Ajker Patrika

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: অনশনে অসুস্থ ৫ শিক্ষার্থী, মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ১৬: ৩৯
অনশনরত শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষক তাঁদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অনশনরত শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষক তাঁদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে ১২ জন শিক্ষার্থী গতকাল সোমবার মধ্যরাত থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। এর মধ্যে অন্তত পাঁচ শিক্ষাথী আজ মঙ্গলবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের একজনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়ার পর নিয়ে আসা হয়েছে। এদিকে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে আজ বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ক্যাম্পাসসংলগ্ন ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে দক্ষিণাঞ্চল অচল করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ দুপুর ১২টার দিকে আরও অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। তাঁরা অনশনরত শিক্ষার্থীদের পাশে এসে উপাচার্যের দ্রুত অপসারণ দাবি করেছেন।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন, ইংরেজি বিভাগের এনামুল হক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ইমন হাওলাদার ও মোহাম্মদ রায়হান, আইন বিভাগের ওয়াহিদুল ইসলাম, আবদুর রহমান ও শওকত ওসমান স্বাক্ষর, ব্যবস্থাপনা বিভাগের রবিউল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের মোকাব্বেল শেখ, বাংলা বিভাগের সাব্বির হোসেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নাজমুল ঢালি ও দর্শন বিভাগের ইফতেখার সায়েম।

তাঁদের মধ্য এনামুল, রবিউল, ইমন, ওয়াহিদুল ও স্বাক্ষর আজ দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে রবিউলকে বরিশাল মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অনশনকারী শিক্ষার্থী নাজমুল ঢালি অভিযোগ করে বলেন, ‘দীর্ঘ ২৯ দিন ধরে আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে যৌক্তিক দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও উপাচার্য বরাবর জানিয়ে আসছি। কিন্তু এই উপাচার্য আমাদের দাবিগুলো নিয়ে কোনো রকম আলোচনা কিংবা কোনো ভ্রুক্ষেপই করেননি। এ বাদেও তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে গত সাত থেকে আট মাসেও কোনো ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কিংবা প্রশাসনিক কোনো সংস্কার করেননি। বরং তিনি স্বৈরাচার আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের লাভজনক পদে আসীন করছেন এবং জুলাই আন্দোলনে সরাসরি শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান করা শিক্ষকদের স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে অপসারণ করছেন। তাঁর এই অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে আমরা এক দফা উপাচার্যের পদত্যাগের কর্মসূচি দিয়েছি। এই লক্ষ্য অতি দ্রুত পূরণের জন্য আমরা অনশন কর্মসূচিতে যাই। উপচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোস্টাল স্টাডিস অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, যৌক্তিক দাবি পূরণে ছাত্রদের এত দিন ধরে আন্দোলন করতে হচ্ছে। সরকার কেন এই ফ্যাসিস্ট উপাচার্যকে অপসারণ করছে না? আমরা শিক্ষকেরাও এখন থেকে ছাত্রদের আন্দোলনে পাশে থাকব।’

এর আগে গতকাল রাত ৯টায় ক্যাম্পাসে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনকারীরা। ওই সময়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে রাত ১২টার পরে ১২ জন প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনশন শুরু করেন। সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সুজয় শুভ জানান, তাঁরা দীর্ঘ ২৮ দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসার আগ্রহ দেখাননি। আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে তিনি গতকাল রাতে ফেসবুক লাইভে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উপাচার্যের ওই আগ্রহ আন্দোলনকারীরা প্রত্যাখান করেছেন জানিয়ে সুজয় বলেন, এক দফা দাবি উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত