Ajker Patrika

ডিজিটাল হাট থেকে ৭১ হাজার টাকায় গরু কিনলেন পলক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ডিজিটাল হাট থেকে ৭১ হাজার টাকায় গরু কিনলেন পলক

ডিজিটাল হাট থেকে ৭১ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। রোববার বিকেলে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল কোরবানি হাটের উদ্বোধনের সময় এই গরুটি কেনেন মন্ত্রী। ই-ক্যাবের মানবসেবা প্রকল্পের মাধ্যমে এটি সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি জানান, এবার ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি পশু মজুত রয়েছে। ফলে কোরবানির জন্য কোনোরকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই। 

রেজাউল করিম বলেন, ‘কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে। রোগগ্রস্ত পশু হাটে বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ হয়রানির শিকার হবেন না, ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সদস্য নিয়োগ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। 

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ ও অন্যান্য ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে যে উন্নতি করেছে, সেটা সম্ভব হয়েছে সরকারের ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন করার কারণে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়েছে। সম্প্রতি ডিবিআইডিসহ আরও চারটি ডিজিটাল প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করেছি। এসব বাস্তবায়ন হওয়ার পর ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা ও আস্থা আরও উন্নত হবে। এই খাতে উদ্যোক্তা তৈরি করতে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, পশু ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসা খাতের একটি বড় লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ ডিজিটাল হাটকে যদি সারা বছর করা যায়, তাহলে প্রান্তিক চাষি ও খামারিরা সারা বছর অনলাইনে পশু বিক্রির সুযোগ পাবে। 

এবার ডিজিটাল হাটে দুটো নতুন সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গরুর ওজন মাপার ডিজিটাল ক্যালকুলেটর এবং পূর্বাচলে গরু রাখার জন্য একটি জায়গাও রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্ল্যাটফর্মে যারা পশু বিক্রি করবেন তাদের আয়োজকদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়। 

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ২০২০ ও ২০২১ সালে অনলাইন কোরবানি হাট হিসেবে ডিজিটাল হাটের সফল বাস্তবায়ন করেছে ই-ক্যাব। ২০২০ সালে ২৭ হাজার এবং ২১ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার পশু বিক্রি করে মাইলফলক সৃষ্টি করেছে ডিজিটাল হাট। আমাদের কর্মীরা ঈদের দিন কাজ করে নিজেদের ঈদের খুশি অন্যদের জন্য পরিত্যাগ করেছেন। 

গত বছর ডিজিটাল হাটে পরীক্ষামূলকভাবে এসক্রো সুবিধা রাখা হয়েছিল। এবারও সেটা থাকছে। এবারও প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের ডিজিটাল হাটের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। 

ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘ই-ক্যাবের উদ্যোগে পর পর ৩ বার এই ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন হচ্ছে। সরকারের ৪ জন মন্ত্রী এই হাট থেকে পশু কিনেছেন। এই ধরনের জীবন্ত প্রাণী এবং উচ্চমূল্যের এ ধরনের সর্বজনীন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বিশ্বে খুব বিরল। আমরা আশা করছি এবারও কার্যক্রম সফল হবে।’ 

চলতি বছর ডিজিটাল হাটে কেন্দ্রীয় হাটের সঙ্গে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের হাটগুলোকে যুক্ত করা হয়েছে। দুইভাবে ক্রেতারা পশু কিনতে পারবেন। প্রথমত, বিক্রেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে পশু ক্রয় করতে পারবেন। আবার ডিজিটাল হাটের এসক্রোর মাধ্যমে টাকা জমা রেখেও পশু ক্রয় করতে পারবেন। যেসব পশু স্লটারিংয়ের জন্য দেওয়া হবে, সেসব পশুর দাঁত ও অন্যান্য বিষয় পরীক্ষা করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাইকারদের সতর্কবার্তা: বাড়তি দাম ও চাঁদাবাজিতে বাজারে অস্থিরতার আশঙ্কা

  • আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রচ্ছায়ায় চাঁদাবাজি।
  • পণ্যের লেবেলে লাগামহীন দাম বসানোর অপতৎপরতা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘রোজায় নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা’ শীর্ষক গতকালের মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি ও বাণিজ্য সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘রোজায় নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা’ শীর্ষক গতকালের মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি ও বাণিজ্য সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পবিত্র রমজান আসার আগেই নিত্যপণ্যের পাইকারি বাজারে অস্বস্তির বাতাস বইছে। পণ্য সরবরাহে বাধা, চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য আর পণ্যের লেবেলে করপোরেটদের লাগামহীন দাম বসানোর অপতৎপরতা ভোক্তা পর্যায়ে চাপ বাড়াচ্ছে, যা রীতিমতো জনগণের পকেটকে ছিঁড়ে নিচ্ছে। ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা সতর্ক করে বলেছেন, সরকার এখনই ব্যবস্থা না নিলে রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হবে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই সতর্কবার্তা আসে। সংগঠনের নবনিযুক্ত প্রশাসক মো. আবদুর রহিম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘রোজায় নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি ও বাণিজ্য সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেন।

এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, দেশে চাঁদাবাজির প্রলয় শুরু হয়েছে। ট্রাক থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো পর্যন্ত ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হয়। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকেও চাঁদা দিতে হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রচ্ছায়ায় চাঁদাবাজি এখন সংগঠিত রূপ নিয়েছে। শ্যামবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, চাঁদাবাজি এখন সর্বনাশের স্তরে নেমেছে। একদিকে ট্রাকে পণ্য ভরতে চাঁদা, অন্যদিকে পণ্য নামাতেও চাঁদা। প্রশাসন জানে, কিন্তু চুপ।

আরও বড় উদ্বেগ এসেছে করপোরেট আগ্রাসন নিয়ে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোড়কজাত পণ্যের অজুহাতে করপোরেট কোম্পানিগুলো বাজার দখল করছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে পণ্য পেলেও করপোরেট ব্র্যান্ডিংয়ের চাপে খুচরা বাজারে দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। ফরিদ উদ্দিনের ভাষায়, ৩ টাকার মোড়ক লাগিয়ে ৪০ টাকা দাম বাড়ায়, এটাই আজকের বাস্তবতা। অথচ এসব কিছুর দায় ভোক্তার ওপরই পড়ছে।

চিনি ও তেল ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম এখন তুলনামূলক স্থিতিশীল। কিন্তু স্থানীয় উৎপাদনে গ্যাস-সংকট ও লজিস্টিক জটিলতা না মিটলে রমজানের আগে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাঁদের আশঙ্কা, চিনি ও তেল মিলের উৎপাদন স্থবির হলে বাজারে নতুন চাপ তৈরি হবে।

এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. আবদুর রহিম খান সভায় বলেন, সরকারের লক্ষ্য বাজারে ভারসাম্য রাখা, ব্যবসায়ীকে হয়রানি নয়। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, চাঁদাবাজি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও দৃঢ় হতে হবে, আর ব্যবসায়ীদেরও আইন মেনে চলতে হবে।

ব্যবসায়ী নেতারা মনে করছেন, বড় করপোরেটদের নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজি থামাতে না পারলে শুধু রমজান নয়, সামগ্রিক অর্থনীতিতেই ভোক্তামুখী পণ্যমূল্যের চাপ দীর্ঘায়িত হবে। কারণ, নিত্যপণ্যের পাইকারি বাজারই দেশের খাদ্য সরবরাহব্যবস্থার মেরুদণ্ড; এখানে অস্থিরতা মানেই বাজেটের বাইরে নতুন মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লালদিয়া টার্মিনাল: ৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে এপিএম টার্মিনালস

  • ২০৩০ সালের মধ্যে টার্মিনালটি চালু হওয়ার প্রত্যাশা।
  • সরাসরি ৫০০-৭০০ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
  • বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল (এলসিটি) পিপিপি প্রকল্পে ৩০ বছরের কনসেশন চুক্তি সই করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এবং ডেনমার্কভিত্তিক মায়ের্সক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস। আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত চুক্তি সই হবে। চুক্তির আওতায় এপিএম টার্মিনালস বাংলাদেশে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার কিংবা তার বেশি বিনিয়োগ করবে; যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইউরোপীয় ইক্যুইটি বিনিয়োগ।

গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (বিডা) আশিক চৌধুরী এসব কথা জানান। তিনি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (মিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির (পিপিপিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)।

পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কাঠামোর আওতায় এই টার্মিনাল নির্মাণ, অর্থায়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে এপিএম টার্মিনালস, তবে মালিকানা থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে। প্রকল্পটি হলে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে। সরকার ও সিপিএর আয়, পরোক্ষ-প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ ১১ ধরনের সুবিধা বাড়বে।

বেজার চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের বন্দর খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। লালদিয়া টার্মিনাল প্রকল্পটি শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি বাংলাদেশের লজিস্টিকস খাতকে ফিউচার-রেডি করে তুলবে; যা আমাদের রপ্তানি, কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করবে। তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের পিপিপি খাত একটি বৈশ্বিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। এটি ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ, পরিবহন ও সামাজিক অবকাঠামো খাতে নতুন বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে। লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল চালু হলে বাংলাদেশের বন্দর খাত শুধু আধুনিকায়নই হবে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক লজিস্টিক হাবে পরিণত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডেনমার্কভিত্তিক মায়ের্সক গ্রুপ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শিপিং প্রতিষ্ঠান, যার সহযোগী এপিএম টার্মিনালস বর্তমানে ৩৩টি দেশে ৬০টির বেশি টার্মিনাল পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপ, চীন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশে দীর্ঘদিন ধরে সফলভাবে বন্দর পরিচালনা করছে।

আশিক চৌধুরী বলেন, লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল হবে দেশের প্রথম গ্রিন ও স্মার্ট পোর্ট, যা বর্তমান সক্ষমতার দ্বিগুণ আকারের জাহাজ ধারণ করতে পারবে এবং ২৪ ঘণ্টা নাইট নেভিগেশন সুবিধাসহ পরিচালিত হবে। এতে বাংলাদেশের রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমে গতি আসবে, কমবে পরিবহন ব্যয় এবং বৈশ্বিক শিপিং সংযোগ আরও জোরদার হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টার্মিনালটি ২০৩০ সালের মধ্যে চালু হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এতে বছরে ৮ লক্ষাধিক টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে, যা বর্তমান সক্ষমতার তুলনায় প্রায় ৪৪ শতাংশ বেশি।

প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি ৫০০-৭০০ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং পরোক্ষভাবে কয়েক হাজার মানুষ কাজের সুযোগ পাবেন; বিশেষ করে ট্রাকিং, স্টোরেজ, লজিস্টিকস ও স্থানীয় এসএমই খাতে। রাজস্ব ভাগাভাগি ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়ায় সিপিএ প্রতি কনটেইনারে নির্দিষ্ট হারে আয় পাবে, পাশাপাশি কর ও শুল্কের মাধ্যমে সরকারের রাজস্বও বাড়বে।

বন্দরটিতে জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহার ও জলবায়ু অভিযোজন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে কার্বন নির্গমন কমবে এবং বাংলাদেশের প্যারিস চুক্তির (এনডিসি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান চৌধুরী আশিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঋণখেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চান ব্যাংকাররা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঋণখেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চান ব্যাংকাররা

দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকা। খেলাপি হয়ে পড়া এসব ঋণ আদায়ে কঠোর হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ব্যাংকগুলো। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তফসিলি ব্যাংকের নির্বাহী প্রধানেরা। বৈঠকে ইচ্ছাকৃত বড় খেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে বকেয়া আদায়ে আদালতে মামলা করার সময় নিয়মিত এককালীন ডাউন পেমেন্টের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

বেসামাল খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ে গৃহীত পদক্ষেপসংক্রান্ত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. কবির আহম্মদ। বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)-এর প্রেসিডেন্ট এবং সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন। তিনি বলেন, সরকারের পালাবদলের পর খেলাপি ঋণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে খেলাপির হার ২৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এক বছরেই প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা খেলাপি বেড়েছে। এত খেলাপি ঋণ কীভাবে আদায় করা যায়, তা নিয়ে এক্সক্লুসিভ আলোচনা হয়েছে। সেখানে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতে রিট করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট বৃদ্ধি করে অর্ধেকের কাছাকাছি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর রিট শুনানিকালে ব্যাংকারদেরও একটি পক্ষ হিসেবে মতামত দেওয়ার সুযোগ রাখার বিষয়টি জানানো হয়েছে। আর আদালতে যেন খেলাপিদের স্বার্থের মতো আমানতকারীদের স্বার্থের দিক বিবেচনায় রাখা হয়, সেই উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

মাসরুর আরেফিন বলেন, ঋণ আদায়ে ডিসেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান কিছু করতে চায় ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও সেই রকম অগ্রগতি দেখতে চান। কিন্তু কোন কৌশলে যেন কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দিচ্ছে না। সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাস্তব নানা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা। আর নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (এনবিএফআই) ব্যাংকের আমানত ফেরত দিচ্ছে না। এনবিএফআইগুলো যাতে অর্থ ফেরত দেয়, সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।

পতিত সরকারের আমলে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া নীতি সহায়তার বিষয়ে মাসরুর আরেফিন বলেন, নীতি সহায়তার পদক্ষেপ একেবারে কাজ করছে না। তারা সর্বনিম্ন ২৫ লাখ টাকার ডাউন পেমেন্টে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আবর গ্রাহকভেদে ১ শতাংশ বা ২ শতাংশ ডাইন পেমেন্ট নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় খেলাপিরা নানা ভঙ্গিমায় নতুন ঋণ চাচ্ছে, যা ঋণ নীতিমালার কার্যক্রমের সঙ্গে যায় না। প্রতিষ্ঠানগুলোকে চলমান রাখার গৃহীত উদ্যোগ কিন্তু শুরুতে ভালো ছিল। অনেকে প্রশংসা করেছেন। কিন্তু ঋণ গ্রহীতাদের সাড়া না মেলায় পুরো নীতি সহায়তা যেন হযবরল দশায় উপনীত হয়েছে।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে আসায় ব্যবসায়িক কার্যক্রমে গতি আনতে গত আগস্টে দেশের বড় করপোরেট ঋণখেলাপিসহ প্রায় ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ পুনঃ তফসিলের সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ঋণ ৫ থেকে ১৫ বছরের জন্য পরিশোধের সুযোগ পাবে। এই সুবিধার আওতায় ডাউন পেমেন্ট মাত্র ১ শতাংশ থেকে শুরু হবে এবং কিস্তি পরিশোধ শুরু করার আগে তিন বছর পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। তবে শর্তগুলো প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আলাদা হবে। বিশেষ সুবিধার আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে আবদুল মোনেম গ্রুপ, ড্যান্ডি ডাইং, তানাকা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ, বেঙ্গল গ্রুপ, জিপিএইচ ইস্পাত, আনোয়ার গ্রুপ, শাদাব ফ্যাশন, অ্যাপেক্স উইভিং। যদিও ১ হাজার ২৫০টি প্রতিষ্ঠান বিশেষ নীতি সহায়তার জন্য আবেদন করেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাকরির ১০ মাস বাকি থাকতেই পদত্যাগ করলেন ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মইনুল খান। ছবি: সংগৃহীত
মইনুল খান। ছবি: সংগৃহীত

চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার ১০ মাস আগেই স্বেচ্ছা অবসরে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) চেয়ারম্যান মইনুল খান। এ জন্য তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান।

বাণিজ্যসচিব বলেন, মইনুল খান আগেই অনানুষ্ঠানিকভাবে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া তাঁর পদত্যাগপত্রে আবেদনের তারিখ উল্লেখ আছে ৩০ অক্টোবর। এর অনুলিপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও সংরক্ষিত রয়েছে।

বর্তমানে ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন মইনুল খান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ২০ অক্টোবরের সরকারি আদেশ (জিও) অনুযায়ী, তিনি ২৬ অক্টোবর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ দিনের ছুটিতে রয়েছেন।

বিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অফিসের সহকর্মীদের কাছে দোয়া চেয়ে মইনুল খান স্বেচ্ছা অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। সেখানে তিনি তিন দশকের বেশি সময় সরকারের বিভিন্ন পদে থেকে পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত