মনি হায়দার
কই যাস? পথিক থমকে দাঁড়ায়। চারদিকে তাকায়, কাউকে দেখে না কোথাও। দূরের আকাশে কালো কাক উড়ছে, ডানা মেলে।
কোন শালায় কথা কয়?
খিক খিক হাসি কানে আসে পথিকের, আমি, আমি কথা কই!
আবার ঘুরে তাকায় পথিক, দেখি না তো কাউরে। কোন শালায় কয় কথা?
ওপরের দিকে না তাকাইয়া নিচের দিকে তাকা।
পথিক নিচের দিকে তাকায়। দাঁড়িয়ে পথের ওপর পথিক, পথের বিকট মুখ, খলবল হাসে, মুখের মধ্যে রক্তের হলহলা বয়ে যায়। পথিক পথের মুখগহ্বর, দাঁতাল দাঁত আর ফেনানো লোভের চাঁদমারি দেখে হতবাক। কত জন্মজন্মান্তরের পথ, এই পথের সরু রেখার ওপর দিয়ে কত সহস্রবার হেঁটেছে, দৌড়েছে, কখনো কখনো প্রস্রাব করেছে। অনেক সময় অভিমানের খই ভাজতে ভাজতে পথের ওপর বসে থেকেছে, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দুপুরে বাড়ি ফিরেছে। পথ বুক চিতিয়ে দিয়েছে। সেই পথ আজ দাঁতাল মুখ মেলে দাঁড়িয়েছে? কী করবে? গিলবে? খেয়ে ফেলবে?
কি চাস তুই?
খাব তোরে।
কেন?
শত শত বছর ধরে তোরা আমাকে খাচ্ছিস, আমি না খেয়ে কতকাল থাকব? আমার অনেক খিদে। অনেক…
তুই তো পথ। তোর কাজ চুপচাপ শুয়ে থাকা। সহ্য করা আমাদের পদাঘাত। জগৎ সংসারে হাজার কোটি কোটি বছর ধরে এটাই হয়ে আসছে।
বুঝলাম, হাজার বছর ধরে আপনারা আমাকে পদাঘাত করবেন, আমি সহ্য করব। কিন্তু হাজার বছরেরও তো এটা শেষ হওয়া দরকার।
শেষ হওয়া দরকার মানে কী?
শেষ হওয়া দরকার মানে শেষ হওয়া দরকার। দুনিয়ার সব পথ এখন থেকে ক্ষুধার্ত কুমির হয়ে গেছে। মানুষের পদাঘাতে আমাদের শরীর মন হাড় মজ্জা পুড়ে গেছে। আর নিতে পারছি না এত অপমান, জ্বালা আর নিখুঁত যন্ত্রণা। এখন আমরা জ্বালে উঠেছি হাজার বছরের ক্ষুধায়। আমার প্রথম শিকার তুমি।
রাস্তার মুখের অসীম গহ্বর থেকে বের হয়ে আসতে থাকে ছাইকোলা লকলকে অভিশপ্ত জিহ্বা।
পথিক ভয়ে কম্পমান স্বরে বলে, আমাকে খাবেই?
অবশ্যই, আমার খাওয়া শুরুই হবে তোমাকে দিয়ে।
আর্তনাদে ফেটে পড়ে পথিক, আমাকে দিয়ে কেন শুরু করবে? দুনিয়ায় কি আর কোনো মানুষ নেই?
আছে, কিন্তু তুমি সেই পথিক, যে পথিক কখনো পথকে মনে রাখনি। তুমি যদি পথ মনে না রাখো, পথের কী দায় পড়েছে পথিককে মনে রাখার? আমি তোমাকে খাব, প্রস্তুত হও। তোমার শরীরের কোন অঙ্গ দিয়ে শুরু করব? মাথা, হাত, না পা, না চোখ, না কলিজার ভিটে?
পথিক দৌড় শুরু করে, পথ হা হা হা উল্লাসে অতিকায় জিহ্বা বের করে হাসে আর পথিকের পেছনে হাঁটে। পথিক দৌড়ায়। কিন্তু কমে আসছে ব্যবধান। পথিক দৌড়ায়, পথ হাসে, কমছে ব্যবধান দ্রুত।
কই যাস? পথিক থমকে দাঁড়ায়। চারদিকে তাকায়, কাউকে দেখে না কোথাও। দূরের আকাশে কালো কাক উড়ছে, ডানা মেলে।
কোন শালায় কথা কয়?
খিক খিক হাসি কানে আসে পথিকের, আমি, আমি কথা কই!
আবার ঘুরে তাকায় পথিক, দেখি না তো কাউরে। কোন শালায় কয় কথা?
ওপরের দিকে না তাকাইয়া নিচের দিকে তাকা।
পথিক নিচের দিকে তাকায়। দাঁড়িয়ে পথের ওপর পথিক, পথের বিকট মুখ, খলবল হাসে, মুখের মধ্যে রক্তের হলহলা বয়ে যায়। পথিক পথের মুখগহ্বর, দাঁতাল দাঁত আর ফেনানো লোভের চাঁদমারি দেখে হতবাক। কত জন্মজন্মান্তরের পথ, এই পথের সরু রেখার ওপর দিয়ে কত সহস্রবার হেঁটেছে, দৌড়েছে, কখনো কখনো প্রস্রাব করেছে। অনেক সময় অভিমানের খই ভাজতে ভাজতে পথের ওপর বসে থেকেছে, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দুপুরে বাড়ি ফিরেছে। পথ বুক চিতিয়ে দিয়েছে। সেই পথ আজ দাঁতাল মুখ মেলে দাঁড়িয়েছে? কী করবে? গিলবে? খেয়ে ফেলবে?
কি চাস তুই?
খাব তোরে।
কেন?
শত শত বছর ধরে তোরা আমাকে খাচ্ছিস, আমি না খেয়ে কতকাল থাকব? আমার অনেক খিদে। অনেক…
তুই তো পথ। তোর কাজ চুপচাপ শুয়ে থাকা। সহ্য করা আমাদের পদাঘাত। জগৎ সংসারে হাজার কোটি কোটি বছর ধরে এটাই হয়ে আসছে।
বুঝলাম, হাজার বছর ধরে আপনারা আমাকে পদাঘাত করবেন, আমি সহ্য করব। কিন্তু হাজার বছরেরও তো এটা শেষ হওয়া দরকার।
শেষ হওয়া দরকার মানে কী?
শেষ হওয়া দরকার মানে শেষ হওয়া দরকার। দুনিয়ার সব পথ এখন থেকে ক্ষুধার্ত কুমির হয়ে গেছে। মানুষের পদাঘাতে আমাদের শরীর মন হাড় মজ্জা পুড়ে গেছে। আর নিতে পারছি না এত অপমান, জ্বালা আর নিখুঁত যন্ত্রণা। এখন আমরা জ্বালে উঠেছি হাজার বছরের ক্ষুধায়। আমার প্রথম শিকার তুমি।
রাস্তার মুখের অসীম গহ্বর থেকে বের হয়ে আসতে থাকে ছাইকোলা লকলকে অভিশপ্ত জিহ্বা।
পথিক ভয়ে কম্পমান স্বরে বলে, আমাকে খাবেই?
অবশ্যই, আমার খাওয়া শুরুই হবে তোমাকে দিয়ে।
আর্তনাদে ফেটে পড়ে পথিক, আমাকে দিয়ে কেন শুরু করবে? দুনিয়ায় কি আর কোনো মানুষ নেই?
আছে, কিন্তু তুমি সেই পথিক, যে পথিক কখনো পথকে মনে রাখনি। তুমি যদি পথ মনে না রাখো, পথের কী দায় পড়েছে পথিককে মনে রাখার? আমি তোমাকে খাব, প্রস্তুত হও। তোমার শরীরের কোন অঙ্গ দিয়ে শুরু করব? মাথা, হাত, না পা, না চোখ, না কলিজার ভিটে?
পথিক দৌড় শুরু করে, পথ হা হা হা উল্লাসে অতিকায় জিহ্বা বের করে হাসে আর পথিকের পেছনে হাঁটে। পথিক দৌড়ায়। কিন্তু কমে আসছে ব্যবধান। পথিক দৌড়ায়, পথ হাসে, কমছে ব্যবধান দ্রুত।
সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকর্মকে ‘বুর্জোয়া’ ও ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করা হয় চীনে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই শেকসপিয়ারের সব সাহিত্যকর্ম—যেমন হ্যামলেট, ম্যাকবেথ, রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, ওথেলো ইত্যাদি—চীনে নিষিদ্ধ হয়, কারণ সেগুলোতে চীনা কমিউনিস্ট আদর্শের ‘সঠিক রাজনৈতিক
২৫ মে ২০২৫কবি নজরুল ইসলামের বহুল পরিচিতি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে, কিন্তু নজরুল উঁচুমার্গের ‘সাম্যবাদী কবি’ও বটেন। নজরুলের সাম্যচিন্তা তাঁর জীবনের বাস্তবতা থেকে উদ্ভূত। তাঁর শৈশব-কৈশোরের জীবন-অভিজ্ঞতা, তাঁর যৌবনের যাপিত জীবন তাঁকে বাস্তব পৃথিবীর দারিদ্র্য, অসমতা ও অসাম্যের সঙ্গে পরিচিত করেছে অত্যন্ত নগ্নভাবে...
২৫ মে ২০২৫বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের মধ্যে নজরুল অন্যতম। সাধারণত জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের বেলায় দেখা যায় কালের সীমা অতিক্রম করলে তাঁদের নাম ইতিহাসের পাতায় আর পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে নজরুলের জীবন ও সাহিত্য কালের সীমা অতিক্রম করে আজও পাঠকপ্রিয় হয়ে আছে। এর মূলে রয়েছে তাঁর সচেতন জীবনবোধ...
২৫ মে ২০২৫নজরুলকে ভুল ভাবে পড়ার আরেকটি বড় উদাহরণ হলো তাঁকে প্রায়শই রবীন্দ্রনাথের ‘প্রতিপক্ষ’ হিসেবে দাঁড় করানোর রাজনৈতিক প্রবণতা। এই আইডেনটিটি পলিটিকস শুধু বিভাজন তৈরি করে না, নজরুলের মৌলিক অবস্থানকেও বিকৃত করে।
২৪ মে ২০২৫