Ajker Patrika

ভাসানচরের ‘উন্নত’ জীবন ছেড়ে কেন ঝুঁকি নিয়ে পালাচ্ছে রোহিঙ্গা নারী-শিশু

প্রতিনিধি, সন্দীপ (চট্টগ্রাম) 
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১: ৫৫
ভাসানচরের ‘উন্নত’ জীবন ছেড়ে কেন ঝুঁকি নিয়ে পালাচ্ছে রোহিঙ্গা নারী-শিশু

নোয়াখালীর ভাসানচর দ্বীপে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মাঝেমধ্যেই পালিয়ে আসছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। তাদের মধ্যে আবার বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ঝুঁকি নিয়ে রাতের আঁধারে পালাতে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। এরই মধ্যে পুলিশের হাতে বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে। আবার কক্সবাজার ক্যাম্পেও ফিরে এসেছেন অনেকে। তবে ভাসানচর থেকে এ পর্যন্ত কত রোহিঙ্গা পালিয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।

ভাসানচরে বর্তমানে ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। কক্সবাজারের তুলনায় উন্নত বাসস্থান আর সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেই এই আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু কক্সবাজার থেকে স্থানান্তরের পর থেকেই দল বেঁধে ভাসানচর ছাড়তে শুরু করেছেন রোহিঙ্গারা।

ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ধারণা, সেখান থেকে পালানো রোহিঙ্গার সংখ্যা কয়েকশ। গত জুলাইয়ে সন্দ্বীপে আটক হওয়া রোহিঙ্গা তরুণী মিনিয়া ইমতিয়াজের সঙ্গে সম্প্রতি কথা বলা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আরও ৩০-৪০ জন ছিল। তারা কক্সবাজার পার হয়ে গেছে। বোটওয়ালা নোয়াখালীতে নামানোর কথা বলে আমাদের এখানে (সন্দ্বীপ) নামিয়ে চলে গেছে। আমরা ভাসানচর থেকে নোয়াখালীতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রতিজনে ৩০ হাজার টাকা করে দালালকে দিয়েছি। আমাদের পরিবারের সদস্যরা কুতুপালং ক্যাম্প থেকে বিকাশে দালালদের কাছে টাকা পাঠিয়েছিল।’

ভাসানচর দ্বীপে উন্নত সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও কেন পালিয়ে আসছেন, জানতে চাইলে ওই রোহিঙ্গা তরুণী বলেন, ‘পরিবার ছাড়া সেখানে থাকাটা ভীষণ কষ্টের। ভাসানচরে আমাদের অনেক সমস্যা। মা-বাবা নাই। আমরা একা ছিলাম। আমরা অনেক কষ্টে ছিলাম সেখানে। খাওয়া দাওয়ার কষ্ট ছিল।’ 

কোন রুটে, কীভাবে পালাচ্ছেন রোহিঙ্গারা

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা এবং ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত স্থানীয় মাছ ধরা ট্রলার বা ছোটখাট নৌযানে করেই পালানোর ঘটনা ঘটছে। 

কক্সবাজারে ফেরা এক নারীর বিবরণ অনুযায়ী, ভাসানচর থেকে প্রথমে লুকিয়ে মাছধরা নৌকায় তাঁরা নোয়াখালী পৌঁছান। সেখান থেকে বাসে করে চট্টগ্রাম হয়ে তাঁদের গন্তব্য ছিল কক্সবাজার। সর্বশেষ উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। ভাসানচর থেকে এই রুটে পালানোর সময় একাধিক গ্রুপ এরই মধ্যে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। 

ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসার পথে অসংলগ্ন আচরণ দেখে স্থানীয় জনগণ রোহিঙ্গাদের ধরে সন্দ্বীপ থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। 

সন্দ্বীপ থানার ওসি বশির আহমেদ খান জানান, এ রকম ঘটনা প্রায় প্রতি মাসে ঘটছে। ভাসানচর থেকে বোটে করে দালালের মাধ্যমে তাঁরা চলে আসছেন। তাঁরা সবাই কক্সবাজারে ক্যাম্পে ফেরত যেতে চান। এ ছাড়া হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই বেশ কয়েকবার রোহিঙ্গাদের আটক করা হয়েছে। 

ভাসানচরে থেকে কেন পালাচ্ছেন রোহিঙ্গারা 

উন্নত সুযোগ সুবিধার কথা বলা হলেও রোহিঙ্গাদের মধ্যে এই প্রবণতা তৈরি হলো সেটি বোঝার জন্য ভাসানচরে অবস্থানরত কয়েজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। এতে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের পাচার করতে একটি দালাল চক্র তৈরি হয়ে গেছে। তারা স্থানীয় মাছ ধরা নৌকার মাঝিদের সঙ্গে যোগসাজশে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন রুটে পালাতে সহায়তা করছে। বিদেশে যাওয়ার লোভে অনেকে পালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশ নেওয়ার নাম করে অনেক নারী-শিশুকে পাচার করে দিচ্ছে দালাল চক্র। এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ শর মতো এভাবে ভাসান চর ছেড়েছেন। বেশির ভাগই মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা জানান, ভাসানচর থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটা অংশ আয় রোজগার কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া অনেকে মা-বাবা পরিবার-পরিজন কক্সবাজারে থাকার কারণে সেখানে ফিরে যেতে চাচ্ছেন। আবার একটা শ্রেণি আছে যারা দ্বীপের মধ্যে নিজেদের বন্দী বলে মনে করছেন। 

ওই ব্যক্তি আরও জানান, কিছু লোক আছে মা-বাবা ছাড়া এখানে এসেছে। কেউ আবার বেকার, পড়াশোনা জানা কিন্তু কোনো কাজ পাচ্ছে না। এসব কারণেই তাঁরা হতাশ হয়ে পড়ছেন এবং এখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। 

ভাসানচর থানার ওসি এবং সেখানে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরাও রোহিঙ্গাদের পালানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এ পর্যন্ত কত সংখ্যক রোহিঙ্গা পালিয়েছেন সেটি সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারেননি। 

রোহিঙ্গারা যেন পালাতে না পারে, সে জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভাসানচরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। 

উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট গভীর রাতে ভাসানচর থেকে নৌকায় যোগে পালিয়ে যাওয়ার সময় নৌ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২১টি শিশুসহ ৪১ জন রোহিঙ্গা ছিল। ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়। এ পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১টিই শিশু। 

খাদ্যাভ্যাস ও শিক্ষা সংকট শিশুদের

এক রোহিঙ্গা শিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা মিয়ানমার থাকাকালীন কখনো কাঁকড়া খায়নি। কিন্তু এখানে এসে কাঁকড়া খেতে মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এখান সব খাবার খেতে পারে না। বাধ্য হয়ে খেতে হয়। 

ভাসানচরের আরেক রোহিঙ্গা শিশু বলে, মিয়ানমার থাকতে সে স্কুলে পড়ত। এখানে সে এখন একটি মক্তবে পড়াশোনা করে। ভাসানচরে প্রায় ৪ হাজার শিশু থাকলেও ১৮০টি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে। এদের বয়স ৫-১১ বছরের মধ্যে। 

বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা 

রোহিঙ্গা যুবকদের কাজ দেওয়ার নাম করে অনেকে তাদের দিয়ে অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড করাচ্ছে। গত মাসে সন্দ্বীপে এক রোহিঙ্গা যুবক আটক হয়। তাঁর ভাষ্যমতে, তিনি এবং তাঁর সঙ্গে আরও একজন চার মাস যাবত সন্দ্বীপে বসবাস করছেন। সন্দ্বীপে হাসান নামের এক যুবক তাঁদের কাজ দেওয়ার নাম করে নিয়ে আসে। তাদের দিয়ে ইয়াবা, গাঁজা এবং অস্ত্র ব্যবসা করানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ রোববার ভোররাতে তাদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

১৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিভীষণ সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার নায়েক সুবেদার আবদুল মান্নান বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাঁরা যশোর, নড়াইল, খুলনা ও মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্য ২ জন শিশু, ৯ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ আছে।

তাঁরা হলো আব্দুল খালেক (৫৫), রিয়া পলি (১৩), নাসিমা খাতুন (৩৮), ফরিদা বেগম (৪০), ফতেজা আক্তার (৩৬), আলমাস আহমেদ (৩৬), অহিদ সরকার (৩৮), নজরুল ইসলাম (৪৭) সালমা বেগম (৪০), রুনা (৩৬), ছুফিয়া বেগম (৪০), জরিনা বেগম (৩০), রাকিব (৯), পারভিন (৪৮) ও বিথি খাতুন (৯)।

আবদুল মান্নান আরও বলেন, ভোরে সীমান্তে টহলের সময় আন্তর্জাতিক পিলার ২১৯ / ৭১ আরএস হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লালমাটিয়া নামক স্থানে ওই ১৫ জনকে দেখতে পান বিজিবি সদস্যরা। এ সময় তাদের আটক করে ক্যাম্পে আনা হয়। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হয়েছে বিজিবি। তাঁদের গোমস্তাপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুশ ইনের শিকার ১৫ বাংলাদেশি নাগরিককে রহনপুর ডাকবাংলোতে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে রাখা আছে। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁদের অভিভাবকদের ডেকে এনে সত্যতা যাচাই করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ভ্যানচালক কারাগারে

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি মাদ্রাসার ১৩ বছর বয়সী ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে অভিযুক্ত ভ্যানচালক সাকিবকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর উপজেলার একটি এলাকায় ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে ভ্যানচালক সাকিবের ভ্যানে করে মাদ্রাসায় ফিরছিল। পথে ভ্যানচালক ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়। গ্রেপ্তার সাকিব হোসেন রিফাইতপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের জাফের আলীর ছেলে।

পুলিশ বলছে, ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে আজ সকালে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগার পাঠিয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাজিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
নিহত শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের বোরহোলে পড়ে দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে এই ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

লিগ্যাল নোটিশটি দেওয়া হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব; বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান; সেচ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী; তানোরের সহকারী প্রকৌশলী; রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক; তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি)।

লিগ্যাল নোটিশে শিশু সাজিদের মৃত্যুর জন্য রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি বরেন্দ্রজুড়ে থাকা শত শত পরিত্যক্ত বোরহোল বন্ধ করা এবং অবৈধ গভীর নলকূপ স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

এই লিগ্যাল নোটিশে গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকায় ‘বরেন্দ্রজুড়ে শত শত মৃত্যুকূপ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, শত শত পরিত্যক্ত ও অরক্ষিত নলকূপ জনসাধারণের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।

আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে এসব বিষয় বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে হাইকোর্ট ডিভিশনে জনস্বার্থে মামলা করা হবে।

পরিত্যক্ত বোরহোলের খোঁজ

এদিকে শিশু সাজিদের মৃত্যু এবং পরিত্যক্ত বোরহোল নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) রেজাউল আলম সরকার বিভাগের আট জেলার জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিভাগে বিএমডিএ ও বিএডিসি (সেচ) গভীর নলকূপ স্থাপন করে। অনেক ক্ষেত্রে গভীর নলকূপের পাইপের মুখটি অরক্ষিত বা উন্মুক্ত রাখা হয়। এতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দুর্ঘটনা রোধে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসকদের কাছে সংশ্লিষ্ট জেলার পাইপের মুখ অরক্ষিত বা উন্মুক্ত ঝুঁকিপূর্ণ গভীর নলকূপের তথ্য একটি ছকে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে একটি পরিত্যক্ত নলকূপের বোরহোলে পড়ে শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ব্যক্তিমালিকানায় অবৈধভাবে সেমিডিপ বসাতে এই বোরহোল করা হয়েছিল। এক বছর ধরে গর্তটি উন্মুক্ত পড়ে ছিল। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এবার প্রতারণা ও মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৮
গ্রেপ্তার তুরিন আফরোজ। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার তুরিন আফরোজ। ছবি: সংগৃহীত

একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা এবং তাঁর বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর ও মারধরের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এই নির্দেশ দেন।

তুরিন আফরোজকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার বাদী তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।

তুরিন আফরোজের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোর্শেদ হাসান শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০২২ সালে তুরিন আফরোজ ও তাঁর গাড়িচালক আমির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মনজুর আলম নাহিদ নামের একজন ব্যবসায়ী। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী মনজুর আলম নাহিদ দীর্ঘদিন ধরে ‘নাবিশা এন্টারপ্রাইজ’-এর মাধ্যমে বহুমুখী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তাঁর অন্যতম ব্যবসা হলো ভারতে তৈরি অশোক ল্যা ল্যান্ড বাস/ট্রাক আমদানি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি ও লিজ দেওয়া।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তুরিন আফরোজ তাঁর কাছ থেকে নগদে ৭৮ লাখ টাকায় দুটি বাস কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে ২০২১ সালের ১ জুলাই কিস্তির ভিত্তিতে ৭৮ লাখ টাকায় বাস দুটি ক্রয় করেন। এর মধ্যে তিনি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করলেও বাকি কিস্তির টাকা পরিশোধ থেকে বিরত থাকেন। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ মনজুর আলম নাহিদ কিস্তির টাকা পরিশোধের বিষয়ে তুরিন আফরোজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি তাঁকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়। এরপর ২ এপ্রিল আবারও টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তা উপেক্ষা করেন।

মামলায় আরও বলা হয়, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল তুরিন আফরোজের গাড়িচালক আমির হোসেন ৭–৮ জনকে সঙ্গে নিয়ে মনজুর আলম নাহিদকে হুমকি দেন। পরদিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে তুরিন আফরোজ ও আমির হোসেন ২০–২৫ জনকে নিয়ে বসুন্ধরায় মনজুর আলম নাহিদের বাসায় গিয়ে প্রায় ৩২ লাখ টাকার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন এবং তাঁকে মারধর করেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে আটক করে পুলিশ। আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় পরদিন তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পরে গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত