরপর থানা থেকে আমাকে ফোন দেওয়া হয়। পুলিশ আমাকে লাশ শনাক্ত করার জন্য ওইখানে যেতে বলে। আমি গিয়ে দেখি আমার মেয়ের লাশ পড়ে আছে। আমার মেয়েকে আরজুই হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’ 

ফাতেমা আক্তার যে বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন, সেই বাসার মালিক আরজানা পিংকি বলেন, ‘আমরা গিয়ে দেখি লাশ পড়ে আছে মাটিতে এবং মরদেহের পাশেই হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আরজু বসা। আর ৩ বছর বয়সী জান্নাতুল শীতে জবুথবু হয়ে বসে আছে তাদের পাশে। বৃষ্টি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ত। ১৫ দিন আগে বাড়িতে আসে। শুক্রবার তাকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসার কথা ছিল। আমার গৃহপরিচারিকাকে আরজু অনেক অত্যাচার করত এবং কয়েকবার মেরে ফেলার চেষ্টাও করেছে। সন্দেহ করছি বৃষ্টিকে আরজুই হত্যা করে নাটক সাজিয়েছে।’ 

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, শিশুটির মরদেহের গলায় দাগ পাওয়া গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি রহস্যজনক। প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটনে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত