পাবনা ও চাটমোহর প্রতিনিধি
একে একে মারা যায় আটটি সন্তান। পাগলপ্রায় হয়ে যান মা। এরপর দাদি আল্লাহর কাছে মানত করেন—কোনো নাতি বেঁচে থাকলে বিয়ের সময় একটি গরুর গলায় সোনা-রুপা বেঁধে ছেড়ে দেওয়া হবে। গাওয়া হবে ‘মাদারের’ তিন পালা গান। একটি খাসি জবাই করে বরযাত্রীকে খাওয়ানো হবে আর পালকিতে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে বিয়ে দেওয়া হবে।
দাদির মানত রেখে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে বিয়ে করছেন সাইফুল ইসলাম (৩২)। তিনি পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা নদীপাড়া গ্রামের মৃত খাদেমুল ইসলাম ও খোদেজা বেওয়া দম্পতির ছেলে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় সাইফুল ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনে (এসএফডিএফ) চাকরি করেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। টানা পাঁচ দিনব্যাপী এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলে। এলাকাবাসীর মধ্যেও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল। পালাতে চড়ে বর সাইফুল যখন কনের বাড়িতে গেলেন তখন শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমায় একনজর দেখতে।
সরেজমিনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাইফুল ইসলামের বাবা খাদেমুল ইসলাম ছিলেন ব্যবসায়ী। মা খোদেজা বেওয়া গৃহিণী। খোদেজা বেওয়া বিয়ের পর একে একে জন্ম দেন ৮ সন্তান। কিন্তু জন্মের ৩ থেকে ৫ বছর বয়সে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে সব সন্তানই মারা যায়। একটা সন্তানের আশায় পাগলপ্রায় হয়ে পড়েন খোদেজা বেওয়া। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে পুরো পরিবার।
এরপর খোদেজা বেওয়ার শাশুড়ি ময়না খাতুন পাশের নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে জানতে পারেন সেখানকার শীতলী চরলালি মসজিদে ভেজা কাপড়ে গিয়ে আল্লাহর কাছে মানত করলে মনোবাসনা পূরণ হয়। মসজিদটি একরাতে গড়ে ওঠে বলে কথা প্রচলিত রয়েছে।
লোকমুখে শুনে ময়না খাতুন ভেজা কাপড়ে ওই মসজিদে গিয়ে দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে বলেন, ‘যদি ছেলে বউয়ের কোনো সন্তান হয় এবং বেঁচে থাকে তবে সেই সন্তানের বিয়ের সময় সোনা-রুপার আংটি দিয়ে মোড়ানো লাল কাপড় গরুর গলায় বেঁধে গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে হবে মাদারের তিন পালা গান (আঞ্চলিক গান) এবং পালাতে চড়িয়ে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে বিয়ে করানো হবে সেই সন্তানকে।
এর কিছুদিনের মধ্যেই সাইফুল ইসলামের জন্ম হয়। শুধু সাইফুলই নয়, তার মা খোদেজা বেওয়ার কোল আলো করে পর পর জন্ম নেয় আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে। পরিবারে বইতে থাকে খুশির বন্যা। এর মধ্যে কেটে গেছে ৩২ বছর। পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন সাইফুলের দাদি ময়না খাতুন ও বাবা খাদেমুল ইসলাম। অবশেষে দাদির সেই ‘মানত’ রাখতেই নানা আয়োজনের মধ্যে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন সাইফুল ইসলাম। কনে একই উপজেলার বরদানগর মরশিন্দা গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়ার মেয়ে মায়া খাতুন।
এ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী চলে মাদারের (আঞ্চলিক গান) পালা গান। চলে খাওয়া দাওয়া। শুক্রবার বিকেলে বিয়ে করতে যাওয়ার আগে সাইফুল ও তার মা খোদেজা বেওয়া সোনা-রুপার আংটি দিয়ে মোড়ানো লাল কাপড় একটি গরুর গলায় বেঁধে ছেড়ে দেন। বরযাত্রীদের খাসির মাংস দিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করা হয়। এরপর পালকিতে চড়ে বাদ্য-বাজনাসহ পুরো গ্রাম ঘুরে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে যান সাইফুল। পাড়া প্রতিবেশীরাও হই-হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন। গ্রাম জুড়ে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার দিকে নদীপাড় হয়ে সাইফুলকে নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হন বরযাত্রী। সেখানে শেষ হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
আলাপকালে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দাদির মানত রাখতে এইভাবে বিয়ের আয়োজন করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আত্মীয়-স্বজন সবাইকে নিয়ে খুবই আনন্দ হয়েছে। আর পালাতে চড়ে বিয়ে করা শুধু শুনেছি, এবার নিজে সেই আনন্দ উপভোগ করলাম।’
সাইফুলের মা খোদেজা বেওয়া বলেন, ‘আমার শাশুড়ি বেঁচে থাকতে এই মানত করেছিলেন। তিনি মৃত্যুর আগে আমাকে বলে যান, ছেলের নাম সাইফুল থাকবে। আর যেভাবে মানত করেছি সব ঠিকমতো পালন করবে। তার সেই মানত আমি পূরণ করলাম। আল্লাহ আমাদের ভালো রেখেছেন, সন্তানদের সুস্থ রেখেছেন। আমরা খুব খুশি।’
বিয়ের কনে মায়া খাতুন বলেন, ‘আমি শুনেছি দাদির মানত রাখতে এভাবে বিয়ের আয়োজন করেছেন তাঁরা। আমাদের বাড়িতেও আনন্দ উৎসব হয়েছে। আমরা খুব খুশি। সবাই দোয়া করবেন যে আমরা সুখী হতে পারি, শ্বশুরবাড়ির সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে পারি।’
সাইফুল ইসলামের শ্বশুর বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘এভাবে আনন্দ-উৎসবে আমার মেয়ের বিয়ে হওয়ায় খুশি সবাই। পালকিতে বিয়ে করতে আসায় গ্রামের মানুষ দেখতে আসেন। বাবা হিসেবে সবার দোয়া চাই যেন মেয়েটা সুখী হয়।’
একে একে মারা যায় আটটি সন্তান। পাগলপ্রায় হয়ে যান মা। এরপর দাদি আল্লাহর কাছে মানত করেন—কোনো নাতি বেঁচে থাকলে বিয়ের সময় একটি গরুর গলায় সোনা-রুপা বেঁধে ছেড়ে দেওয়া হবে। গাওয়া হবে ‘মাদারের’ তিন পালা গান। একটি খাসি জবাই করে বরযাত্রীকে খাওয়ানো হবে আর পালকিতে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে বিয়ে দেওয়া হবে।
দাদির মানত রেখে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে বিয়ে করছেন সাইফুল ইসলাম (৩২)। তিনি পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা নদীপাড়া গ্রামের মৃত খাদেমুল ইসলাম ও খোদেজা বেওয়া দম্পতির ছেলে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় সাইফুল ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনে (এসএফডিএফ) চাকরি করেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। টানা পাঁচ দিনব্যাপী এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলে। এলাকাবাসীর মধ্যেও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল। পালাতে চড়ে বর সাইফুল যখন কনের বাড়িতে গেলেন তখন শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমায় একনজর দেখতে।
সরেজমিনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাইফুল ইসলামের বাবা খাদেমুল ইসলাম ছিলেন ব্যবসায়ী। মা খোদেজা বেওয়া গৃহিণী। খোদেজা বেওয়া বিয়ের পর একে একে জন্ম দেন ৮ সন্তান। কিন্তু জন্মের ৩ থেকে ৫ বছর বয়সে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে সব সন্তানই মারা যায়। একটা সন্তানের আশায় পাগলপ্রায় হয়ে পড়েন খোদেজা বেওয়া। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে পুরো পরিবার।
এরপর খোদেজা বেওয়ার শাশুড়ি ময়না খাতুন পাশের নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে জানতে পারেন সেখানকার শীতলী চরলালি মসজিদে ভেজা কাপড়ে গিয়ে আল্লাহর কাছে মানত করলে মনোবাসনা পূরণ হয়। মসজিদটি একরাতে গড়ে ওঠে বলে কথা প্রচলিত রয়েছে।
লোকমুখে শুনে ময়না খাতুন ভেজা কাপড়ে ওই মসজিদে গিয়ে দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে বলেন, ‘যদি ছেলে বউয়ের কোনো সন্তান হয় এবং বেঁচে থাকে তবে সেই সন্তানের বিয়ের সময় সোনা-রুপার আংটি দিয়ে মোড়ানো লাল কাপড় গরুর গলায় বেঁধে গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে হবে মাদারের তিন পালা গান (আঞ্চলিক গান) এবং পালাতে চড়িয়ে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে বিয়ে করানো হবে সেই সন্তানকে।
এর কিছুদিনের মধ্যেই সাইফুল ইসলামের জন্ম হয়। শুধু সাইফুলই নয়, তার মা খোদেজা বেওয়ার কোল আলো করে পর পর জন্ম নেয় আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে। পরিবারে বইতে থাকে খুশির বন্যা। এর মধ্যে কেটে গেছে ৩২ বছর। পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন সাইফুলের দাদি ময়না খাতুন ও বাবা খাদেমুল ইসলাম। অবশেষে দাদির সেই ‘মানত’ রাখতেই নানা আয়োজনের মধ্যে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন সাইফুল ইসলাম। কনে একই উপজেলার বরদানগর মরশিন্দা গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়ার মেয়ে মায়া খাতুন।
এ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী চলে মাদারের (আঞ্চলিক গান) পালা গান। চলে খাওয়া দাওয়া। শুক্রবার বিকেলে বিয়ে করতে যাওয়ার আগে সাইফুল ও তার মা খোদেজা বেওয়া সোনা-রুপার আংটি দিয়ে মোড়ানো লাল কাপড় একটি গরুর গলায় বেঁধে ছেড়ে দেন। বরযাত্রীদের খাসির মাংস দিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করা হয়। এরপর পালকিতে চড়ে বাদ্য-বাজনাসহ পুরো গ্রাম ঘুরে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে যান সাইফুল। পাড়া প্রতিবেশীরাও হই-হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন। গ্রাম জুড়ে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার দিকে নদীপাড় হয়ে সাইফুলকে নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হন বরযাত্রী। সেখানে শেষ হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
আলাপকালে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দাদির মানত রাখতে এইভাবে বিয়ের আয়োজন করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আত্মীয়-স্বজন সবাইকে নিয়ে খুবই আনন্দ হয়েছে। আর পালাতে চড়ে বিয়ে করা শুধু শুনেছি, এবার নিজে সেই আনন্দ উপভোগ করলাম।’
সাইফুলের মা খোদেজা বেওয়া বলেন, ‘আমার শাশুড়ি বেঁচে থাকতে এই মানত করেছিলেন। তিনি মৃত্যুর আগে আমাকে বলে যান, ছেলের নাম সাইফুল থাকবে। আর যেভাবে মানত করেছি সব ঠিকমতো পালন করবে। তার সেই মানত আমি পূরণ করলাম। আল্লাহ আমাদের ভালো রেখেছেন, সন্তানদের সুস্থ রেখেছেন। আমরা খুব খুশি।’
বিয়ের কনে মায়া খাতুন বলেন, ‘আমি শুনেছি দাদির মানত রাখতে এভাবে বিয়ের আয়োজন করেছেন তাঁরা। আমাদের বাড়িতেও আনন্দ উৎসব হয়েছে। আমরা খুব খুশি। সবাই দোয়া করবেন যে আমরা সুখী হতে পারি, শ্বশুরবাড়ির সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে পারি।’
সাইফুল ইসলামের শ্বশুর বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘এভাবে আনন্দ-উৎসবে আমার মেয়ের বিয়ে হওয়ায় খুশি সবাই। পালকিতে বিয়ে করতে আসায় গ্রামের মানুষ দেখতে আসেন। বাবা হিসেবে সবার দোয়া চাই যেন মেয়েটা সুখী হয়।’
নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী নাজির ইকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন এক নারী। গতকাল সোমবার (২৩ জুন) ভুক্তভোগী ওই নারী নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন। আদালত মাধবদী থানাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী খন্দকার
১৭ মিনিট আগেরাজশাহীর তানোর উপজেলার শতবর্ষী গোকুল-মথুরা খেলার মাঠ রক্ষায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৩ জনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
২১ মিনিট আগে২০২৫ সালের এইচএসসি, এইচএসসি (ভোকেশনাল), এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), ডিপ্লোমা ইন কমার্স ও আলিম পরীক্ষা ২৬ জুন সকাল ১০টা থেকে ঢাকা মহানগরীর ৮৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করাসহ ঢাকা মহানগরের সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক রাখতে নগরবাসী
২৩ মিনিট আগেবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহা. মাহমুদুল হক দাবি করেছেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পরিকল্পিতভাবে একটি সংঘবদ্ধ চক্র মামলা করেছে।
৩০ মিনিট আগে