Ajker Patrika

ব্যাংক শাখায় পিছিয়ে গ্রাম

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯: ২৪
ব্যাংক শাখায় পিছিয়ে গ্রাম

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তাগাদা সত্ত্বেও গ্রামে শাখা স্থাপনে পিছিয়ে পড়েছে অধিকাংশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যাংকগুলো পিছিয়ে পড়েছে বেশি। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর গ্রামে কোনো শাখা নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথের সংখ্যা ও ক্যাশ ডিপোজিট মেশিনের (সিডিএম) সংখ্যাও খুব কম। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি শাখাও বাড়ছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোর উদাসীনতার কারণে শহরের তুলনায় গ্রামে শাখা এখনো কম। হাতের নাগালে ব্যাংকের শাখা কম থাকায় অধিকাংশ গ্রামের মানুষ ঋণসুবিধা পাচ্ছে না। আর বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যায়, গত নভেম্বর পর্যন্ত সব ব্যাংক মিলিয়ে শাখা রয়েছে ১০ হাজার ৮০৩টি। তারমধ্যে গ্রামাঞ্চলে শাখার সংখ্যা ৫ হাজার ২৪২টি এবং শহরাঞ্চলে ৫ হাজার ৫৬১টি শাখা। অর্থাৎ শহরের তুলনায় গ্রামে ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ৩১৯টি কম। বেসরকারি ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ৫ হাজার ৪২৮টি। যা মোট ব্যাংকের শাখার তুলনায় ৫০ দশমিক ২৫ শতাংশ। তার মধ্যে শহরে শাখা ৩ হাজার ৪৪২টি এবং গ্রামে ১ হাজার ৯৮৬টি। অর্থাৎ বেসরকারি ব্যাংকের শাখা শহরের তুলনায় গ্রামে প্রায় অর্ধেক।

ওই প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, রাষ্ট্রয়াত্ত সরকারি ব্যাংকগুলোর মোট শাখার সংখ্যা ৩ হাজার ৮০১টি। তার মধ্যে শহরের শাখা ২ হাজার ৩৯টি এবং গ্রামে শাখা ১ হাজার ৭৬২টি। অর্থাৎ শহরের তুলনায় গ্রামে ২৭৭টি শাখা কম রয়েছে। তবে কেবল বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর শাখা শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি। এসব ব্যাংকের ১ হাজার ৫০৭টি শাখার মধ্যে গ্রামে ১ হাজার ২১৭টি এবং শহরে ২৯০টি শাখা রয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংকগুলো সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী নতুন শাখা খুলে থাকে। শাখা খোলার জন্য নীতিমালা অনুযায়ী শর্ত পূরণ না করলে নতুন শাখা খোলার অনুমতি পাওয়ার কথা নয়। এসব বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি করে। বেসরকারি ব্যাংকের শাখা কম থাকার পেছনে ব্যাংকভেদে ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। আর সব মিলে গ্রাম ও শহরের শাখার পার্থক্য কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৬৫২টি। এর মধ্যে শহরে ৮ হাজার ৭৯৮টি এবং গ্রামে ৩ হাজার ৮৫৪টি। অর্থাৎ শহরের তুলনায় গ্রামে ৪ হাজার ৯৪৪টি এটিএম বুথ কম রয়েছে। একইভাবে ১ হাজার ৮০টি সিডিএমের মধ্যে শহরে ৮৮৩টি এবং গ্রামে শুধু ১৯৭টি। সেই হিসাবে গ্রামে কম রয়েছে ৬৮৬টি।

জানা যায়, ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বেসরকারি ব্যাংকের শহরাঞ্চলে চারটি শাখার বিপরীতে গ্রামে অন্তত একটি শাখা খোলার বিধান করা হয়। পরে শহরে দুটি শাখার বিপরীতে গ্রামে একটি শাখা খুলতে নির্দেশনা ছিল। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে শহরে একটি শাখা খোলা হলে গ্রামেও একটি খুলতে হবে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। ব্যাংকগুলো সেই নিয়ম মেনে পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে শহর ও গ্রামের বৈষম্য কমাতে ব্যাংকগুলোকে সুনির্দিষ্ট নীতি মেনে লক্ষ্য পূরণ করে চলতে হয়। তা পূরণ করতে না পারা পর্যন্ত তাগাদা দেওয়া হয়। এমনকি শাখা খোলা ও ঋণ বিরতণে ব্যাংকগুলোর ওপর তদারকি করাও বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অন্যতম কাজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত