Ajker Patrika

ভেড়ামারায় আ. লীগ নেতাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
ভেড়ামারায় আ. লীগ নেতাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ইনতাজ আলী (৪৭) নামের এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকে তাঁর প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার রাতে তিনি হামলার শিকার হন। পরে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। 

এ ঘটনায় নিহতের চাচাতো ভাই ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩–৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। নিহত ইনতাজ আলী উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহিষাডোরা গ্রামের মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে। 

আসামিরা হলেন—মহিষাডোরা গ্রামের নাজিম (৫২), সাবোত (৫৪), সবুজ (২৯), ইনসান (৫৪), ইজামদ্দীন (৪৭), জলিল (৪০), করিম (৩৮), রাহাজ উদ্দীন (৫৫), ফারুক (৩৪), রাজিব (৩০), আনার (৪৪), রাকিব (২২), নাদের জোয়ার্দার, (৫৫), শিশির (২৫), ভাদু ড্রাইভার (৫২), আরিফ (৩৬) মিজানুর (৩৮)। এ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৩–৪ জন। 

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে নাজিম ও সাবোতের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সশস্ত্র দল শনিবার রাত ৯টায় ইনতাজ আলীকে বাড়ির সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায়।

এরপর দাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় রাজশাহী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, ধরমপুর ইউনিয়নে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক ইনতাজ আলীর সঙ্গে প্রতিপক্ষের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। গত শনিবার রাত ৯টার দিকে তিনি বাড়ির সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেল থেকে জোর করে নামিয়ে প্রতিপক্ষরা তাকে ধরে মহিষাডোরা গ্রামের আনজের হাজীর মহিষডোরায় মার্কেটের পেছনে নিয়ে যায়। এ সময় তাঁর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষরা ইনতাজ আলীকে হাতুড়ি, রড, কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে ইনতাজের ছেলে শাকিল ও ফুপাতো ভাই ইউনুছকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইনতাজ আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় তার মৃত্যু হয়। 

নিহত ইনতাজ আলীর চাচাতো ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, ‘জমিজমা সংক্রান্ত ও পূর্বের বিরোধ শুধু নয়, এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত রয়েছে। আসামিরা আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করছে। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এই হত্যার পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’ 

ধরমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহাবুল ইসলাম লালু বলেন, ‘ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইনতাজ আলী দলের জন্য নিবেদিত ছিলেন। এলাকার নব্য যুবলীগের নেতা কর্মীরা শনিবারে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। রোববার রাতে রাজশাহী হাসপাতালে সে মারা যায়। এসব অভিযুক্ত ক্যাডার বাহিনীর শাস্তি না হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’ 

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা গ্রাম থেকে পালিয়েছেন। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত