আসাদ সরকার
রোজ সকালে উঠে পরম যত্নে পুতুলগুলো সাজিয়ে তোলেন বিষ্ণুচন্দ্র। ঠিক যেন মান্না দে-র গান: ‘নতুন নতুন করে তোকে যতই সাজাতাম, ভরত না মন দিতাম কত নতুন নতুন নাম।’ বিষ্ণুর কাছে পুতুলগুলো তাঁর পুতুল পুতুল মেয়ে। যাদের রোজ সাজিয়েও মন ভরে না। নতুন নামও দেয়। কখনো মধুমালা-মদন কুমার, কখনো আলোমতী-প্রেম কুমার। বিষ্ণুর নিজের মেয়ে লক্ষ্মীর বড় আক্ষেপ, বাবা পুতুলগুলো যেভাবে সাজায়, ১৪ বছরে একবারও তাকে সেভাবে সাজায়নি। মেয়ের অনুযোগ শুনে বিষ্ণু হাসে, সে হাসি সত্য স্বীকারের।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের ‘নাসিমা পুতুলনাচ’-এর কথা এলাকার মানুষের মুখে মুখে। সেই দলের প্রতিষ্ঠাতা বাবুরাম দাস ছিলেন যাত্রাদলের হারমোনিয়াম মাস্টার। বড় ছেলে বানুচন্দ্র বাবার হারমোনিয়ামের ভক্ত ছিলেন। এক ভাসানযাত্রায় পরিচয় ঘটে পুতুলনাচের সঙ্গে। তা দেখে পুতুলনাচের দল গঠনের জেদ ধরেন। কিন্তু অর্থের সংকুলান না হওয়ায় ভেস্তে যেতে থাকে সে উদ্যোগ। সে সময় বানুচন্দ্রের পাশে দাঁড়ান বন্ধু আফসার আলী। ‘নাসিমা পুতুলনাচ’ নাম দিয়ে একটি দল গঠন করে পুতুল মাস্টারের দায়িত্ব দেন বানুচন্দ্রকে। ৫০ বছর আগে এভাবেই শুরু হয় ‘নাসিমা পুতুল নাচ’।
বর্তমানে এ দলের হাল ধরেছে বানুচন্দ্রের দুই ছেলে বিষ্ণুচন্দ্র ও কৃষ্ণচন্দ্র। পুতুল মাস্টারের দায়িত্ব পালন করে বিষ্ণুচন্দ্র আর মিউজিকটা দেখে কৃষ্ণচন্দ্র।
সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখেন আফছার আলীর নাতি আব্দুল মতিন সরদার। বানুচন্দ্র দাস যতটা পারেন দেখাশোনা করেন। তবে শরীরে কুলোয় না। দুই ছেলেকে নিজ হাতে শিক্ষা দিয়ে দলের হাল তুলে দেন বানুচন্দ্র। ঠিক যেমন এখন করছেন বানুচন্দ্রের দুই ছেলে। বিষ্ণুচন্দ্রের ছেলে লিটন চন্দ্র বাবার কাছে শিখছে পুতুল মাস্টারি। আর কৃষ্ণচন্দ্রের ছেলে দুলাল চন্দ্র শিখছে মিউজিকের কাজ। লিটন চন্দ্র ও দুলাল চন্দ্র দুজনের বয়স ১৪-র কাছাকাছি। এর মধ্যে দুজনেই ক্যাসিও (কি-বোর্ড), করতান, হারমোনিয়াম, খোল, কাঠি ঢোল বাজাতে সিদ্ধহস্ত। তিন প্রজন্মের অংশগ্রহণে নাসিমা পুতুলনাচ উপহার দিয়ে চলেছে লাইলী-মজনু, মধুমালা-মদন কুমার, বেহুলা-লখিন্দর, কাশেম মালার প্রেম, আলোমতি প্রেম কুমার।
দলে সর্বমোট সদস্য ১৪ জন। একটা বড় বায়না থেকে আসে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা। তা-ও নিয়মিত নয়। এভাবে কেমন করে জীবন চলে–জানতে চাইলে হেসে হেসে বিষ্ণুচন্দ্র বলেন, ‘খাওয়ার চেয়ে না খেয়েই জীবন চলে বেশি।’ তবুও কেন এ পেশা? সাবলীল উত্তর, ‘হামরাও যদি ছাড়ি, এলাকা থাকি সংস্কৃতিটাই তো শ্যাষ হয়া যাইবে।’
একটা ঘরেই বাবা বানুচন্দ্র, স্ত্রী জয়ন্তীবালা, পুত্র লিটন ও কন্যা লক্ষ্মীরানীকে নিয়ে থাকেন বিষ্ণুচন্দ্র। ঘরের ভেতরটা ঘুরে দেখলে হিসাবটা কোনোভাবেই মেলে না। মনে হচ্ছিল, এ যেন মানুষ হয়েও পুতুলের জীবন। ছোট্ট লক্ষ্মীরানী একটু গাইতে পারেন। অনুরোধে গেয়ে শোনান, ‘ও সাথি, ভালোবাসা পুতুল খেলা নয়।’
ফেরার সময় লক্ষ্মীরানীর গানের রেশ ধরে মনে হচ্ছিল বিষ্ণুরা বোধ হয় বিশ্বাস করেন না, জীবনটা পুতুল খেলা নয়। সে কারণেই হয়তো জীবনযাপনেও বেছে নিয়েছেন পুতুলের পরম্পরা।
রোজ সকালে উঠে পরম যত্নে পুতুলগুলো সাজিয়ে তোলেন বিষ্ণুচন্দ্র। ঠিক যেন মান্না দে-র গান: ‘নতুন নতুন করে তোকে যতই সাজাতাম, ভরত না মন দিতাম কত নতুন নতুন নাম।’ বিষ্ণুর কাছে পুতুলগুলো তাঁর পুতুল পুতুল মেয়ে। যাদের রোজ সাজিয়েও মন ভরে না। নতুন নামও দেয়। কখনো মধুমালা-মদন কুমার, কখনো আলোমতী-প্রেম কুমার। বিষ্ণুর নিজের মেয়ে লক্ষ্মীর বড় আক্ষেপ, বাবা পুতুলগুলো যেভাবে সাজায়, ১৪ বছরে একবারও তাকে সেভাবে সাজায়নি। মেয়ের অনুযোগ শুনে বিষ্ণু হাসে, সে হাসি সত্য স্বীকারের।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের ‘নাসিমা পুতুলনাচ’-এর কথা এলাকার মানুষের মুখে মুখে। সেই দলের প্রতিষ্ঠাতা বাবুরাম দাস ছিলেন যাত্রাদলের হারমোনিয়াম মাস্টার। বড় ছেলে বানুচন্দ্র বাবার হারমোনিয়ামের ভক্ত ছিলেন। এক ভাসানযাত্রায় পরিচয় ঘটে পুতুলনাচের সঙ্গে। তা দেখে পুতুলনাচের দল গঠনের জেদ ধরেন। কিন্তু অর্থের সংকুলান না হওয়ায় ভেস্তে যেতে থাকে সে উদ্যোগ। সে সময় বানুচন্দ্রের পাশে দাঁড়ান বন্ধু আফসার আলী। ‘নাসিমা পুতুলনাচ’ নাম দিয়ে একটি দল গঠন করে পুতুল মাস্টারের দায়িত্ব দেন বানুচন্দ্রকে। ৫০ বছর আগে এভাবেই শুরু হয় ‘নাসিমা পুতুল নাচ’।
বর্তমানে এ দলের হাল ধরেছে বানুচন্দ্রের দুই ছেলে বিষ্ণুচন্দ্র ও কৃষ্ণচন্দ্র। পুতুল মাস্টারের দায়িত্ব পালন করে বিষ্ণুচন্দ্র আর মিউজিকটা দেখে কৃষ্ণচন্দ্র।
সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখেন আফছার আলীর নাতি আব্দুল মতিন সরদার। বানুচন্দ্র দাস যতটা পারেন দেখাশোনা করেন। তবে শরীরে কুলোয় না। দুই ছেলেকে নিজ হাতে শিক্ষা দিয়ে দলের হাল তুলে দেন বানুচন্দ্র। ঠিক যেমন এখন করছেন বানুচন্দ্রের দুই ছেলে। বিষ্ণুচন্দ্রের ছেলে লিটন চন্দ্র বাবার কাছে শিখছে পুতুল মাস্টারি। আর কৃষ্ণচন্দ্রের ছেলে দুলাল চন্দ্র শিখছে মিউজিকের কাজ। লিটন চন্দ্র ও দুলাল চন্দ্র দুজনের বয়স ১৪-র কাছাকাছি। এর মধ্যে দুজনেই ক্যাসিও (কি-বোর্ড), করতান, হারমোনিয়াম, খোল, কাঠি ঢোল বাজাতে সিদ্ধহস্ত। তিন প্রজন্মের অংশগ্রহণে নাসিমা পুতুলনাচ উপহার দিয়ে চলেছে লাইলী-মজনু, মধুমালা-মদন কুমার, বেহুলা-লখিন্দর, কাশেম মালার প্রেম, আলোমতি প্রেম কুমার।
দলে সর্বমোট সদস্য ১৪ জন। একটা বড় বায়না থেকে আসে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা। তা-ও নিয়মিত নয়। এভাবে কেমন করে জীবন চলে–জানতে চাইলে হেসে হেসে বিষ্ণুচন্দ্র বলেন, ‘খাওয়ার চেয়ে না খেয়েই জীবন চলে বেশি।’ তবুও কেন এ পেশা? সাবলীল উত্তর, ‘হামরাও যদি ছাড়ি, এলাকা থাকি সংস্কৃতিটাই তো শ্যাষ হয়া যাইবে।’
একটা ঘরেই বাবা বানুচন্দ্র, স্ত্রী জয়ন্তীবালা, পুত্র লিটন ও কন্যা লক্ষ্মীরানীকে নিয়ে থাকেন বিষ্ণুচন্দ্র। ঘরের ভেতরটা ঘুরে দেখলে হিসাবটা কোনোভাবেই মেলে না। মনে হচ্ছিল, এ যেন মানুষ হয়েও পুতুলের জীবন। ছোট্ট লক্ষ্মীরানী একটু গাইতে পারেন। অনুরোধে গেয়ে শোনান, ‘ও সাথি, ভালোবাসা পুতুল খেলা নয়।’
ফেরার সময় লক্ষ্মীরানীর গানের রেশ ধরে মনে হচ্ছিল বিষ্ণুরা বোধ হয় বিশ্বাস করেন না, জীবনটা পুতুল খেলা নয়। সে কারণেই হয়তো জীবনযাপনেও বেছে নিয়েছেন পুতুলের পরম্পরা।
চট্টগ্রাম নগরে পরীর পাহাড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে বছরখানেক আগে সড়কের পাশের ২৩ শতক জায়গার ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। উচ্ছেদের পর সেখানে জনস্বার্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর ডিসি রদবদল হলে সেই উদ্ধার করা জায়গা আরেক দখলদারের
৩৯ মিনিট আগেসিলেটের ১৩৩ বছরের পুরোনো এমসি কলেজ। এর ছাত্রাবাসের সপ্তম ব্লকে ১২৮ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি কলেজের কয়েকজন কর্মচারীও থাকেন। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে পানির তীব্র সংকট থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। গোসল করা দূরে থাক, প্রয়োজনীয় খাওয়ার পানিও পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে
১ ঘণ্টা আগেটানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পদ্মা নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ডুবে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের সাড়ে ৬ হাজার পরিবার। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরের নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণপুর
১ ঘণ্টা আগেরংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে শ্বশুর রূপলাল দাস (৪৫) ও জামাই প্রদীপ লালের (৩৫) প্রাণহানির পেছনে আইনশৃঙ্খলাহীনতাকে দুষছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনের চুরি, ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট অপরাধের কারণে স্থানীয় জনতার ভেতর মবের মনোভাব তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশও সেভাবে তৎপর নয়। এসব কারণেই শ্
১ ঘণ্টা আগে