ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় বন্যা রানী নামের এক নারীকে হত্যা মামলায় তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাঁর নাম সৌরভ কুমার দাস (২২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, বন্যাকে তাঁর মা আটকে রেখে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সৌরভ তাঁর স্ত্রীকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
আজ রোববার দুপুরে ফরিদপুর র্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার ও স্কোয়াড্রন লিডার তারিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
এর আগে সকালে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে মামলার একমাত্র আসামি সৌরভ কুমার দাসকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তিনি ফরিদপুর সদরের বঙ্গেশ্বরদি গ্রামের বাসুদেব দাসের ছেলে এবং পেশায় গ্যারেজের মিস্ত্রি।
তারিকুল ইসলাম জানান, ২০ অক্টোবর সকালে মধুখালী পৌরসভার গাড়াখোলা এলাকায় শাশুড়ির ভাড়াবাসায় ঢুকে বন্যাকে শ্বাস রোধ করে পালিয়ে যান সৌরভ। পরদিন ২১ অক্টোবর মধুখালী থানায় সৌরভকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন বন্যার মা শেফালী রানী।
হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের তথ্য তুলে ধরে তারিকুল ইসলাম বলেন, চার বছর আগে পালিয়ে বিয়ে করেন সৌরভ ও বন্যা। বিষয়টি তখন বন্যার মা মেনে নেননি। সৌরভ ও বন্যা দুই বছর ধরে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তাঁদের একটি পুত্রসন্তান হয়, যার বয়স দুই বছর। সম্প্রতি তাঁরা এলাকায় ফিরে আসেন। বিভিন্ন সময় বন্যা তাঁর মায়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলে তাঁকে আটকে রাখা হয়। সর্বশেষ দুর্গাপূজার আগে বন্যা তাঁর মায়ের বাড়িতে যাওয়ার পর সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে সৌরভ জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রীকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন শাশুড়ি।
র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পেরে ২০ অক্টোবর শাশুড়ির বাসায় যান সৌরভ। এ সময় বাইরে থেকে বন্যাকে অশ্লীল ভঙ্গিতে কথা বলতে দেখে তিনি ঘরে ঢুকে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে সন্তানকে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। ওই সময় তাঁকে পেছন থেকে কিল-ঘুষি দিতে থাকেন স্ত্রী। এ নিয়ে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বন্যাকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যান সৌরভ। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে মধুখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার পর নিহতের মা শেফালী রানী অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, বিয়ের পর থেকে সৌরভ অন্য নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে কলহের জের ধরে বন্যাকে হত্যা করা হয়।