রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের চারপাশে ২০০ গজের মধ্যে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। তবে এই নিষিদ্ধ স্থানেই জমায়েত হয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাদের জমায়েত চললেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।
ভোট গ্রহণ চলাকালে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকের পূর্ব পাশে জমায়েত হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ক্যাম্পাসের সীমানাপ্রাচীরের পাশে কয়েক ফুটের একটি ফুটপাত, এরপর সড়ক। এই সড়কে লম্বা শামিয়ানা টানিয়ে সমবেত হয়েছেন বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এ স্থানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার ১০ গজের কম দূরত্বে। দুপুরে সেখানে মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ শহীদকে বসে থাকতে দেখা যায়। কথা হয় মো. সেলিম নামের একজনের সঙ্গে। সেলিম নিজেকে ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসম্পাদক পরিচয় দেন।
ক্যাম্পাসের ২০০ গজের মধ্যে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, এটি জানেন কি না জানতে চাইলে সেলিম বলেন, তিনি এটি জানেন না। এলাকার সব নেতা-কর্মী এসেছেন। তাই তিনিও এসেছেন।
কিছুটা পশ্চিম দিকে সড়কের উল্টো পাশে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের জমায়েত হতে দেখা যায়। তারাও সেখানে শামিয়ানা টানিয়ে প্যান্ডেল করেছেন।
নুরুল আমিন নামের এক জামাত কর্মী বলেন, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, এটি তিনিও জানেন না।
ক্যাম্পাসের উত্তর প্রান্তে স্টেশন বাজার। স্টেশন বাজারের পাশ দিয়ে গেছে রেললাইন। রেললাইনের ওপারেও বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের জমায়েত হতে দেখা যায়।
এই নির্বাচন উপলক্ষে একটি নির্দেশনা জারি করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেখানে বলা হয়েছে, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন, ১৯৯২-এর ২৬-এর ১(ঢ); ২৯-এর (১)(ক), (খ) ও ৩০ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের এক দিন আগে থেকে নির্বাচনের পরের দিন, অর্থাৎ ১৫ অক্টোবর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ১৭ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত মোট তিন দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও তৎসংলগ্ন এলাকার চতুর্দিকে ২০০ গজের মধ্যে সকল প্রকার মিছিল, মিটিং, সমাবেশ, বিক্ষোভ প্রদর্শন, মাইকিং, আতশবাজি, পটকা ফুটানোসহ অন্যান্য ক্ষতিকারক দ্রব্য ব্যবহার, অস্ত্রশস্ত্র, তলোয়ার, বর্শা, বন্দুক, ছোরা বা লাঠি, বিস্ফোরক দ্রব্য বহন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এরপরও বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের জমায়েতের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এ রকম জমায়েত করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করে এটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছি।’
তবে নিষিদ্ধ এলাকায় জমায়েতের ব্যাপারে পুলিশকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।