Ajker Patrika

শিশুর মরদেহ আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ ফাঁড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
শিশুর মরদেহ আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ ফাঁড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে

শিশুর মরদেহ আটকে রেখে পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ২০ হাজার টাকা দাবি করে ৮ হাজার টাকায় রফা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। এ অভিযোগ উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) কাঞ্চন কুমার সিংহের বিরুদ্ধে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। 

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা বলছে, গতকাল দুপুরে বাড়ির পাশে ডোবায় ডুবে পরে আরিফা আক্তার নামে ১৫ মাস বয়সী এক শিশু মারা যায়। পরে শিশুটির মা মারুফা বেগম স্থানীয়দের সহযোগিতায় মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে। বিকেলের দিকে শিশুটির মরদেহ দাফন করতে গেলে পুলিশ এসে বাধা দেয়। নিহত শিশুটির পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকলেও পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ দাফন করতে বাধা দেওয়ায় বিপাকে পড়ে নিহতের পরিবার। পরে চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে মরদেহ ময়নাতদন্ত না করে দাফন করার অনুমতি দেবেন বলে শিশুটির পরিবারকে জানায়। পরে ওই পরিবারটি আট হাজার টাকা দিয়ে মরদেহ দাফনের অনুমতি পায়। 

নিহতের চাচা মো. বোরহান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “বাজারে থেকে কাফনের কাপড় নিয়ে এসে দেখি বাড়িতে ৫ জন পুলিশ। তারা লাশের ময়নাতদন্ত করতে বলে। তখন আমরা বলি আমাদের সন্তান পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নেই। তাহলে কেন লাশ ময়নাতদন্ত করতে হবে? তখন চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহ বলেন-‘ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করা যাবে না। কিছুক্ষণ পর ওই কর্মকর্তা বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত করতে ২০ হাজার টাকা লাগে। আমাদের ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দাও তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না।’ পরে তাঁর হাতে ৮ হাজার টাকা আমি নিজ হাতে দেই। সে সময় সাবেক ইউপি সদস্য শাফি মাহমুদ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিল। ” 

অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য শাফি মাহমুদ বলেন, ‘পরিবারটি পরে আমার কাছে এসেছিল। পরিবারটি গরিব বিধায় আমি চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহকে ফোন করে বলি, পরিবারটি খুবই গরিব। আপনারাতো বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক টাকা কামান। এদের টাকাটা ফেরত দিয়ে দেন। তখন ওই কর্মকর্তা টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহের দাবি, লাশের সুরতহাল রিপোর্টের কাগজ নাসিরনগর সদরে পাঠাতে নৌকা ভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। আট হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। 

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. আনিসুর রহমান বলেন, যদি টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য হয়ে থাকে তাহলে এটি পুলিশের জন্য লজ্জার এবং খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত