Ajker Patrika

স্কুলছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা: ৩ যুবককে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ, মাইক্রোবাসে আগুন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৮: ৪৩
স্কুলছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা: ৩ যুবককে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ, মাইক্রোবাসে আগুন

ফরিদপুরে অস্ত্রের মুখে এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ চেষ্টার সময় তিন ব্যক্তিকে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করেছে সহপাঠী ও স্থানীয়রা। এ সময় তাঁদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আজ সোমবার সকালে ফরিদপুর শহরতলির কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশনসংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশে সোপর্দ করা তিন ব্যক্তি হলেন মামুন মিয়া, সাদ্দাম হোসেন ও আলমগীর হোসেন। তাঁদের মধ্যে দুজন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ সময় বিধান পোদ্দার নামে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী পালিয়ে যান বলে পুলিশ জানায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিধান পোদ্দার দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুল শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার ওই ছাত্রী এসএসসির মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে স্কুলে যাচ্ছিল। মাইক্রোবাস নিয়ে স্কুলের পাশেই অবস্থান করছিলেন বিধানসহ তিন-চার যুবক। এ সময় ওই ছাত্রীকে জোর করে টেনেহিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করেন তাঁরা। ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে সহপাঠী ও স্থানীয়রা গিয়ে তাদের মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করে। পরে উপস্থিত উত্তেজিত লোকজন মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।অপহরণ চেষ্টাকারীদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘বিধান আমার মেয়েকে আগেও উত্ত্যক্ত করেছে। বিষয়টি তার মুরব্বিদের জানানোর পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কিন্তু আজ তারা আমার মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করে। আমি তাদের শাস্তি চাই।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টায় ওই মেয়েসহ চার-পাঁচজন ছাত্রী স্কুলে আসছিল। একপর্যায়ে তারা ওই ছাত্রীকে জোর করে গাড়িতে তুলতে যায়। তখন সঙ্গে থাকা তিনজন মেয়ে ও একজন ছেলে তাতে বাধা দেয়। এ সময় অপহরণকারীরা অন্য শিক্ষার্থীদের পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখায়। তখন স্থানীয়রা ধাওয়া করে ধরে তিনজনকে পিটুনি দেয়। পরে আমি ত্রিপল নাইনে কল দিলে প্রশাসনের লোকজন চলে আসে। পরে তাদের পুলিশে দেওয়া হয়।’

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমি ১৪-১৫ বছর ধরে এই স্কুলে আছি। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা কখনো ঘটতে দেখিনি। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ভবিষ্যতে আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকে।’

ঘটনার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে যান প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু। তিনি এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে নিয়মিত পুলিশ টহলের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীকাল জরুরি সভা ডেকেছি। সে সভা থেকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ওই ছাত্রীর অভিভাবককে নিয়ে থানায় মামলা করব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের একটি টিম সেখানে গিয়ে তিনজনকে থানায় নিয়ে আসে। এর মধ্যে মারধরের শিকার দুজন পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত মেয়ের পরিবার থেকে থানায় কোনো অভিযোগ জানানো হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত