৩ মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলতে নেমে ধাক্কা খেল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। র্যাঙ্কিংয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে থাকা থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আজ প্রথম প্রীতি ম্যাচে হেরেছে ৩-০ গোলে। ফল নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার কথা তো নয়ই, বরং কোচ পিটার বাটলার আরও ক্ষুব্ধ করেছে ফুটবলারদের আচরণ।
ম্যাচটি কোথাও সম্প্রচার হয়নি। এমনকি মাঠে দর্শক থাকার ব্যবস্থাও করা হয়নি। থনবুরি বিশ্ববিদ্যালয় অনুশীলন মাঠে প্রথম মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডের হয়ে গোলটি করেন অরাপিন ওয়েনঙ্গোয়েন। বিরতির আগপর্যন্ত এমনই ছিল ব্যবধান। দ্বিতীয়ার্ধে আরও জ্বলে ওঠে থাইল্যান্ড। ৫১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাওলাক পেংঙ্গাম। দুই গোল হজমের পর ৭০ মিনিটে একাধারে চার বদলি করেন বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। তবুও বদলায়নি ম্যাচের ফল। উল্টো ৮৬ মিনিটে থাইল্যান্ডের তৃতীয় গোলটি আসে পাত্তরানান আউপাচাইয়ের কাছ থেকে।
হারের পর ক্ষুব্ধ বাটলার বলেন, ‘কয়েকজন ফুটবলার ভুল মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছে, এমন গা ছাড়া মনোভাব কিছুতেই সহ্য করব না। কেউ যদি আমার দলে খেলতে চায়, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়, তাহলে এমন মানসিকতা নিয়ে আসতে পারবে না, যা জাতীয় দলের সঙ্গে মানানসই নয়। হার-জিতের চেয়েও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি শেখার প্রক্রিয়া এবং সেটাকে সম্মান করতে হবে।’
মেয়েদের ফুটবলে আবারও যেন বিদ্রোহের ইঙ্গিত দিলেন বাটলার। গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিলেন ১৮ ফুটবলার। তেমন কিছুই কি ঘটতে যাচ্ছে আবারও। বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘আমি এমন খেলোয়াড়দের খেলাতে পেরে খুশি যারা বড় কোনো নাম নয়, কিন্তু সঠিক মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামে। তারা কঠোর পরিশ্রম করতে চায়, উন্নতি করতে চায়। কেউ আমার পরীক্ষা নিতে চাইলে নিক। এমনটা আগেও হয়েছে, আবারও হলে আমি নিজের জায়গায় শক্ত থাকব। কিন্তু অসম্মান ও বাজে আচরণ সহ্য করব না।’
মাঠ নিয়ে অসন্তুষ্ট বাটলার, ‘আমি জানি না আদৌ এটি টায়ার-১ প্রীতি ম্যাচ ছিল কি না। কারণ আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে এমন পরিবেশে খেলেছি, যেখানে আলো অতটা ভালো ছিল না। ম্যাচটি আসলে জাতীয় দলের ম্যাচের মতো লাগেনি। বরং প্রস্তুতি ম্যাচের মতো লাগছিল। ভবিষ্যতে এমন ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। এই ম্যাচ থেকে অনেক ইতিবাচক কিছু পেয়েছি আমরা।’
হারের ম্যাচেও প্রাপ্তি খুঁজে পেয়েছেন বাটলার, ‘আমরা প্রচুর তরুণীকে সুযোগ দিয়েছি—শিখা, নবিরণ, জয়নব, সাগরিকা, মুনকি, রিপা ও হালিমা। তবে এই ম্যাচ থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। কখনো কখনো হেরে যাওয়া ম্যাচ আপনাকে অনেক বেশি শেখায়।’
বাংলাদেশের সর্বশেষ হারটি এসেছিল গত মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। এরপর ইন্দোনেশিয়া ও জর্ডানের বিপক্ষে ড্র এবং এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাহরাইন, মিয়ানমার, তুর্কমেনিস্তানকে হারিয়েছে বাটলারের দল। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আজকের আগে একবারই মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এক যুগ আগের সেই ম্যাচে হেরেছিল ৯-০ গোলে। ব্যাংককে দ্বিতীয় ও শেষ প্রীতি ম্যাচে ২৭ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।