Ajker Patrika

শাবিপ্রবির গবেষণা: ৩২.৭ শতাংশ শিশুর বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি 
শাবিপ্রবির গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাবিপ্রবির গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) একদল গবেষকের গবেষণায় উঠে এসেছে, সিলেট বিভাগের ৩২.৭ শতাংশ শিশুর বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম। গবেষণাটি ওই বিভাগের শিশুদের অপুষ্টির চিত্র বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলাগুলো চিহ্নিত করেছে।

গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ‘সি’ ব্লকের ৩১২ নম্বর কক্ষে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শাবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল বাতেন ও বিভাগীয় পরিচালক ড. মো. আনিসুর রহমান।

প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মোসাম্মৎ কামরুন নেছার সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তা ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল হোসেন। সঞ্চালনা করেন সহপ্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন।

শাবিপ্রবির গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাবিপ্রবির গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা

গবেষণা থেকে জানা যায়, সিলেট বিভাগের শিশুদের পুষ্টির সার্বিক অবস্থার মধ্যে ৩২.৭ শতাংশ শিশু বয়সের তুলনায় উচ্চতায় কম, ১২. ৭ শতাংশ উচ্চতার তুলনায় ওজনে কম ও ২৫.৫ শতাংশ শিশু বয়সের তুলনায় ওজনে কম সমস্যায় ভুগছে। যা সারা দেশের গড় শতাংশ থেকে বেশি।

এ ছাড়া বিভাগের জেলাগুলোর মধ্যে সুনামগঞ্জের শিশুদের ‘বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম (৪১.২ %) ’ ও ‘কম ওজন (২৯.৭ %) ’-এর সমস্যা সবচেয়ে বেশি। সিলেট জেলায় শিশুদের ‘উচ্চতার তুলনায় ওজন কম (১৪.৫ %) ’-এর সমস্যা তুলনামূলক বেশি। অন্যদিকে মৌলভীবাজার জেলায় অপুষ্টির সমস্যা তুলনামূলক কম।

গবেষণার সহপ্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের সার্বিক অপুষ্টির হার কমলেও সিলেটে অপুষ্টির সমস্যা সে হারে কমছে না। বাংলাদেশে শিশুদের পুষ্টির পরিস্থিতির সামগ্রিক উন্নতি হলেও কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে এখনো এটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে বিদ্যমান।

বিশেষ করে, সিলেট বিভাগের শিশুদের পুষ্টিহীনতার হার এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। অপুষ্টি শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

শাবিপ্রবির গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাবিপ্রবির গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা

ড. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় সিলেট বিভাগের চার জেলায় শিশুদের অপুষ্টির হার তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ‘‘বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম’’, ‘‘উচ্চতার তুলনায় ওজন কম’’, ‘‘বয়সের তুলনায় ওজন কম’’ ও ‘‘কম ওজন’’ অপুষ্টির এই প্রধান সূচকগুলোর আলোকে গবেষণাটি করা হয়। এ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা কিছু সুপারিশ করেছি।’

গবেষক দলের সদস্যরা জানান, সিলেট বিভাগের শিশুদের অপুষ্টির হার কমাতে উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা, এনজিও ও কমিউনিটি নেতৃত্বকে সম্পৃক্ত করে একটি সমন্বিত পুষ্টি সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা জরুরি। বিশেষ করে, পুষ্টিবিষয়ক জনসচেতনতা বাড়ানো, শিশুদের জন্য সুষম খাদ্য নিশ্চিতকরণ, মা ও শিশুর জন্য স্বাস্থ্যসেবার সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা ও নিয়মিত পুষ্টি মূল্যায়ন ক্যাম্প পরিচালনা করা প্রয়োজন।

গবেষণার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ‘রিসার্চ গ্র্যান্ট ফর উইমেন’ তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হয়। এই জরিপে ১ হাজার ৪৫০টি বসতবাড়ি থেকে ১ হাজার ৬২৫টি শিশুর পারিবারিক অবস্থার ও পুষ্টিসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণাটি পরিচালনায় আইসিডিডিআরবির শিশু পুষ্টিবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল হোসেনের সহযোগিতায়, পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোসাম্মৎ কামরুন নেছা (প্রধান গবেষক) ও অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিনের (সহপ্রধান গবেষক) নেতৃত্বে তথ্য সংগ্রহ ও ক্ষুদ্র এলাকা নিরূপণ পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

গবেষণাটিতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও গবেষণা সহকারী হিসেবে অবদান রেখেছেন শাবিপ্রবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাশেদ বাবু, সুমাইয়া তাসনিম, ফখরুল ইসলাম, প্রসেনজিৎ বসাক, মো. সাব্বির হোসেইন ও মাহফুজ জিয়াদ। গবেষণার জরিপে ৩০ জন মাঠকর্মী প্রায় ৫ মাস তথ্য সংগ্রহে নিযুক্ত ছিলেন।

‘দ্য অ্যাসেসমেন্ট অব ভালনারেবল এরিয়াস ইন সিলেট ডিভিশন ফর চাইল্ডহুড আন্ডার-নিউট্রিশন’ শিরোনামে শাবিপ্রবির পরিসংখ্যান বিভাগ ও আইসিডিডিআরবির যৌথ পরিচালনায় গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণাটি বিভাগের চার জেলার ৪১টি উপজেলা (গ্রাম-শহর), সিটি করপোরেশনসহ মোট ৯৩টি ক্লাস্টারে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওপর চালানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশে পাঠানোর নামে ৩২ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণা, বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার

আগৈলঝাড়া(বরিশাল) প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার বাবা-ছেলে। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার বাবা-ছেলে। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা করে ৩২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করলে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বেলুহার গ্রামের চুন্নু শরীফের ছেলে রুবেল শরীফকে অনেক আগে সৌদি আরবে পাঠান দালাল ইমরান ভূঁইয়া। এর সূত্রে ধরে দালাল প্রতারক ইমরান ভূঁইয়া রুবেলের আপন দুইভাই রাসেল শরীফ ও রাজিব শরীফকে কানাডায় পাঠানোর জন্য তাঁদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এরপর রাসেল শরীফ ও রাজিব শরীফকে কানাডায় পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতারক ইমরান ভূঁইয়া ও তাঁর বাবা নুরু ভূঁইয়াসহ তাঁদের পরিবারের লোকজন বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩২ লাখ টাকা নেন।

এ ঘটনায় রাসেল শরীফ বাদী হয়ে চলতি বছরের ১৭ জুলাই আগৈলঝাড়া থানায় নুরু ভূঁইয়া ও তাঁর ছেলে ইমরান ভূঁইয়াসহ ছয়জনকে আসামি করে প্রতারণার মামলা করেন। ওই প্রতারণা মামলার আসামি নুরু ভূঁইয়া ও তাঁর ছেলে মো. নবীন ভূঁইয়াকে আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের বরিশাল আদালতে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী রাসেল শরীফ বলেন, ‘কানাডায় পাঠানোর কথা বলে ইমরান ও তাঁর বাবা নুরু ভূঁইয়া বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩২ টাকা নিয়ে টালবাহানা করেন। এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া থানায় প্রতারণার মামলা করেছি।’

অভিযুক্ত নুরু ভূঁইয়া গ্রেপ্তারের পর তাঁর বাড়ির লোকজন আত্মগোপনে থাকায় তাঁদের পরিবারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম বলেন, বিদেশে পাঠানোর কথা বলে বাদীর পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে আসামিরা। তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলার পরে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসচালককে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ ও ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাসচালককে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আনোয়ার হোসেন (৩৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোররাতে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ দুপুরে গ্রেপ্তার হওয়া আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে ময়মনসিংহ আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে নিহত বাসচালকের ছোট বোন ময়না আক্তার ফুলবাড়িয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ও হত্যা মামলা করেন।

গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে।

ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ফুলবাড়িয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আলিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। পরে আসামি শনাক্তের পর নিহতের ছোট বোন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ও হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের একজনকে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ভালুকজান বাজারের পেট্রলপাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা চালক মো. জুলহাস মিয়া (৪০) পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান। মৃত জুলহাসের বাড়ি ভালুকজান গ্রামে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছেন, মাস্ক পরা তিন যুবক পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অপহরণ করে মুক্তিপণ নিয়েও শিশুকে হত্যা, আসামির মৃত্যুদণ্ড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে শিশু তাওহীদ ইসলামকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরও হত্যা করেন মো. মকবুল হোসেন। তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত।আজ বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মকবুল ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার লাখিরচর এলাকার বাসিন্দা। দণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অপর এক ধারায় আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আসামির স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানার টাকা আদায় করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ভিকটিম পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এরশাদ আলম জর্জ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছেন, আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। তবে তার আগে হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইচ্ছে করলে সাত দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকার রসুলপুর জামিয়া ইসলামিয়া (মাদ্রাসা) ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগে পড়াশোনা করত ১০ বছর বয়সী মো. তাওহীদ ইসলাম। গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায় মাদ্রাসার উদ্দেশে বের হয়ে মামার দোকানে যায়। মামাকে না পেয়ে একাই আবার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় শিশুটি। পথিমধ্যে মকবুল হোসেন তাকে অপহরণ করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টায় আসামির পছন্দমতো জায়গায় মুক্তিপণ রেখে আসেন ভুক্তভোগীর মামা। টাকা পেয়েও মকবুল শিশুটিকে ফেরত দেয়নি। পরে পরিবার অভিযোগ দিলে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে মকবুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর দেওয়া তথ্যে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় শিশুটির মা তাসলিমা আক্তার বেগম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই এ কে এম সাইদুজ্জামান গত বছরের ৩১ জুলাই মকবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি’ লিখে রাবি ছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও রাবি প্রতিনিধি
সোনিয়ার ঘরে চিরকুট পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোনিয়ার ঘরে চিরকুট পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি বিশ্বাস করো তোমরা। কিন্তু নিজের সাথে যুদ্ধ করে আর পেরে উঠলাম না।’ বাবা-মায়ের জন্য এমন চিরকুট লিখে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন সোনিয়া সুলতানা (২৪) নামের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। আজ বুধবার সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মির্জাপুর এলাকার ইসলাম টাওয়ারের সাততলার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সোনিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০ সেশনের (৬৭তম ব্যাচ) ছাত্রী ছিলেন। তাঁর বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, ফ্ল্যাটে নিজের পরিবারের সঙ্গে থাকতেন সোনিয়া। তাঁর ঘরে কাগজে লেখা চারটি চিরকুট পাওয়া গেছে। একটি চিরকুটে লেখা, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার যেন পোস্টমর্টেম না করা হয়। আম্মু, আব্বু, ধ্রুবতারা আমি খুব ভালোবাসি। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আল্লাহকে বলো আমাকে মাফ করে দিতে।’

আরও একটি চিরকুটে লেখা, ‘আমি প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছি মা। কবরের আযাব কীভাবে সহ্য করব। আব্বুকে বলবা আমার কবরের পাশে থাকতে। আল্লাহ যেন আমাকে মাফ করে দেন।’

অন্য একটিতে লেখা, ‘আব্বু আম্মু তোমরা আমাকে মাফ করে দিও। তোমাদের জন্য আমি কিচ্ছু করতে পারলাম না। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল মা। আমি কিচ্ছু পারলাম না। আব্বু আম্মু শুধু দোয়া করো যেন আমাকে মাফ করে দেন।’ আরও একটিতে লেখা, ‘আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি বিশ্বাস করো তোমরা। কিন্তু নিজের সাথে যুদ্ধ করে আর পেরে উঠলাম না।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি মর্মান্তিক। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে মৃত্যুর কোনো সঠিক কারণ আমরা জানতে পারিনি। পুলিশও আমাদের কোনো কিছু জানাতে পারেনি। হয়তো পরে আমরা জানতে পারব।’

নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, ওড়না গলায় প্যাঁচানো অবস্থায় মরদেহ ঝুলছিল। এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। সোনিয়া চিরকুটে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করার অনুরোধ জানিয়ে গেছে। পরিবারও সেটি চায়নি। তাই ময়নাতদন্ত করা হয়নি। মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত