Ajker Patrika

ননদ-ভাবির দ্বন্দ্বে ক্লিনিকে তালা

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০: ১৬
পারিবারিক বিরোধের জেরে বিষখালী কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পারিবারিক বিরোধের জেরে বিষখালী কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পারিবারিক বিরোধের জেরে বিষখালী কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা দিয়েছেন দীপা বালা দাস (৪০) নামের এক নারী। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। এতে ক্লিনিকের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে উপজেলার বিষখালী এলাকায় সিএইচসিপি সোমা রানী দাসের বাবা মৃত সুনীল কুমার দাসের জমিতে বিষখালী কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। তখন সুনীল কুমার দাসের ছোট ছেলে জগবন্ধু দাস ক্লিনিকের অনুকূলে দলিল করে দেন। এত দিন সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু গত জানুয়ারি মাস থেকে জগবন্ধুর মেজ ভাই বাদল দাস ও তাঁর স্ত্রী দীপা বালা দাস ক্লিনিকের জমি দাবি করতে থাকেন। সোমা রানী দাসকে ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেন।

এদিকে ১১ ফেব্রুয়ারি দীপা বালা দাস কমিউনিটি ক্লিনিকে এসে ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) সোমা রানী দাসকে গালমন্দ করেন। তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো সুরাহা হয়নি। এসব কারণে ওই সিএইচসিপি নিয়মিত ক্লিনিকে আসতে পারেন না।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্লিনিকের প্রধান গেটে এবং ভবনের দরজায় তালা লাগানো। ভবন থেকে কয়েক শ গজ দূরে একটি কাঠের বেঞ্চে বসে ক্লিনিক খোলার জন্য অপেক্ষা করছেন সুইটি বেগম নামের এক নারী। তিনি বলেন, প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে ১০টার দিকে এসেছি। এখনো ক্লিনিক খোলেনি। অপেক্ষায় আছি ডাক্তারের (সিএইচসিপি)।

জানতে চাইলে সোমা রানী দাস বলেন, ‘আমার ছোট ভাই জগবন্ধু ক্লিনিকের অনুকূলে জমি দলিল করে দিয়েছে। মেজ ভাই বাদল দাস ও তার স্ত্রী যদি জমি পায়, তাহলে আমার বাবার আরও জমি আছে, আমিও বাবার জমি পাব, আমার মা পাবেন, আমার বড় ভাই পাবেন। সেই জমি আমার মেজ ভাইকে দেব। কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাকে হয়রানি করা। আমাকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়া। আমার ভাইয়ের স্ত্রী ক্লিনিকে এসে আমাকে মারধর করার চেষ্টা করে। লাঠি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে আমাকে মারার জন্য। এসব কারণে আমি গত দুই সপ্তাহ নিয়মিত ক্লিনিকে যেতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী সমাধান করার চেষ্টা করলেও কোনো কাজ হয়নি। আমি শান্তিতে চাকরি করতে চাই।’

পারিবারিক বিরোধের জেরে বিষখালী কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পারিবারিক বিরোধের জেরে বিষখালী কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয়দের নিয়ে গঠিত কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাধন চক্রবর্তী বলেন, ‘দীপা বালা দাস ক্লিনিকে তালা দিয়েছেন। সিএইচসিপি সোমা রানী দাসকে মারধরেরও চেষ্টা করেছেন। বিষয়টি আমরা পুলিশ এবং স্বাস্থ্য ও উপজেলা পরিবারের পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি; কিন্তু এখনো কোনো সমাধান হয়নি।

এসব বিষয়ে জানতে দীপা বালা দাস ও তাঁর স্বামী বাদল দাসকে ফোন করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি। মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষখালী ক্লিনিকের জটিলতার বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। স্থানীয়দের নিয়ে গঠিত কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার যে কমিটি রয়েছে, তাদের দীপা বালা দাসকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে বলা হয়েছে। পুরো বিষয়টি পারিবারিক। এসব কারণে সিএইচসিপিকে আদালতে মামলা দিতে বলা হয়েছে। তিনি মামলা দিলে আমরা তাঁকে সহযোগিতা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত