Ajker Patrika

নিত্য জট, দায় নেয় না কেউ

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ০৭
নিত্য জট, দায় নেয় না কেউ

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরশহর প্রতিদিনই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে পৌরবাসীকে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। পণ্যবাহী যান শহরে সহজে ঢুকতে পারে না বলে বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ীরা।

যানজটের কারণ সম্পর্কে পুলিশ বলছে, শহরে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ নেই। সেই সঙ্গে যানবাহনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্ট্যান্ড নেই।

জানা গেছে, বর্তমানে সান্তাহার পৌরশহরে শতাধিক চার্জার রিকশা, তিন শতাধিক ভ্যান, তিন শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোচার্জার ও তিন শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ শতাধিক ট্রাক ও ট্রাক্টর আছে। কিন্তু শহরে নেই কোনো টার্মিনাল। এ কারণে শহরজুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করায় সৃষ্টি হয় ভয়াবহ জট।

রেলস্টেশন-সংলগ্ন সান্তাহার-নওগাঁ ব্যস্ত রাস্তার ওপর গড়ে উঠেছে একাধিক রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোচার্জার ও অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড। এ কারণে এই রাস্তার ওপর দিনভর নানা ধরনের যানবাহন অবস্থান করে।

এই রাস্তা থেকে সান্তাহার-নওগাঁ, সান্তাহার-তিলকপুর, সান্তাহার-রানীনগর, সান্তাহার-বগুড়ামুখী শত শত যান চলাচল করে। এর ফলে যানবাহনের পাশাপাশি ট্রেনযাত্রী ও পথচারীরা এই রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে না।

অপর দিকে শহরের মাঝখানে থাকা রেল ক্রসিং শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। বেশির ভাগ সময় রেলগেট বন্ধ থাকে। এ কারণে গেটের দুই পাশের রাস্তার ওপর আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন।

কোনো কোনো সময় গেটের দুই পাশের যানবাহনের লাইন এক কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। গেটের পূর্ব পাশে রাস্তার ওপর সান্তাহার-বগুড়া বাস ও অটোরিকশার স্ট্যান্ড থাকায় যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

জানতে চাইলে সান্তাহার সচেতন নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকারকর্মী রবীন্দ্র প্রসাদ গুপ্তা বলেন, সান্তাহার পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণে শহরজুড়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ছে। শহরে টার্মিনাল বা কোনো নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড না থাকায় সবগুলো রাস্তা স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে শহরের বাইরে টার্মিনাল নির্মাণ করা না হলে শহর অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে। শত শত যানবাহন নিয়ন্ত্রণে শহর নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ।

ব্যবসায়ী মো. নয়ন হোসেন বলেন, ‘যানজট অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই শহরে যানজট লাগে। এ কারণে এই শহরের মধ্যে সহজে পণ্যবাহী বড় যানবাহন ঢুকতে পারে না। এ কারণে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’

পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু বলেন, ‘সান্তাহার শহরকে যানজটমুক্ত শহর হিসেবে আমিও দেখতে চাই। তাই আমি সান্তাহারবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সবার সহযোগিতায় এই শহরে একটি টার্মিনাল ও কয়েকটি স্ট্যান্ড নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আশা করি, এরপর যানজট কমবে।’

সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার পুলিশ সদস্যদের দিয়ে সবসময় যানজট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এত বড় একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ত শহরে কোনো ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় আমরা সমস্যায় পড়ি। শিগগিরই পুলিশ সুপার দুজন ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করে দেবেন। তবে এ ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি শহরে নির্দিষ্ট টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড থাকতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ