Ajker Patrika

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডুবে ঘুম হারাচ্ছেন বাংলাদেশি তরুণেরা: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৫২
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির কারণে বাংলাদেশি তরুণদের ঘুমের মানে ব্যাপক অবনতি ঘটছে বলে দেখা গেছে গবেষণা থেকে। ছবি: সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির কারণে বাংলাদেশি তরুণদের ঘুমের মানে ব্যাপক অবনতি ঘটছে বলে দেখা গেছে গবেষণা থেকে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের উচ্চমাধ্যমিক পাস করা তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি আর ঘুমের মানের অবনতি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। বিষয়টি নতুন করে তুলে ধরেছে নেচার অ্যান্ড সায়েন্স অব স্লিপ জার্নাল। এতে প্রকাশিত একটি গবেষণা তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য, ডিজিটাল অভ্যাস আর ঘুমের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোকপাত করেছে।

মার্শাল ইউনিভার্সিটির জোয়ান সি এডওয়ার্ডস স্কুল অব মেডিসিন, চিন্তা রিসার্চ বাংলাদেশ, সাউথ এশিয়া ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিন্সেস নূরা বিনতে আবদুর রহমান ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নেওয়া ১ হাজার ১৩৯ জন শিক্ষার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির মাত্রা যত বেশি, ঘুমের মান ততই খারাপ। গবেষণায় আসক্তির দুটি উপসর্গ, ‘রিল্যাপ্স বা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া এবং আবার ঘুমিয়ে পড়া’ এবং ‘দিবাকালীন কর্মক্ষমতার ব্যাঘাত’—অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সঙ্গে ঘুমের সমস্যার প্রধান যোগসূত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

গবেষণায় উল্লেখযোগ্য লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যও উঠে এসেছে। দেখা গেছে, নারী অংশগ্রহণকারীদের ঘুমের মান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে পুরুষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামগ্রিকভাবে আসক্তির হার বেশি। যা ইঙ্গিত করে অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের প্রভাব নারী-পুরুষের ওপর ভিন্নভাবে পড়ে।

নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণে গবেষকেরা কিছু ‘সাধারণ উপসর্গ’ শনাক্ত করেছেন, যেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের আচরণ ও ঘুমের স্বাস্থ্যের যোগসূত্র তৈরি করে। এগুলো হলো ‘মুড মডিফিকেশন বা মানসিক অবস্থার পরিবর্তন’, ঘুমাতে যেতে বেশি সময় নেওয়া (স্লিপ ল্যাটেন্সি) এবং ‘দিনের কাজের দক্ষতা ব্যাহত হওয়া।’

এই গবেষণা নিবন্ধের অন্যতম লেখক ডেভিড গোজাল বলেন, ‘ফলাফল স্পষ্টভাবে দেখায় যে ঘুমের অবস্থা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আচরণ গভীরভাবে পরস্পর নির্ভরশীল।’ মার্শাল ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভাগের উপপ্রধান এবং জোয়ান সি এডওয়ার্ডস স্কুল অব মেডিসিনের ডিন এই গবেষক আরও বলেন, ‘তরুণদের সুস্থ ডিজিটাল অভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে লক্ষ্যভিত্তিক হস্তক্ষেপ এখন জরুরি।’

এই গবেষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব নিয়ে ক্রমবর্ধমান বৈজ্ঞানিক আলাপকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক সুস্থতায় এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিবেচনায় রেখে সচেতনতা, প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ এবং লিঙ্গসংবেদনশীল কৌশলের প্রয়োজনীয়তার দিকেও জোর দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ