Ajker Patrika

জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি: দলগুলোর ভেতরে প্রার্থী বাছাইয়ে তোড়জোড়

  • তারেকের তত্ত্বাবধানে বিএনপির প্রার্থী বাছাই শেষের পথে
  • জামায়াতের প্রার্থীরা প্রচারে, বাকি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা
  • প্রধান দুই দলের আগ্রহে দোটানায় জাতীয় নাগরিক পার্টি। আগ্রহী প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ০৮
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চার মাস পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই ভোটে আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত নেই বলেই মনে হচ্ছে। পরিবর্তিত এই প্রেক্ষাপটে ভোটের মাঠে বিজয় ছিনিয়ে আনতে নিজেদের মতো করে ছক কষছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য দলগুলো। নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল হয়ে গেলেই ঘোষণা করতে হবে প্রার্থী তালিকা। তার আগে তাই দলগুলোর মনোযোগ এখন চূড়ান্তভাবে প্রার্থী বাছাইয়ে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষ সংগঠক, আন্দোলনে ভূমিকা, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নবীন-প্রবীণের মিশেলে নতুন চমক নিয়ে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী দিতে চায় বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিবিড় তত্ত্বাবধানে প্রার্থী চূড়ান্তকরণের প্রক্রিয়া এখন শেষের পথে। সব ঠিক থাকলে খুব শিগগির দলটির মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারে দেখা যাবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। যদিও ঠিক কবে নাগাদ প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে বিএনপি, তা নিয়ে জোর দিয়ে এখনো কিছু বলছেন না দলটির নীতিনির্ধারকেরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার জানামতে তৃণমূলের মতামত, নিরপেক্ষ জনমত যাচাই এবং প্রত্যাশীদের তথ্যাদি পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। মনোনয়ন কখন দেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

দলীয় সূত্র বলছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে অনেক আগেই নিজ নিজ জায়গা থেকে তৎপরতা শুরু করেছেন দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। মনোনয়ন আদায়ের প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দল ও বিবাদেও জড়িয়েছেন তাঁরা। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দলাদলি এবং একে ঘিরে কোন্দল এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই অবস্থার দ্রুত অবসান চেয়ে এরই মধ্যে তৃণমূল থেকে বারবার বার্তা যাচ্ছে কেন্দ্রে।

সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রার্থী চূড়ান্তকরণে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। চলতি মাসেই (অক্টোবর) প্রায় ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে ‘সবুজসংকেত’ দিয়ে নির্বাচনের মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। গত সোমবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখেন এবং প্রার্থী বাছাইয়ের কাজে সম্পৃক্ত বিএনপির একাধিক নেতা জানান, প্রার্থী চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে এখন প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এসব আলোচনা থেকে মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের জন্য বার্তা ও নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে, একক প্রার্থী ঘোষণার পরে দলের আর কোনো প্রার্থীকে নির্বাচনের মাঠে মেনে নেওয়া হবে না। সবাইকে একযোগে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে।

এদিকে এরই মধ্যে মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের মধ্যে অনেককে নির্বাচনী মাঠ গোছাতে তারেক রহমান মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। তারেক রহমানের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়ে তাঁরা মাঠে নেমে গেছেন। ঠিক কতজনকে তারেক রহমান এমন নির্দেশনা দিয়েছেন, তার সঠিক সংখ্যা জানা না গেলেও তা ২০-এর বেশি বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

এদিকে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের আসন ছাড়ের বিষয়টিও দ্রুত সুরাহা করতে চায় বিএনপি। এ জন্য মিত্রদের কাছে তালিকা চেয়েছে দলটি। বিএনপি ও মিত্র দলগুলোর একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপির কাছে দুই শর বেশি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছে শরিক দলগুলো। এর মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ ১৩৮, ১২ দলীয় জোট ২১, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৯, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ১৩, জাতীয় পার্টি-বিজেপি ৫, গণফোরাম ১৫টি আসনের প্রার্থীর নাম দিয়েছে। যদিও শরিকদের জন্য এখন পর্যন্ত বিএনপির সর্বোচ্চ ৩০টি আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘প্রতিটি আসনে আমাদের একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছেন। নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টা আমাদের দেখতে হচ্ছে।’

জামায়াতের প্রার্থীরা মাঠে

এরই মধ্যে প্রায় সব আসনে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। সেই প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যদিও পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের ঘোষিত প্রার্থী তালিকাতেই আটকে থাকতে চান না জামায়াতের নীতিনির্ধারকেরা। নির্বাচনী মাঠ ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের তৎপরতা এবং এর সঙ্গে সমমনাদের সঙ্গে জোট বা সমঝোতার আলোকে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, নির্বাচনের জন্য আবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। সেই তালিকা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্যানেলের মতো অন্তর্ভুক্তিমূলক করার প্রয়াস আছে। নতুন তালিকা চূড়ান্ত করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

জানতে চাইলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ শিগগির শেষ হচ্ছে না। কিছু আসনে সমঝোতার বিষয় আছে। এ ছাড়া প্রার্থী তালিকা অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য আমাদের আলোচনা চলছে। আরও সময় লাগবে।’

দুই দলের আগ্রহে সিদ্ধান্তহীনতায় এনসিপি

নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) পাশে চাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত। দুটি পক্ষই মনে করে, এনসিপিকে সঙ্গে রাখলে নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়া সহজ হবে।

এ নিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হলেও কিছু বিষয় বিবেচনা করে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন এনসিপির নেতারা। তাঁরা বলছেন, বিএনপির সঙ্গে গেলে আসন ছাড় দিলেও নির্বাচনী প্রচারে দলটির নেতা-কর্মীদের না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। একই সঙ্গে দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীও দাঁড়িয়ে গেলে তা ঠেকাতে পারবে না। নির্বাচনের মাঠে বিএনপির কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে না এনসিপি। অন্যদিকে জামায়াতের সঙ্গে গেলে ট্যাগিংয়ের ঝুঁকি আছে, আবার এনসিপিকে জামায়াতের ‘বি টিম’ বলে যে প্রচার আছে, তা-ও প্রতিষ্ঠা পাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির এক যুগ্ম আহ্বায়ক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে থেকেও আমরা প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করছি। একই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।’

এনসিপির একাধিক সূত্র বলছে, চলতি মাসে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। দলটির নির্বাহী কাউন্সিলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেক আসনে এরই মধ্যে প্রার্থী নির্ধারণ হয়ে গেছে। অনেকে নিজ নিজ আসনে জনসংযোগও শুরু করেছেন।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যাঁদের নিয়ে বিতর্ক নেই, সারা দেশের মানুষ চেনে, তাঁদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। তাঁদের দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থাকতে হবে। প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করতে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে সিভি (জীবনবৃত্তান্ত) আহ্বান করা হবে।

প্রস্তুতির কথা জানিয়ে এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘৩০০ আসনের জন্যই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জোট বা সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন হলে কিছু আসন থেকে প্রার্থী তুলে নেওয়া হবে। জোটের ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং আরও কয়েকটি ছোট ও মাঝারি দলের সঙ্গে এনসিপির আলোচনা চলছে।’

গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪০ নাম

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মাহমুদুর রহমান মান্না, জোনায়েদ সাকি, হাসনাত কাইয়ূম, সাইফুল হকসহ ১৪০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বাম ও প্রগতিশীল ঘরানার ছয়টি রাজনৈতিক দলের মোর্চা ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন মঞ্চের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। পর্যায়ক্রমে ৩০০ আসনের বাকি আসনগুলোতেও প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

হাসনাত কাইয়ূম আজকের পত্রিকাকে জানান, গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দলের চার শতাধিক প্রার্থীর আবেদন জমা পড়েছে। প্রার্থিতা বাছাই ও সমন্বয় কমিটি আবেদনগুলো পর্যালোচনা ও সমন্বয়ের কাজ করছে। একই আসনে একাধিক প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ধারাবাহিকভাবে দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বয়ের কাজ চলছে।

গণঅধিকারের প্রস্তুতি

নির্বাচনে অংশ নিতে গত ২২ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আগ্রহীদের কাছে প্রাথমিক আবেদন ফরম আহ্বান করেছিল গণঅধিকার পরিষদ। যোগ্য এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রার্থীদের আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দলের পক্ষ থেকে ৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরও ১০০ আসন এবং আগামী মাসের মধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করবে দলটি।

গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গণঅধিকার পরিষদ এরই মধ্যে ৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে এবং শিগগির আরও ১০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করবে। তারপর ধাপে ধাপে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে।

নির্বাচনী জোটের বিষয়ে ভাবনা জানতে চাইলে রাশেদ খান বলেন, ‘জোটবদ্ধ হওয়ার আলোচনা অনেকে করছেন। অনেকে চাইছেন কাছাকাছি আসতে। বেশ কিছু দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। তবে জোটের বিষয়ে এখনো আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’

এরই মধ্যে বাম গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলো নিজেদের প্রার্থী বাছাই এবং নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন জোটের শীর্ষ নেতারা। জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা দলগুলোর মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা করেছি। দলগুলো নিজেরা প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ৩১ অক্টোবর জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সমন্বয়ের মাধ্যমে শিগগির আমরা প্রার্থী ঘোষণা করব।’

বিভক্ত জাতীয় পার্টিও নিচ্ছে প্রস্তুতি

এদিকে নানাভাবে চাপে থাকলেও নির্বাচনী ভাবনা ভর করেছে জাতীয় পার্টিতেও। নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করছে পার্টির দুটি পক্ষই। জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির (একাংশ) মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। নির্বাচন যেহেতু প্রতিযোগিতামূলক হবে, তাই আমরা আরও ভালো জনপ্রিয় প্রার্থী; যেমন বিভিন্ন দলে যারা সুযোগ পাবে না এমন জনপ্রিয়, যোগ্য প্রার্থীকে নেব। নির্বাচন নিয়ে সংশয় থাকার পরেও আমরা প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। এরই মধ্যে আমাদের ৬০-৭০ জন প্রার্থী প্রস্তুত আছে।’

জাতীয় পার্টির অপর অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি দেখে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কাজ আমরা শুরু করব।’ জোটের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছেন শামীম হায়দার। তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাসিনা, রেহানা, টিউলিপের বিরুদ্ধে তিন মামলায় সাক্ষ্য দিলেন আরও ৫ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও শেখ রেহানা। ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও শেখ রেহানা। ছবি: সংগৃহীত

রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে তিনটি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা তিনটি মামলায় আরও পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ রোববার (২ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ তাঁরা সাক্ষ্য দেন।

এই পাঁচ সাক্ষীর প্রত্যেকে তিন মামলাতেই সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক রবিউল ইসলাম ৯ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি তরিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য জানান।

এই তিন মামলায় গত ১৩ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। সেদিন তিন মামলার বাদী যথাক্রমে দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং এস এম রাশেদুল হাসান সাক্ষ্য দেন। পরে পাঁচটি তারিখে আরও ২০ জন সাক্ষ্য দেন।

এ তিন মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ রেহানার দুই মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক এবং ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে আসামি করা হয়েছে। একটি মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জন; আরেক মামলায় শেখ হাসিনা, আজমিনা সিদ্দিকসহ ১৮ জন এবং অপর মামলায় শেখ হাসিনা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ ১৮ জন আসামি।

তবে প্রতিটি মামলায় শেখ হাসিনা এবং রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তা আসামি। তাঁদের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করা রাজউকের সাবেক সদস্য খুরশিদ আলমের পক্ষে আজ সাক্ষীদের জেরা করা হয়। অন্যরা পলাতক থাকায় তাঁদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে-মেয়ে এবং তাঁর বোন, বোনের এক মেয়ে ও ছেলের নামে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে এ তিনটিসহ মোট ছয়টি মামলা করেছে দুদক। বাকি তিনটি মামলা করা হয় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ অন্যদের বিরুদ্ধে। ওই তিন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এ।

এ ছয়টি মামলার অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যরাসহ ২৯ জন আসামি। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই, তবে নির্বাচনের পর: বাংলা একাডেমি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছুটির দিনে পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছুটির দিনে পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে হলেও মেলা অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাপুসের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬-এর সময় নির্ধারণ বিষয়ে সমিতির প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে বাপুস মেলার কয়েকটি সম্ভাব্য সময়ের কথা উপস্থাপন করে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থার পরামর্শও সেখানে পর্যালোচনা করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপর ফেব্রুয়ারি মাসে মেলা আয়োজনের প্রস্তাবকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাস্তবসম্মত বলে গ্রহণ করা হয়েছে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্বাচনের তারিখ নির্দিষ্ট হওয়ার পরেই মেলার তারিখ ঘোষণা করা হবে।

অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ আয়োজনের বিষয়ে বাংলা একাডেমি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।

এর আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং রমজানের কারণে অমর একুশে বইমেলা-২০২৬-এর সময় এগিয়ে এনে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে স্থগিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আপিল শুনানিতে নেপালের প্রধান বিচারপতি, পেলেন সংবর্ধনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ০৭
নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত। ছবি: সংগৃহীত

নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউতকে আপিল বিভাগে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার আপিল বিভাগে প্রথমে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন নেপালের প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা দেন।

নেপালের প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগে চলমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি পর্যবেক্ষণ করেন।

পরে সংবর্ধনার জবাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন তিনি।

এ সময় আপিল বিভাগে নেপালের উচ্চ আদালতের বিচারপতি, বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রদূত, ইউএনডিপির প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

আজ শুরুতে বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা-সংক্রান্ত আপিল শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এরপর বিরতি শেষে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ নেপালের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে আবার এজলাসে আসেন। নেপালের প্রধান বিচারপতিকে বসানো হয় বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ডান পাশের চেয়ারে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানিতে বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা-সংক্রান্ত আপিল শুনানি বেলা ১টা পর্যন্ত চলে। পরে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

শুনানিতে যা বললেন রুহুল কুদ্দুস

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আপিল বিভাগের তিনজন বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে রায় দিয়েছেন আর চারজন রায় দেন বাতিলের পক্ষে। সংক্ষিপ্ত রায়ে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার জন্য বলা হয়েছিল। খায়রুল হক (সাবেক প্রধান বিচারপতি) অবসরের ১৬ মাস পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় দেন। তবে সেখানে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার বিষয়টি ছিল না। প্রকাশ্য আদালতে রায় দেওয়ার পর করণিক ভুল ছাড়া আর কোনো কিছু পরিবর্তন করা যায় না।

রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে, অবসরের ছয় মাসের মধ্যে রায়ে স্বাক্ষর করতে হবে। আর এই রায়ে স্বাক্ষর করা হয়েছে অবসরের ১৬ মাস পর। গণতন্ত্রের স্বার্থে, আইনের শাসনের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে এ বি এম খায়রুল হকের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

এদিকে আদালত থেকে বের হয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমি শুনানিতে বলেছি, দেশের মধ্যে এই যে মারামারি, দিনের ভোট রাতে হয়েছে এবং কোনো ভোটই হয়নি—সবকিছুর মূলেই খায়রুল হক। খায়রুল হক দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন। তাঁর এই ব্যবহারের কারণেই আজকে ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা। খায়রুল হকের ওই রায় কোনোভাবেই থাকতে পারে না। ওই রায় থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশে বৈষম্যমূলক ধারা সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনে সহায়ক ধারা ও প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীনতা ক্ষুণ্নের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী দুর্বল বিধান অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে।

আজ রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা জানান।

এই অধ্যাদেশের ফলে মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে বলেও মনে করে টিআইবি।

লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির অকার্যকরতার অন্যতম কারণ।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের সব সদস্যের পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও দায়িত্ব-কর্তব্যে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এই বিধান সংশোধন করে কমিশনের কার্যক্রমে গতিশীলতা ও কার্যকরতা আনা জরুরি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, চেয়ারপারসন ও কমিশনার বাছাইয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং প্রাথমিকভাবে বাছাই করা প্রার্থীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশের প্রস্তাব টিআইবি দিয়েছিল, কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। তা ছাড়া কোনো সংস্থার আটকস্থল যদি কমিশনের নিকট আইনবহির্ভূত মনে হয়, তবে তা বন্ধের ক্ষমতা ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের সুপারিশও উপেক্ষিত হয়েছে, যা হতাশাজনক।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, মানবাধিকার সংরক্ষণের পরিপন্থী কোনো আইন সংশোধনের সুপারিশ করার ক্ষমতা কমিশনের থাকা উচিত।

টিআইবির মতে, অধ্যাদেশে ধারা ১৪-তে ‘মানবাধিকারসংক্রান্ত অন্য কোনো আইন এই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে এই আইন প্রাধান্য পাবে’–এই অংশ যুক্ত করা হলে ভবিষ্যতে মানবাধিকার বিষয়ে আইনগত সংঘাত এড়ানো সহজ হতো।

এ ছাড়া সব অভিযোগে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক অনুসন্ধানের বিধান বাতিল করে আমলযোগ্য অভিযোগে সরাসরি তদন্তের সুযোগ রাখার প্রস্তাবও গৃহীত হয়নি।

টিআইবির আশঙ্কা, এতে অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হবে এবং ভুক্তভোগীর হয়রানি ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা সরকারি কর্মচারীকে কমিশনে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সীমা নির্ধারণ এবং প্রেষণপ্রক্রিয়াকে যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালনার প্রস্তাবও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এমনকি কমিশনের দ্বিমতের ভিত্তিতে কোনো প্রেষণ প্রত্যাখ্যানের সুযোগের বিধান রাখার সুপারিশও বিবেচিত হয়নি।

টিআইবি মনে করে, কমিশনের আয়-ব্যয়ের বার্ষিক নিরীক্ষা সম্পন্নের পর তা ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিধান যুক্ত করা উচিত। এসব সংস্কারই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত