Ajker Patrika

ভারতে অনুপ্রবেশের পর স্থানীয়দের গণপিটুনিতে শেরপুরের যুবক নিহত

শেরপুর প্রতিনিধি
আকরাম হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আকরাম হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের গণপিটুনিতে বাংলাদেশি এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর নাম আকরাম হোসেন (৩০)। তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বাঁকাকুড়া গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে।

গত সোমবার বিকেলে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিলস জেলার খনজয় কৈথাকোণা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। তবে ঘটনাটি আজ বুধবার আকরামের পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে। সেখানে বাড়িঘরে হামলা ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ।

জানা গেছে, আকরাম হোসেনসহ আটজন বাংলাদেশি ব্যক্তি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেন।

ঝিনাইগাতীর বাঁকাকুড়া এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মুসা মিয়া দুপুরে জানান, আকরাম হোসেন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নিয়মিত বসবাস করেননি। তিনি কীভাবে কার কার সঙ্গে ভারতে গিয়েছেন, তা তাঁর স্বজনেরাও জানেন না। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজন লাশ দেশে ফেরানোর জন্য স্থানীয় বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

আকরামের বড় ভাই শেখ ফরিদ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা আকরামের মৃত্যুর খবর জানতে পারি। তবে কীভাবে সে ভারতে গেল, সে বিষয়ে কিছুই জানি না। তার লাশ ফেরত আনার জন্য আমরা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’

ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন ৩৯ বিজিবির আওতাধীন নকশী বিওপির সুবেদার আব্দুল লতিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, ৯ আগস্ট মধ্যরাতে আকরামসহ আটজন বাংলাদেশি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসি হিলস জেলার রোংদাংগাই গ্রামে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেন। পরে ওই গ্রামের এক বাসিন্দাকে অপহরণের চেষ্টা এবং বাড়িঘরে হামলার অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশি পুলিশ কনস্টেবল পরিচয়দানকারী জামালপুরের মারুফুর রহমান (৩২), জামালপুর সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম (২৫), নারায়ণগঞ্জের সায়েম হোসেন (৩০), কুমিল্লার মেহফুজ রহমান (৩৫) ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের মোবারক হোসেন (৩২)।

এদিকে গতকাল সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মহেশখোলা সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খনজয় কৈঠাকোনা গ্রামের একটি বন থেকে আকরামকে আটক করে পিটুনি দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে আহত অবস্থায় তাঁকে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে তাঁকে স্থানীয় মহেশখোলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আকরাম।

এসব প্রতিবেদনে পুলিশ জানিয়েছে, আকরামসহ অন্যদের অনুপ্রবেশ ও অপহরণের চেষ্টার সন্দেহে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় এখনো স্থানীয় কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি। ভারতের খাসি হিলস জেলার পুলিশ সুপার বানরাপলাং জিরওয়া স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি রিভলভার, পরিচয়পত্র, তিনটি ওয়্যারলেস সেট ও একটি ম্যাগাজিন জব্দ করা হয়েছে। আটক বাংলাদেশিদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকরাম হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল-আমীন বলেন, ভারতে নিহত আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

অস্থিরতার সামান্য ইঙ্গিত পেলেই আমরা চলে যাব

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত