রাজশাহীর চারঘাটে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের বালাদিয়াড় মোল্লাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মোস্তফা শেখ (৪৭)। তিনি ওই গ্রামের মৃত সমেতউল্লাহ শেখের ছেলে।
অভিযুক্ত ভাতিজারা হলেন শফিক শেখ, রফিক শেখ, ফরহাদ শেখ ও কদু শেখ। তাঁদের বাবার নাম রহমতউল্লাহ শেখ। নিহতের আরেক ভাতিজা রমজান শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্বজন ও পুলিশ জানায়, সমেতউল্লাহ শেখের দুই স্ত্রী ছিলেন। এক স্ত্রীর সন্তান রহমতউল্লাহ শেখ এবং অন্য স্ত্রীর সন্তান মোস্তফা শেখ, মুনজিল শেখ, ফজেল শেখ ও এন্দা শেখ। সমেতউল্লাহ শেখ মারা গেলেও তাঁর জমি এখনো সঠিকভাবে ভাগ-বণ্টন হয়নি। জমি নিয়ে বিরোধে উভয় পক্ষের মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দেড় বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে মোস্তফারা চার ভাই মাছ চাষ করলেও রহমতউল্লাহ শেখকে ভাগ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রহমতউল্লাহর ছেলেরা পুকুরের ভাগ বুঝে নিতে মোস্তফার কাছে গেলে তিনি শুক্রবার বসার কথা বলেন। পরবর্তী সময়ে মোস্তফার ভাই মুনজিল বালাদিয়াড় বাজারের দিকে গেলে রহমতউল্লাহর ছেলেরা তাকে পিটিয়ে আহত করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে যান মোস্তফার স্বজনেরা। অভিযোগ দেওয়ার খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রহমতউল্লাহর ছেলেরা।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দাওয়াত খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন মোস্তফা শেখ। এ সময় তাঁর ভাতিজা শফিক শেখ, রফিক শেখ, ফরহাদ শেখ ও কদু শেখসহ কয়েকজন তাঁকে বাড়ির পাশের রাস্তায় ঘিরে ধরেন। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে মোস্তফাকে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করেন। তাঁকে বাঁচাতে ছুটে আসা অন্য ভাতিজারাও হামলার শিকার হন।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত মোস্তফা শেখকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া লিটন শেখ, জাদু শেখ ও এনামুল শেখকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর বালাদিয়াড় গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মোস্তফা শেখের বাড়ির সামনে ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। তাঁদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় নারী বিনা বেগম বলেন, ‘জমি নিয়ে আগেও ঝামেলা হতো, পুলিশ আসত। কিন্তু আজ এভাবে কুপিয়ে মেরে ফেলবে, তা কেউ ভাবেনি।’
এ বিষয়ে চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা ও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।