Ajker Patrika

‘আমার ভুল হয়েছে, ক্ষমা করে দেন’, পিটিয়ে শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে বললেন শিক্ষিকা

পিরোজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩: ১৪
‘আমার ভুল হয়েছে, ক্ষমা করে দেন’, পিটিয়ে শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে বললেন শিক্ষিকা

পিরোজপুরে শ্রেণিকক্ষে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। তবে ওই শিক্ষিকা ‘ভুলবশত’ কাজটি করেছেন বলে বিষয়টি স্বীকার করেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

গত সোমবার এ ঘটনা ঘটেছে সদর উপজেলার ১১৩ নম্বর পূর্ব শিকদার মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা হলেন বিউটি রানী এদবর। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলার পূর্ব শিকদার মল্লিক গ্রামের বাসিন্দা। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলো মারিয়া আক্তার (৯)। সে ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। মারিয়া নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠি ইউনিয়নের উদয় তার গ্রামের মো. মামুন ব্যাপারীর মেয়ে। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার জানায়, ‘বিউটি ম্যাডাম ক্লাসে এসে আমার কাছে পড়া জিজ্ঞেস করে। আমি ম্যাডামকে ওই দিনের পড়া বলে দেই। তখন আমাদের ক্লাসের এক ছাত্রী বলে-ম্যাডাম আপনি যে পড়া দিছিলেন মারিয়া সেটা না পড়ে, কড়ি খেলছে। তাই ম্যাডাম আমাকে ডাস্টার দিয়ে পেটায়। তখন আমার হাত ভেঙে যায়।’ 

নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিতোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, মারিয়ার বাম হাতে ফ্র্যাকচার হয়েছে। তাই তাকে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়েছে। কমপক্ষে ১৪ থেকে ৩০ দিন ব্যান্ডেজ অবস্থায় রাখতে হবে। নিয়ম মেনে চললে নির্ধারিত টাইমে ঠিক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বিউটি রানী এদবর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। ভুলবশত ঘটনাটি ঘটে গেছে। আমাকে আপনারা ক্ষমা করে দেন। আর কোনো দিন এমন হবে না।’ 

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা খানম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুল ছুটির পরে আমি বাড়ি যাওয়ার পথে আমার এক শিক্ষক মোবাইলে বিষয়টি আমাকে জানান। পরে আমি ওই ম্যাডামকে ঘটনাটি জিজ্ঞেস করলে সে জানায়-শিক্ষার্থী মারিয়াকে ক্লাসের পড়া লিখতে বললে, সে লিখতে না পারায় তাকে ডাস্টার দিয়ে মার দেন। আর এতে মারিয়ার হাত ভেঙে যায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজ সকালে স্কুলে আসার পথে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজখবর নিয়ে এসেছি।’ 
 
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সবুজ কান্তিকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছি। তিনি এসে আমাকে লিখিত প্রতিবেদন দিলে, আমি ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’ 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ে আমার শিক্ষা অফিসার (এটিও) সাহেব গিয়েছিলেন। তিনি রিপোর্ট দিলে আমি দু-এক দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত