Ajker Patrika

রাঙামাটিতে বিশুদ্ধ পানির সংকট, ডায়রিয়ায় আরও দুজনের মৃত্যু 

বাঘাইছড়ি (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৩, ১২: ১২
রাঙামাটিতে বিশুদ্ধ পানির সংকট, ডায়রিয়ায় আরও দুজনের মৃত্যু 

প্রচণ্ড গরম ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে ১০ দিনের ব্যবধানে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম লংথিয়ানপাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাহন ত্রিপুরা (৫৫) ও মেলাতি ত্রিপুরা (৫০) মারা গেছেন। তাঁরা উভয়ে স্বামী-স্ত্রী। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাঁদের মৃত্যু হয়।

তাঁদের বাড়ি সাজেকের বেটলিংয়ে। তারা লংথিয়ানপাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মেয়ের জামাইকে দেখতে এসেছিলেন। এর আগে গত ৭ জুন বুধবার ভোরে গবতি বালা ত্রিপুরা (৫০) ও দরুং ত্রিপুরার (৬০) মৃত্যু হয়।

এ নিয়ে গত ১৫ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাজেকে চারজন মৃত্যুবরণ করেন। লংথিয়ানপাড়া ও এর আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ আরও অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সাজেক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা জানান, গত এক মাস ধরে সাজেকের লংথিয়ানপাড়া, অরুণপাড়া, কাইজাপাড়া, রায়নাপাড়া ও শিয়ালদহ বেটলিং এলাকাসহ আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় নতুন করে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকার আশপাশে কোনো হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় তান্ত্রিক দ্বারা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এলাকায় যাতায়াতের সড়কযোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় পায়ে হেঁটে এত দূর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়।

 ৭১ টিভিতে ডায়রিয়ার খবর প্রকাশের পর ৮ জুন বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনের তিনটি মেডিকেল টিম পাঠিয়ে টানা এক সপ্তাহব্যাপী চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে গত বুধবার মেডিকেল টিম ফিরে আসে। এর মধ্যেই নতুন করে আরও দুজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হলো।

সাজেক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান, লংথিয়ানপাড়ায় চারজন মুমূর্ষু ডায়রিয়া রোগী রয়েছেন। তাঁদের অবস্থাও ভালো নয়। মূলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ছয়জন মৃত্যুবরণ করেছেন। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টিম দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার ডায়রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘সাজেকের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নেই, পাহাড়ি ছড়ার পানি পান করায় বর্ষার শুরুতে এই সমস্যা দেখা দেয়। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় চেষ্টা করছি সাজেকের দুর্গম অঞ্চলে প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা দূর করতে। এ ছাড়া সাজেকে ডায়রিয়া প্রতিরোধে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের সাহায্যে সেনাবাহিনী বিজিবি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকগণ সম্মিলিত চিকিৎসা সহায়তা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত