Ajker Patrika

মাদারীপুরের রাজৈর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জরাজীর্ণ, নেই খোলার তোড়জোড়

প্রতিনিধি, রাজৈর (মাদারীপুর) 
মাদারীপুরের রাজৈর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জরাজীর্ণ, নেই খোলার তোড়জোড়

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলার ঘোষণা দিলেও মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই তেমন কোন প্রস্তুতি। প্রায় ১৮ মাস পর স্কুল খোলার তারিখ নির্ধারিত হলেও যেন এখনো হুঁশ ফেরেনি স্কুল কর্তৃপক্ষের। স্কুলগুলো পড়ে আছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। মাঠে ঘাস বড় হয়ে আছে; শ্রেণিকক্ষগুলোতে জমে আছে বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের ১৩১ নম্বর বাথানবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সবদিকে পানি। সড়ক থেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য কোন রাস্তা বা সাঁকো নেই। সাঁতরে ভেতরে ঢুকে দেখা যায় ভুতুড়ে অবস্থা। স্কুল মাঠটিও রয়েছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর এ পর্যন্ত কোন শিক্ষক বা শিক্ষার্থী এই স্কুলে এসেছে, এমন কোন চিহ্ন নেই। এলাকাবাসী বলছেন, এখানে কিশোরেরা মাদক গ্রহণ করতে এখানে আসে, একাধিকবার চুরিও হয়েছে। স্কুলের জানালার ফাঁকা দিয়ে স্কুলের মধ্যে দেখা যায়, ময়লা আবর্জনার স্তূপ। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চে ময়লার স্তূপ জমেছে। 

এ ছাড়া পাশের এলাকায় থাকা চিকনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দেখা গেছে পাটখড়ির স্তূপ। খালি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ খালিয়া বাথানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি বিদ্যালয়ের চিত্রও প্রায় একই রকম। 

তাপস নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুল বন্ধ হওয়ার পর থেকে আমরা স্কুলে আসি না। তবে স্কুলের আশপাশ দিয়ে আমরা চলাচল করি। আমাদের বাসায় গিয়ে আমাদের ম্যাডামেরা অনেক সময় আমাদের পড়া দেয় এবং পড়া নেয়। 

বাথানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দীপ মণ্ডল বলেন, আমাদের স্কুল বন্ধ হওয়ার জন্য কোন কাজ কাম নাই। আর স্কুলে আসি না। তাই মাঝে মধ্যে আখ বিক্রি করি। কিছু টাকা পাই। 

শ্রেণিকক্ষে ধূলার স্তূপবাথানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সন্ধ্যা রানী বলেন, আমাদের স্কুলে এখনো ওয়াশ ব্লোকিং এর কাজ চলছে। দুয়েক দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তখন স্কুল সম্পূর্ণ প্রস্তুত হবে। সাঁকোর বিষয়ে তিনি বলেন, স্কুলে কিছু ছেলে মেয়েদের আড্ডা হয় বলে সবাই বলছে আমি যেন এখনই সাঁকোটা না দেই। স্কুল খোলার দু-এক দিন আগে দিয়ে দেব। 

চিকনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র বাড়ৈ বলেন, শুনেছি ১২ তারিখ থেকেই স্কুল খুলবে। তাই আমি প্রতিদিন স্কুলে যাই। শিক্ষকেরাও প্রায় আসে। স্কুল খোলার জন্য এখনো স্কুলের মাঠ ও স্কুল পরিষ্কার করা হয়নি। তবে এই সময়ের মধ্যে আমরা সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নেব, যেহেতু কয়েকদিন এখনো সময় আছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী বলেন, দক্ষিণ খালিয়া বাথানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করোনার জন্য বন্ধ হওয়ায় পর থেকে তেমন কোন শিক্ষক এখানে আসেনি। এখানের খোঁজ খবরও কেউ নেয়নি। তবে কয়েকদিন ধরে আসছে। শুনছি স্কুল খুলবে তাই। তবে, স্কুল খুললে তো স্কুল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে, তা এখনো কেউ করেনি। 

খালিয়া সেন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুবল চন্দ্র মণ্ডল বলেন, আমাদের স্কুল প্রস্তুত আছে। স্কুল খুললে শিক্ষকেরা সঠিকভাবে ক্লাস করাতে পারবে। আমরা কয়েক দিন আগে স্কুল পরিষ্কার করিয়েছি। এ ছাড়া যদি আরও পরিষ্কার করা লাগে তাহলে আমরা তা করব। 

রাজৈর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার, খালিয়া ক্লাস্টার উত্তম কুমার সরকার বলেন, আমাদের প্রস্তুতি আছে; কোন সমস্যা নেই। স্কুল খুললে আমরা সঠিকভাবে ক্লাস শুরু করতে পারব। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইপিএলে চাহালের রেকর্ড হ্যাটট্রিকের রাতে রহস্যময় পোস্ট এই নারীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত