Ajker Patrika

ডলার টপকে বিশ্বের শক্তিশালী মুদ্রা এখন রুশ রুবল

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ৪৫
ডলার টপকে বিশ্বের শক্তিশালী মুদ্রা এখন রুশ রুবল

বিশ্বব্যাপী নানা আর্থিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও বাণিজ্যযুদ্ধের মাঝেও চমক দেখিয়েছে রুশ রুবল। বিশ্ব অর্থনীতির ঘূর্ণিপাকে যখন অধিকাংশ মুদ্রাই দুর্বল হয়েছে, তখন রুবলের উত্থান আন্তর্জাতিক বাজারে নজর কেড়েছে। চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করা মুদ্রায় পরিণত হয়েছে রুশ রুবল। যুদ্ধকালীন অস্থিরতার মধ্যে রুবলের এই উত্থান বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে।

ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুবলের মান ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। ডলারের ওপর আস্থা কমে যাওয়াকে এই উত্থানের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ ডলারের পতনে ভূমিকা রেখেছে।

রুবলের বিনিয়োগ-রিটার্ন সুইডিশ ক্রোনার ও সুইস ফ্রাঁককে ছাড়িয়ে গেছে। এই দুই মুদ্রার মান বেড়েছে যথাক্রমে ১৩ ও ১১ শতাংশ। ব্রিটিশ পাউন্ডও পিছিয়ে নেই। বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এই মুদ্রার মান বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।

শুধু অন্যান্য মুদ্রা নয়, রুবল পারফরমেন্সের দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছে মূল্যবান ধাতুগুলোকেও। সাধারণত অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় যেসব সম্পদকে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে দেখা হয়, সেই সোনা ও রূপার দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২৩ ও ১২ শতাংশ।

রুশ মুদ্রার এমন উত্থানের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে উচ্চ সুদের হার। বর্তমানে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারক হার ২১ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও যুদ্ধকালীন অর্থনীতি শক্তিশালী করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া রুবলের মান নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ক্রেমলিন। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে দেশ থেকে তাদের অর্থ বা সম্পদ সরিয়ে নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিশেষ অ্যাকাউন্টে নগদ অর্থ রাখার বাধ্যবাধকতা আরোপ করায়, মুদ্রা বাজারে রুবলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতি যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে, তখন রুবলের এই উত্থান বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘লিবারেশন ডে’ ট্যারিফের কারণে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় সব দেশের ওপর আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে, যার প্রভাব পড়েছে ভোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের ওপর।

এই শুল্কনীতি নিয়ে বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জেপি মর্গানের প্রধান নির্বাহী জেমি ডাইমন বলেছেন, ‘এই শুল্কনীতির ফলাফল হিসেবে মন্দা দেখা দেওয়া সম্ভব।’ আর ব্ল্যাকরকের প্রধান নির্বাহী ল্যারি ফিঙ্কের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ইতিমধ্যেই সংকোচনের মুখে পড়েছে।

ব্যাংকিং জায়ান্ট মর্গান স্ট্যানলির পূর্বাভাস, ইউরোর বিপরীতে ডলারের মান আরও কমতে পারে। ইউরো এরই মধ্যে ডলারের বিপরীতে ৯ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

তবে ওয়াল স্ট্রিটে অনেকে ডলারের এই পতনকে খুব একটা গুরুতর মনে করছেন না। সিটিগ্রুপের প্রধান নির্বাহী জেন ফ্রেজার বলেন, ‘সবকিছু শেষ পর্যন্ত ঠিকঠাক হলে, দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য ভারসাম্য ও কাঠামোগত পরিবর্তনের পরও যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি থাকবে এবং ডলার রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবেই অবস্থান ধরে রাখবে।’

এদিকে, লন্ডনের শেয়ারবাজার টানা চতুর্থ দিনের মতো ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। ট্রাম্পের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী সম্প্রতি বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দারুণ একটি বাণিজ্য চুক্তির ভালো সম্ভাবনা রয়েছে’। এই মন্তব্যের পর পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

এফটিএসই ১০০ সূচক ১ দশমিক ৪ শতাংশ বা ১১৪ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২৪৯ দশমিক ১২-তে। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ঊর্ধ্বগতি এখন পর্যন্ত ৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে, যদিও মাসজুড়ে সঙ্কটের আশঙ্কায় এই সূচক এখনো ৪ শতাংশের বেশি পিছিয়ে রয়েছে।

পাউন্ডও ঘুরে দাঁড়িয়েছে—শুক্রবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৩২৫২ ডলারে, যা অক্টোবরের শুরুতে র‍্যাচেল রিভসের ৪০ বিলিয়ন পাউন্ডের ট্যাক্স বাজেট ঘোষণার আগে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত