Ajker Patrika

নির্দেশনা আছে, মানতে অনীহা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ০৪
নির্দেশনা আছে, মানতে অনীহা

টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে দিন-দিন। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অধিকাংশ মানুষ। রাস্তাঘাট, বাজার, বাসস্ট্যান্ড কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বিধিনিষেধ না মানলে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার আরও বেড়ে যেতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শহরের প্রধান কাঁচাবাজার পার্ক বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতা মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ক্রেতা বিক্রেতা কারও মুখে নেই মাস্ক। নানা বাহানায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলছেন তাঁরা। বাজারে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে মাস্ক পরছেন না কোনো জানতে চাইলে দিচ্ছেন নানা যুক্তি।

কথা হয় সদর উপজেলার বেগুনটাল এলাকার আবদুল হালিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, খুব ভোরে বাজারে এসেছেন মাস্ক পরার কথা মনে নেই। একই কথা জানান, পোড়াবাড়ি থেকে আসা আবদুস সোবাহান, পৌর এলাকার এনায়েতপুরের নায়েব আলী ও বিন্নঅফৈর এলাকার শুকুর মাহমুদ।

একই অবস্থা শহরের বিপণিবিতান, রাস্তাঘাট ও বাসস্ট্যান্ডগুলোতেও। মাস্ক না পরার প্রবণতা অনেক বেশি। আর জারা মাস্ক পরছেন তাঁরাও নিয়ম মাফিক পরছেন না।

সরেজমিনে জেলার প্রধান বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাসের চালক কিংবা যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। তবে অনেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও পরিবহনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এক চালকের কাছে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে আছে বলে, সহকারীকে মাস্ক আনতে বলেন। ওই সহকারী চালকের জন্য ১০০টি মাস্ক আনলেও তাঁর মুখে কোনো মাস্ক ছিল না। সেই গাড়ির যাত্রীদের কাছে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে কেউ বলেন, মাস্ক পরে গেছে। কেউ আনতে ভুলে গেছেন। অপর এক যাত্রী বলেন, মাস্ক পরে লাভ কি, তাই পরি না।

এ বিষয়ে বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, আমরা প্রতিটি বাসের চালক ও সহকারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয়েছে, সেই সঙ্গে টিকার কার্ড নিয়ে গাড়ি চালাতে বলা হয়েছে। যদি কোনো পরিবহনের সংশ্লিষ্টরা এসব বিধিনিষেধ না মানে তবে তাঁদের বিরুদ্ধে সমিতির সিদ্ধান্ত মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম বলেন, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে আমরা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছি। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ করে প্রচার চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে যাঁরা মাস্ক পরছেন না তাঁদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যম অর্থদণ্ডসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, সারা দেশে করোনায় আক্রান্তের হার বাড়ছে। তবে টাঙ্গাইলে কমসংখ্যক মানুষ পরীক্ষা করে। করোনা প্রতিরোধে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ১০৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৪, দেলদুয়ারে একজন, সখীপুরে তিনজন ও বাসাইলে একজন। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪৭ জন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যানুযায়ী অক্টোবরের ২০ তারিখ থেকে ২১ নভেম্বর তারিখ পর্যন্ত জেলায় ২২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৭৫৪টি। আর ২২ নভেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৫৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। আর জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ১ হাজার ৪১৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

পুলিশ হত্যাকারী ফোর্স হতে পারে না: আইজিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত