Ajker Patrika

কর্মী সংকটে মহিষ রুগ্‌ন হচ্ছে প্রজনন খামারে

  • সঠিকভাবে খাবার ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা করতে না পারায় স্থবিরতা।
  • ৫২টি শূন্য পদ থাকলেও আছেন মাত্র ১৩ জন।
  • সরাসরি মহিষ পরিচর্যার জন্য ৩৮টি চতুর্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে আছেন মাত্র চারজন।
  • সম্প্রতি খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা যায় ২০ মহিষ।
আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট) 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাংলাদেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারটি দীর্ঘদিন ধরে লোকবল সংকটে ভুগছে। মাত্র ১০ শতাংশ (মহিষ অ্যাটেনডেন্ট) জনবল দিয়ে খামারের প্রায় ৫০০ মহিষের খাবার ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে না পেরে তৈরি হয়েছে স্থবিরতা।

এদিকে সংকটের কারণে মহিষের রুগ্‌ণতা ও মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে, যা দেশের দুগ্ধ ও মাংস উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

জানা গেছে, ফকিরহাটের পিলজংগ এলাকায় ৯৫ একর জমির ওপর ১৯৮৪-৮৫ সালে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে খামারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে ১১১টি মহিষ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪২৫টি মহিষ রয়েছে। খামার পরিচালনার জন্য মোট ৫২টি শূন্য পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র ১৩ জন কর্মী রয়েছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় শ্রেণির ১৪টি পদের বিপরীতে মাত্র ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী দাপ্তরিক কাজ সামলাচ্ছেন, এর মধ্যে কয়েকজন শিগগিরই অবসরে যাবেন।

এ ছাড়া মহিষের সরাসরি পরিচর্যার জন্য ৩৮টি চতুর্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে মাত্র চারজন কর্মী কাজ করছেন। এর মধ্যে দুইজন সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকায় মাত্র দুইজন মহিষ অ্যাটেনডেন্ট বিশাল খামারের সব কাজ পরিচালনা করছেন। ফলে দৈনিক ৫-৬ হাজার কেজি ঘাস কাটা, দানাদার খাদ্য প্রস্তুত, খড় কাটাসহ অন্যান্য কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এই খামারের ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ২০টি মহিষ মারা যায়, যা সংকটের ভয়াবহতা তুলে ধরছে। এমন চলতে থাকলে খামারটি অচলাবস্থার মধ্যে পড়তে পারে।

এদিকে জনবল সংকটে খামারে হিট ডিটেকশন পর্যবেক্ষণ ঠিকমতো না হওয়ায় মহিষের গর্ভধারণের হার কমে গেছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রজনন ও দুধ উৎপাদনে। আবার কর্মীর অভাবে দুধ সংগ্রহ ও বিতরণে বিলম্ব হওয়ায় স্থানীয় ভোক্তারা প্রায়ই বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন কর্মীদের সঙ্গে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।

এ সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে যখন মূল অফিস থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নতুন শেডে মহিষগুলো স্থানান্তর করার পর। ফলে মহিষের নানা অসুস্থতা, রোগ-ব্যাধির খোঁজখবরসহ বিভিন্ন ধরনের তদারকিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘ ৩৮ বছরেও কোনো ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি হয়নি খামারটিতে, যা মহিষের স্বাস্থ্যসেবায় বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানতে চাইলে মহিষ খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক শেখ আল মামুন জানান, বর্তমানে ২০৩টি গাভি, ২১২টি বাছুর ও ১০টি ষাঁড় রয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য থাকলেও কর্মী সংকটের কারণে তা সঠিকভাবে পরিবেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই বৃহৎ খামার পরিচালনার জন্য চতুর্থ শ্রেণির অন্তত ৯০ জন মহিষ অ্যাটেনডেন্ট কর্মী প্রয়োজন। অথচ আছে চারজন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, ‘মহিষ খামারে প্রকল্প শেষ হওয়ায় জনবল সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শূন্য পদে নিয়োগ দীর্ঘ সময়ের বিষয়। আমরা আউট সোর্সিং কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত