নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানী ঢাকার আইডিয়াল কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগে পড়ত খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ (১৬)। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। ইচ্ছে ছিল পড়ালেখা শেষে আইনজীবী হবে। তবে জুলাই আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে তার সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত বছরের ১৮ জুলাই প্রাণ দিয়েছে সাইফুল্লাহ। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে তার বাবা কামরুল হাসান তখন নিজে বাদী হয়ে মামলাও করতে পারেননি। সে জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের অপেক্ষা করতে হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর লালবাগের বাসায় আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য জানান কামরুল হাসান।
লালবাগের আমলিগোলার একটি বাসায় দুই ছেলে, এক মেয়েসহ পরিবার নিয়ে থাকতেন কামরুল হাসান। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি হোমিও চিকিৎসকও। তাঁর বড় ছেলে সাইফুল্লাহ আজিমপুরে একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে ভর্তি হয়েছিল আইডিয়াল কলেজে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাইফুল্লাহ যোগ দেয় ১৬ জুলাই। এর দুই দিন পরই পুলিশের গুলি তার প্রাণ কেড়ে নেয়।
ছেলের মৃত্যুর দিনের ঘটনা বিষয়ে কামরুল হাসান বলেন, ১৮ জুলাই সকাল থেকেই সে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে যোগ দেয়। দুপুরে বাসায় বাবার সঙ্গে খাওয়াদাওয়াও করেছে। বেলা ৩টার পর আবার বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। আজিমপুর এলাকায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে যোগ দেয়।
কামরুল হাসান জানান, একপর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া করলে বিক্ষোভকারীরা আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকায় ঢুকে যায়। পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে সেখানে গুলি করে। তখনই গুলিবিদ্ধ হয় সাইফুল্লাহ। শটগানের ৭০টি ছর্রা গুলি (ছোট ধাতব বল) তার বুক ও পেটে লাগে। এতে শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
আন্দোলনকারীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের প্রথমে বাধা দেয়। সাইফুল্লাহকে শিবির বলে আখ্যা দেয় তারা। যখন দেখা যায় সাইফুল্লাহ আর বেঁচে নেই, তখন তাদের যেতে দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন।
আন্দোলনকারীদের একজনের ফোন পেয়ে সাইফুল্লাহর বাবা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে যাওয়ার পর তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। যাওয়ার পথেই ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন কামরুল হাসান। মর্গে গিয়ে বেশ কয়েকটি লাশের মধ্য থেকে নিজের ছেলের নিথর দেহ শনাক্ত করেন তিনি। ‘একপাশে আমার ছেলের লাশটা খুঁজে পাই। তার শরীরে ৭০টি গুলির চিহ্ন ছিল। সব গুলি তার বুকে ও পেটে বিদ্ধ হয়েছিল। এতে শরীর থেকে প্রচুর রক্ত বেরিয়ে যায়’, বলেন এই শোকাতুর বাবা।
ছেলে হারানোতেই কষ্টের শেষ হয়নি কামরুল হাসানের। তাঁর লাশ বুঝে পেতেও তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। সাইফুল্লাহর বাবা বলেন, ‘১৮ তারিখ রাত থেকে হাসপাতাল থেকে থানা, থানা থেকে হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করে ছেলের মৃতদেহ হাতে পাই ২১ জুলাই বিকেলে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে সে দিন দিবাগত রাতে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। পরদিন সকালে সেখানে তাকে দাফন করা হয়।’
বড় ছেলেকে দাফনের চার দিন পর পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসেন কামরুল হাসান। তারপর পুলিশ বাদী হয়ে লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করে। কামরুল হাসান জানান, সে মামলায় বিএনপি-জামায়াতের কিছু নেতাসহ অনেককে আসামি করা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। কামরুল হাসান এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর ১৯ আগস্ট লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিমসহ ৫২ জনকে আসামি করেন তিনি। এ পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ছেলের হত্যার যথাযথ বিচার দাবি করে সাইফুল্লাহর বাবা কামরুল হাসান বলেন, ‘আর কোনো স্বৈরাচারী শাসক যেন এ দেশে না আসে। যারা এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল, তাদের বিচারটা যেন দ্রুত হয়। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়েও দেখা করে সেই দাবি জানিয়েছি। দেশের প্রচলিত আইন মেনে খুব দ্রুতই যেন বিচার পাই।’
চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি জুলাই শহীদদের নাম দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ গেজেটে তালিকার ১৯৯ নম্বরে রয়েছে খালিদ হাসান সাইফুল্লাহর নাম। জুলাই ফাউন্ডেশন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছে নিহত সাইফুল্লাহর পরিবার।
রাজধানী ঢাকার আইডিয়াল কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগে পড়ত খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ (১৬)। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। ইচ্ছে ছিল পড়ালেখা শেষে আইনজীবী হবে। তবে জুলাই আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে তার সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত বছরের ১৮ জুলাই প্রাণ দিয়েছে সাইফুল্লাহ। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে তার বাবা কামরুল হাসান তখন নিজে বাদী হয়ে মামলাও করতে পারেননি। সে জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের অপেক্ষা করতে হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর লালবাগের বাসায় আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য জানান কামরুল হাসান।
লালবাগের আমলিগোলার একটি বাসায় দুই ছেলে, এক মেয়েসহ পরিবার নিয়ে থাকতেন কামরুল হাসান। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি হোমিও চিকিৎসকও। তাঁর বড় ছেলে সাইফুল্লাহ আজিমপুরে একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে ভর্তি হয়েছিল আইডিয়াল কলেজে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাইফুল্লাহ যোগ দেয় ১৬ জুলাই। এর দুই দিন পরই পুলিশের গুলি তার প্রাণ কেড়ে নেয়।
ছেলের মৃত্যুর দিনের ঘটনা বিষয়ে কামরুল হাসান বলেন, ১৮ জুলাই সকাল থেকেই সে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে যোগ দেয়। দুপুরে বাসায় বাবার সঙ্গে খাওয়াদাওয়াও করেছে। বেলা ৩টার পর আবার বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। আজিমপুর এলাকায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে যোগ দেয়।
কামরুল হাসান জানান, একপর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া করলে বিক্ষোভকারীরা আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকায় ঢুকে যায়। পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে সেখানে গুলি করে। তখনই গুলিবিদ্ধ হয় সাইফুল্লাহ। শটগানের ৭০টি ছর্রা গুলি (ছোট ধাতব বল) তার বুক ও পেটে লাগে। এতে শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
আন্দোলনকারীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের প্রথমে বাধা দেয়। সাইফুল্লাহকে শিবির বলে আখ্যা দেয় তারা। যখন দেখা যায় সাইফুল্লাহ আর বেঁচে নেই, তখন তাদের যেতে দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন।
আন্দোলনকারীদের একজনের ফোন পেয়ে সাইফুল্লাহর বাবা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে যাওয়ার পর তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। যাওয়ার পথেই ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন কামরুল হাসান। মর্গে গিয়ে বেশ কয়েকটি লাশের মধ্য থেকে নিজের ছেলের নিথর দেহ শনাক্ত করেন তিনি। ‘একপাশে আমার ছেলের লাশটা খুঁজে পাই। তার শরীরে ৭০টি গুলির চিহ্ন ছিল। সব গুলি তার বুকে ও পেটে বিদ্ধ হয়েছিল। এতে শরীর থেকে প্রচুর রক্ত বেরিয়ে যায়’, বলেন এই শোকাতুর বাবা।
ছেলে হারানোতেই কষ্টের শেষ হয়নি কামরুল হাসানের। তাঁর লাশ বুঝে পেতেও তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। সাইফুল্লাহর বাবা বলেন, ‘১৮ তারিখ রাত থেকে হাসপাতাল থেকে থানা, থানা থেকে হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করে ছেলের মৃতদেহ হাতে পাই ২১ জুলাই বিকেলে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে সে দিন দিবাগত রাতে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। পরদিন সকালে সেখানে তাকে দাফন করা হয়।’
বড় ছেলেকে দাফনের চার দিন পর পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসেন কামরুল হাসান। তারপর পুলিশ বাদী হয়ে লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করে। কামরুল হাসান জানান, সে মামলায় বিএনপি-জামায়াতের কিছু নেতাসহ অনেককে আসামি করা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। কামরুল হাসান এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর ১৯ আগস্ট লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিমসহ ৫২ জনকে আসামি করেন তিনি। এ পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ছেলের হত্যার যথাযথ বিচার দাবি করে সাইফুল্লাহর বাবা কামরুল হাসান বলেন, ‘আর কোনো স্বৈরাচারী শাসক যেন এ দেশে না আসে। যারা এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল, তাদের বিচারটা যেন দ্রুত হয়। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়েও দেখা করে সেই দাবি জানিয়েছি। দেশের প্রচলিত আইন মেনে খুব দ্রুতই যেন বিচার পাই।’
চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি জুলাই শহীদদের নাম দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ গেজেটে তালিকার ১৯৯ নম্বরে রয়েছে খালিদ হাসান সাইফুল্লাহর নাম। জুলাই ফাউন্ডেশন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছে নিহত সাইফুল্লাহর পরিবার।
ভেজাল ওষুধ প্রদর্শন, বিপণন ও বিক্রয়ের অভিযোগে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা মজিদ স্মরণীর পাশে লাজ ফার্মাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
৯ মিনিট আগেব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় সায়মা আক্তার (১৮) নামের এক নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
২১ মিনিট আগেময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সাকির হোসেন আজ সোমবার দুপুরে কলেজে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন। পরে কলেজের চলমান সংকট উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান খান সাদি এসব কথা
২৫ মিনিট আগেশ্রীপুরে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের (২৫) মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলার বরমী ইউনিয়নের গাড়ারণ গ্রামের ময়না ডেইরি ফার্মসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবকের পরিচয় জানা যায়নি।
২৬ মিনিট আগে