Ajker Patrika

লঞ্চের সময় পেছানোর দাবি

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৫১
লঞ্চের সময় পেছানোর দাবি

ঢাকা-বরিশাল নৌপথে দৈনিক ১০ হাজারের বেশি যাত্রী চলাচল করেন। এ যাত্রীদের প্রতিনিয়ত লঞ্চে পৌঁছাতে ঝামেলায় পড়তে হয়। বিশেষ করে রাজধানী থেকে সদরঘাটে পৌঁছাতে রাতে যানজটে নাকাল হতে হয়। বরিশাল নৌবন্দরে পৌঁছাতেও একই দুর্ভোগ। মন্ত্রী, এমপি, আমলাদের ফোনে লঞ্চ থেমে গেলেও সাধারণ যাত্রীরা যানজটে লঞ্চঘাটে পৌঁছাতে পারছেন না। এমন দুর্ভোগ কাটিয়ে উঠতে লঞ্চের টাইম টেবিল এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে বরিশালের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও লঞ্চের সময়সূচি নিয়ে দুর্ভোগের নানা অভিযোগ ফুটে উঠছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে লঞ্চ ছাড়ার সময়ে পরিবর্তন না আনা হলে যাত্রীরা লঞ্চ সার্ভিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, লঞ্চের টাইম টেবিল পরিবর্তন করতে হলে যাত্রীদের দাবি বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে।

বরিশাল শরীর চর্চা পরিষদের সদস্য এবিএম মাসুদ করিম সম্প্রতি ঢাকা থেকে রাতে লঞ্চ ধরতে সদরঘাটে পৌঁছাতে যানজটে পড়েন। একপর্যায়ে নির্ধারিত লঞ্চ না পেয়ে অন্য লঞ্চে বরিশালে ফিরতে হয়। তিনি বলেন, লঞ্চের টাইম টেবিল পিছিয়ে না দেওয়ায় হাজারো যাত্রী প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন।

এ রুটের এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মজিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে দৈনিক ৭-৮টি লঞ্চে ৮-১০ হাজার যাত্রী যাতায়েত করেন। প্রথম ট্রিপ রাত ৮টা ৩৫ মিনিট। শেষ ট্রিপ রাত ৯টা ৫০মিনিট। নির্ধারিত সময় না মানায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পারেন। অনেকেই যানজটে আসতে না পেরে ঘাট থেকে ফিরে যান। অথচ ঢাকা থেকে বরিশালে ভোর ৪টায় এসে লঞ্চ পৌঁছায়। সে ক্ষেত্রে ১ ঘণ্টা পড়ে লঞ্চ ছাড়লে সমস্যা হবে না।

বরিশাল নগরীর অ্যাপোলো মেডিকেল কলেজ হসপিটালের পরিচালক প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ঢাকা-বরিশাল উভয় রুটে লঞ্চ ৯টার স্থলে ১০টায় ছাড়লে তেমন ক্ষতি নেই। যাত্রীরা বাসায় রাতে খেয়ে লঞ্চে পৌঁছাতে পারেন। যানজটেরও সম্মুখীন হতে হয় না।

বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি আমিনুর রহমান ঝান্ডা বলেন, ১ ঘণ্টা পিছিয়ে দিলে কর্মজীবীরা স্বাচ্ছন্দ্যে লঞ্চে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু লঞ্চের ক্যানটিন চালু রাখতে মালিকেরা সহজে রাজি হবেন না। পদ্মা সেতু হলে বরিশালে মানুষের চলাচল বাড়বে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দক্ষিণাঞ্চলে চলে আসবেন। সে ক্ষেত্রে লঞ্চের যাত্রী সুবিধা আরও বাড়াতে হবে।

নগরীর সমাজসেবক আনোয়ারুল হক তারিন বলেন, লঞ্চ সার্ভিসের সঙ্গে এ অঞ্চলের শত শত যাত্রীর স্বার্থ জড়িত। তাদের সুবিধায় উভয় প্রান্ত থেকে রাত সাড়ে ৯টা-১০টার মধ্যে লঞ্চ চলাচলের সময় নির্ধারণ করা যেতে পারে।

লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, যানজট এড়াতে ঢাকা থেকে লঞ্চ পিছিয়ে ছাড়া সম্ভব। কিন্তু বরিশাল থেকে একই সময়ে ছাড়া জটিল হবে। যাত্রীদের টাইম টেবিল পরিবর্তনের দাবি জানানো হলে মালিকেরা এ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারেন। তবে এ জন্য বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে টাইম টেবিল পরিবর্তনের আবেদন করতে হবে। পদ্মা সেতু চালু হলেও লঞ্চের যাত্রী সেবা নিয়ে খুব একটা সংকট হবে না। কেননা লঞ্চ সার্ভিসের সেবা দিন দিন আরও আধুনিক হচ্ছে।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ