Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ২ কর্মী নিহত, দাবি বিএনপির

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১৭: ৩৭
কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ২ কর্মী নিহত, দাবি বিএনপির

তিন দিনের অবরোধের প্রথম দিন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দলের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি। তবে তাঁদের মধ্যে একজনের শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে চিকিৎসক জানিয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম আজকের পত্রিকাকে জানান, নিহতদের মধ্যে ছয়সুতি ইউনিয়নের কাওসারের ছেলে রেফায়েত উল্লাহ (২০) ছাত্রদলের স্থানীয় নেতা ও বিল্লাল মিয়া (৩০) একই ইউনিয়নের কৃষক দল সভাপতি।

আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ছয়সূতি ইউনিয়নের ছয়সূতি বাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে দুপক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এসেছে। বিএনপির অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। আর পুলিশের দাবি, টহলের সময় হঠাৎ বিএনপি নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়।

কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল মিল্লাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের মিছিল ছিল খুবই শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ নির্বিচার গুলি ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে রেফায়েত ও বিল্লাল নামে আমাদের দুইজন নেতা মারা যান।’

তবে চিকিৎসকদের তথ্য অনুযায়ী, শুধু রিফাত গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বিল্লাল মিয়ার গায়ে গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকের অবরোধে আমরা দুজন রোগী পাই। দুজনের মধ্যে একজন মারা গেছেন আর একজনকে ভর্তি করা হয়েছে। যিনি মারা গেছেন, তাঁর নাম বিল্লাল। তার গলায় ক্ষত পাওয়া গেছে। নিহতের গলায় আঘাতের যে চিহ্ন, তা ধারালো কিছু দিয়ে করা।’

আর রিফাতের মরদেহ আছে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই হাসপাতালের এডিশনাল চিফ অব ওয়ার্ড মাস্টার রুকুনুজ্জামান বলেন, রিফাতের শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধের মধ্যে সকালে ছয়সূতি বাজার এলাকায় টহল পুলিশ সদস্যরা পৌঁছালে বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বাঁধে। তাঁরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাবার বুলেট ছুড়ে। 

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। ছবিটি মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে তোলা। ওসিসহ ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন জানিয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘পুলিশকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করা হয়েছে। পুলিশ তাদের জীবন রক্ষার্থে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মৃত বিল্লালের সুরতহাল প্রতিবেদনে তার যে ইনজুরি দেখা গিয়েছে, তাতে প্রতীয়মান হয় এটি কোনো গুলির ইনজুরি নয়। অর্ন্তঘাতমূলক কোনো কিছু হতে পারে। বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।’

এদিকে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় পিকেটাররা। এ সময় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ককটেলও নিক্ষেপ করে বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা। জানা গেছে, এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানার একটি গাড়িতেও হামলা চালায় পিকেটাররা। 

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশের একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলায় উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত