Ajker Patrika

রাজধানীতে এটিএম বুথ মেরামতের নামে কোটি টাকা লুট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীতে এটিএম বুথ মেরামতের নামে কোটি টাকা লুট

একটি বেসরকারি ব্যাংকের বিভিন্ন এলাকার ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে অভিনব কৌশলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সাবেক দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁও পিবিআই মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জাহাঙ্গীর আলম।

পিবিআইর দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের আড়ালে একটি চক্রের হয়ে কাজ করছিল। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-তাহমিদ উদ্দিন পাঠান (২৭) ও আব্দুর রহমান বিশ্বাস (৩২)। গ্রেপ্তারকৃতরা এরই মধ্যে আদালতে নিজেদের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। 

এসপি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা বেসরকারি ব্যাংক ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নিজেদের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন চক্রের সদস্যরা। এর আগে চক্রের আরও নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। 

জবানবন্দিতে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, তাঁরা গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স হিসেবে চাকরি করত। তাঁরা একটি চক্রের সদস্য। এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের সময় তাঁরা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর মিথ্যা বা ফলস ট্রানজেকশন করত। এভাবে ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই টাকা চক্রের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে। 

জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তাঁরা গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন। গার্ড শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়ে যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান (২৭) ও আব্দুর রহমান বিশ্বাস (৩২) দ্বয়ের বিরুদ্ধে কর্মচারী কর্তৃক টাকা আত্মসাতের সত্যতা পায়। গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আব্দুল আলম বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

মামলাটি কাফরুল থানা-পুলিশ প্রাথমিক পর্যায়ে এক মাস তদন্ত করে। পরে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত পর্যায়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর হয়। গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদে ওই নয় আসামি অভিযোগ স্বীকার করে জানায়, তাঁরা এটিএম বুথসমূহে টাকা লোড দিয়ে নিজে ও আত্মীয়দের নামে ইস্যুকৃত এটিএম কার্ড দিয়ে ফল্স ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাঁটোয়ারা করে নিত। এই মামলায় তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমান বিশ্বাস পলাতক ছিল। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পিবিআই। 

বর্তমানে এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান এসপি মো. জাহাঙ্গীর আলম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত