Ajker Patrika

চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার মামলা করলেন ফরিদপুরের সেই অধ্যক্ষ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ২৬
চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার মামলা করলেন ফরিদপুরের সেই অধ্যক্ষ

ফরিদপুরে হাতুড়িপেটার পর জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নেওয়ার ঘটনায় আলোচিত সেই অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কলেজের পাশের বাসিন্দা যদুনন্দী এলাকার মো. কাইয়ুম মোল্যাকে। 

এ ছাড়া স্থানীয় কামরুল গাজী, লালন, মনির ও মিয়াসহ ৯ জনকে আসামি হয়েছেন। তবে এ মামলায় কোনো কলেজের শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়নি।

ঘটনার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সালথা থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ওই শিক্ষক। তিনি উপজেলার যদুনন্দী এলাকায় অবস্থিত নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। এদিন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নির্দেশে তাঁকে হাতুড়িপেটা করে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই নেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাঁর। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে। সেখানে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আসামিরা বিভিন্ন সময় এই অধ্যক্ষের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজে প্রবেশের সময় অধ্যক্ষের গতিরোধ করে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অধ্যক্ষ অস্বীকৃতি জানালে আসামি কাইয়ুম মোল্যা অধ্যক্ষকে বলেন, ‘চাঁদা যখন দিবি না আজ তোকে কলেজ থেকে জোর করে রিজাইন দিয়ে দেব।’ এরপর অন্য আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে অধ্যক্ষ হাতুড়িপেটা করে বলে উল্লেখ করা হয়। এ সময় তাঁর ছেলেকেও মারধর করা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করেন। 

এজাহারে অধ্যক্ষ আরও উল্লেখ করেন, মারধর শেষে আসামিরা অধ্যক্ষ এবং তাঁর ছেলেকে কলেজের লাইব্রেরিতে ঢুকিয়ে আটক করে রাখে। এ সময় আসামিরা তাঁদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। কাইয়ুম মোল্যা অধ্যক্ষের গলায় ধারালো অস্ত্র রামদা ঠেকিয়ে জোরপূর্বক রিজাইন লেটারের সই করান বলে উল্লেখ করেন। 

এ বিষয়ে শিক্ষক মো. ওবায়দুর রহমান বলেন বলেন, ‘আমাকে হাতুড়িপেটা করে আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে সই নেয় কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। এতে নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় প্রভাবশালী কাইয়ুম মোল্যা, কামরুল গাজী ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী। আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্রে সই করিনি। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিতে তাদের নামে মামলা করেছি। আশা করি ন্যায়বিচার পাব।’ 

তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের দোষ নেই এখানে। ছাত্রদের ব্যবহার করেছে ওই নেতারা। তাই ছাত্রদের আমি হয়রানি করতে চাই না।’

তবে মামলার প্রধান আসামি কাইয়ুম মোল্যা বলেন, ‘এলাকায় দুটি গ্রুপ থাকায় আমার সমর্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করতেন অধ্যক্ষ। এ জন্য শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এখানে আমি কোনোভাবেই জড়িত না।’

এলাকাবাসী জানান, অভিযুক্ত কাইয়ুম মোল্যা ও কামরুল গাজী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। কোনো দলীয় পদ না থাকলেও আওয়ামী লীগের হয়ে যদুনন্দী এলাকার একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন তাঁরা। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন কাইয়ুম ও কামরুল নিজেদের বিএনপি সমর্থক দাবি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকটি বসতঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করেন। তা ছাড়া স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কলেজের সব বিষয় তাঁরা নাক গলান। 

ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, ‘ঘটনার পর আমি কলেজে গিয়েছিলাম। সব বিষয় খোঁজখবর নিয়েছি। অধ্যক্ষের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত