Ajker Patrika

সৌদিতে নিয়ে নির্যাতন, মুক্তিপণের পর ফেরত

আল-আমিন রাজু, ঢাকা
সৌদিতে নিয়ে নির্যাতন, মুক্তিপণের পর ফেরত

বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষিত বেকার যুবকদের আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির আশ্বাসে সৌদি আরবে নেওয়া হয়। পরে একটি কক্ষে আটকে রেখে ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে যুবকদের শূন্য হাতে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের নেতৃত্বে একটি চক্র এ ধরনের কাজ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চক্রটির সহযোগী হিসেবে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর মধুমতি ওভারসিজ নামের একটি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে এই এজেন্সির বিরুদ্ধে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে (বিএমইটি) অভিযোগ দিয়েছেন তিন ভুক্তভোগী। অভিযোগের একটি অনুলিপি আজকের পত্রিকার সংগ্রহে আছে।

অভিযোগ ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে সৌদি আরবে চক্রটির নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরেছেন অন্তত পাঁচ যুবক। তাঁদের একজন হলেন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার কাশিপুর গ্রামের ইমরান হোসেন। তিনি ২০১৯ সালে স্থানীয় একটি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পূর্বপরিচিত প্রবাসী আবদুল মজিদ সৌদি আরবে ইমরানকে চাকরির প্রস্তাব দেন।

রাজধানীর ফকিরাপুলের মধুমতি ওভারসিজ থেকে ইমরানের সৌদি যাওয়ার সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এ জন্য তাঁর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা। আর সৌদি থেকে ভিসা পাঠানোর কাজ করেন হুমায়ুন কবির ওরফে তারা খান।

গত রোববার জানতে চাইলে ইমরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের আল ফালাহ এলাকায় নেওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। ১ অক্টোবর ভোর পাঁচটার দিকে একটি দোকানে নিয়ে টানা ১৭ ঘণ্টা কাজ করানো হয়। এ সময় তাঁকে কোনো ধরনের খাবার দেওয়া হয়নি। বিষয়টি পরিবারকে জানানোয় তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর একটি গাড়িতে করে দাম্মাম শহরে ঘোরানো হয়। এ সময় তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। দুই দিন পর তারা খান ও তাঁর সহযোগীরা পরিবারের কাছ থেকে কৌশলে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন। ছয় দিন পর তাঁকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 

ইমরানের বড় ভাই রাজু বলেন, ‘আমার ভাই দেশে ফিরে এসে পাগলের মতো আচরণ করত। সৌদি আরবে তার ওপর নির্যাতনের কথা বলে হাউমাউ করে কাঁদত। ইমরান এখনো আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তার বাঁ পায়ে এখনো আঘাতের জখম আছে। সে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছে না।’

ইমরানের মতো চাঁদপুরের সজীব, গোপালগঞ্জের নাঈম গাজী ও নয়ন গাজীও সৌদি আরবে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন। পরে মুক্তিপণ দিয়ে দেশে ফিরে আসেন। তারা খান ও তাঁর সহযোগীদের নির্যাতনের ক্ষত তাঁদেরও শরীরজুড়ে।

এ ব্যাপারে চাঁদপুরের সজীব বলেন, ‘সৌদি নিয়ে যাওয়ার এক দিন পরই ভাষা না জানার অজুহাতে আমাকে মারধর শুরু করে। আমার দুই চোখেও আঘাত করা হয়। মাত্র ছয় দিন সৌদি আরবে আটকে রেখে যে মারধর করা হয়েছে, সে কথা আমার জীবনেও ভুলতে পারব না।’ 

কে এই তারা খান
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চক্রের হোতার নাম হুমায়ুন কবির খান ওরফে তারা খান। বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজরা এলাকায়। তিনি ২৪ বছর ধরে সৌদি আরবে আছেন। ‘তারা খান’ নামে সৌদির দাম্মাম শহরে ‘মানব পাচারের’ ব্যবসা করেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশিদের নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এ সময় মুক্তিপণ না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সারা জীবন সৌদি কারাগারে পচে মরার ভয় দেখানো হয়। মুক্তিপণ আদায় করে সৌদি আরব থেকে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশগামী বিমানে তুলে দেওয়া হয়।

সৌদিপ্রবাসী তারা খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এই চক্রকে সহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মধুমতি ওভারসিজের মালিক ফজলে আকবর চৌধুরী। রোববার মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা খানের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। যাঁরা বিদেশে গেছেন, তাঁদের পরিচিতদের মাধ্যমে ভিসা পেয়েছেন। আমার প্রতিষ্ঠান থেকে মেডিকেলসহ প্রসেসিং করিয়ে নিয়েছেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠান থেকে গত মাসে পাঁচ থেকে ছয়জনের ভিসা প্রসেসিং করিয়ে নিয়েছেন তারা খান। এর বাইরে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।’

একই দিন জানতে চাইলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিচালক (বহির্গমন) কাইজার মোহাম্মদ ফারাবি বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ এখনো আমার কাছে আসেনি। এলে আমরা তদন্ত করব। প্রয়োজনে রিক্রুটিং এজেন্সিকে আমরা ডাকব। তদন্তে প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে নির্যাতিত শ্রমিকের পাওনা আদায়ের জন্য চিঠি দেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত