Ajker Patrika

কাগজে আছে ২১ খাল, বাস্তবে হাতে গোনা

সনি আজাদ, চারঘাট 
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২২, ১৫: ৫৫
কাগজে আছে  ২১ খাল, বাস্তবে  হাতে গোনা

পদ্মা নদী ও বড়াল নদকেন্দ্রিক অসংখ্য খালঘেরা সীমান্তবর্তী কৃষিনির্ভর উপজেলা রাজশাহীর চারঘাট। কিন্তু অযত্ন, অবহেলা আর দখলদারদের দৌরাত্ম্যে অস্তিত্ব হারাচ্ছে এসব খাল। এ জন্য বর্ষাকালে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা এবং শুষ্ক মৌসুমে খালের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকেরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালীরা খালের জায়গা দখল করে গড়ে তুলছেন একের পর এক অবৈধ স্থাপনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কাগজে-কলমে উপজেলায় ছোট-বড় ২১টি খাল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে গঙ্গামতী খাল, ঝিনি খাল, ত্রিমোহিনী খাল, কাটা বড়াল খাল, শ্যামা সুন্দরী খাল শলুয়ার দহ খাল, নিমপাড়া খাল বেশ উল্লেখযোগ্য। তবে বাস্তবে এসব খালের অধিকাংশের অস্তিত্ব নেই। যে কয়টা খাল আছে সেগুলোও দখল-দূষণে এখন পানিসংকটে পড়েছে। এই উপজেলায় ধান, আখ, আলু, পেঁয়াজ ও রসুন বেশি চাষ হয়। এসব চাষাবাদে সেচ লাগে। বছরের বেশির ভাগ সময় খালগুলোতে পানি না থাকায় ফসল ফলাতে নলকূপ থেকে সেচ দিতে হচ্ছে। তাই খালগুলো দখলমুক্ত ও পুনর্খননের দাবি কৃষকদের।

উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, চারঘাট-বানেশ্বর সড়কের পাশের পদ্মা নদী ও নারদ নদের খালটি একবারে শুকিয়ে গেছে। সেই খালের বেশির ভাগ অংশ ভরাট করে রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। উপজেলার অন্য খালগুলোতেও পানির অস্তিত্ব নেই।

এদিকে বড়াল নদ থেকে শলুয়ার দহ পর্যন্ত প্রশস্ত খালটিতে চলছে স্থানীয়দের দখল উৎসব। জানা যায়, অনেকে বাড়ি ও দোকানে যাতায়াতের পথ তৈরি করতে গিয়ে খাল ভরাট করছেন। অনেকে মাছ চাষ করছেন। এদিকে খালের বামুনদীঘি অংশে খাল ভরাট করে পিলার দিয়ে মোয়াজ্জেম, বানী, বাদশা, বুজ্জ, মোমিনসহ একাধিক ব্যক্তি ভবন, মার্কেট, দোকান ও রাজনৈতিক কার্যালয় গড়ে তুলেছেন।

শলুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, একসময়ের প্রশস্ত খালটি বছরের বেশির ভাগ সময় শুকিয়ে থাকে। খাল দখল করে ভবন নির্মাণ করায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যে যেভাবে পারছে খাল দখল করছে। পানি থাকলে কৃষকদের অনেক সুবিধা হতো। প্রশাসনের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

স্থানীয় বাসিন্দা মাজেদা বেওয়া বলেন, ‘আমি নৌকা দিয়ে বাপের বাড়ি ঝিকরা থেকে স্বামীর বাড়ি শলুয়া আসতাম। এখন আর সম্ভব নয়। এখন খালটি শুকিয়ে গেছে। পানি থাকলে মানুষজন মাছ ধরে খেতে পারত এবং কৃষকেরাও জমিতে পানি দিতে পারতেন।’

খাল দখল করে দোকানঘর নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে বামনদিঘী এলাকার মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘আমরা একটা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলাম, কিন্তু আপাতত সেটা বন্ধ রয়েছে। তবে আমাদের জন্য খালে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এমনটা নয়। অনেকেই খাল দখল করে আছে।’

উপজেলা নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় ছোট-বড় ২১টি খাল কাগজে রয়েছে, বাস্তবে নেই। এই খালগুলো সিএস নকশায় রয়েছে। নকশা ধরে এসব খাল উদ্ধার করে খনন করলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন।’

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়তি রানী কৈরী বলেন, খাল পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ ইতিমধ্যে চলমান আছে। যদি কোথাও কোনো খাল দখল হয়, তাহলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

পুলিশ হত্যাকারী ফোর্স হতে পারে না: আইজিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত