Ajker Patrika

তীরের মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২১, ১০: ১০
তীরের মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীর এবং সংলগ্ন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে সাবাড় করে ফেলছে সংঘবদ্ধ চক্র। নদী তীর সংরক্ষণের ব্লকও তুলে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এসব কারণে নদী ভাঙন তীব্র আকার দেখা দিয়েছে।

সদর উপজেলার তালতলী, চরমোনাইর গিলাতলি-পশুরকাঠী, চরকাউয়ার পামের হাট এলাকায় ফসলি জমি কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এদিকে নগরীর ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন ব্লক তুলে ফেলায় বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়। সংশ্লিষ্টরা এ জন্য প্রশাসনকে দায়ী করে বলেছেন, কীর্তনখোলার তীর অরক্ষিত হওয়ায় পূর্বাঞ্চলের অভিশাপ ‘নদী ভাঙন’ দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

বরিশালের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ হোসেন জানান, কীর্তনখোলা নদী তীরের চরমোনাই ও চরকাউয়ার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। ওই এলাকার ফুজি এবং মিনা ইটভাটা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই মাটি কেটে নিচ্ছে। তিনি গত সপ্তাহে নদী তীর থেকে মাটি কাটতে দেখেছেন।

চরকাউয়ার পামের হাটের বাসিন্দা রেমন শরিফ জানান, তারা এলাকা ভাঙনে তছনছ হয়ে গেছে। বহু ঘরবাড়ি ভেঙে চলে গেছে নদীতে। নদীর পাড়ের বালু ও মাটি কাটায় ভাঙন আরও বাড়ছে।

চরমোনাই ইউপি সদস্য মামুন গাজী বলেন, চরমোনাইর গিলাতলি-পশুরকাঠী এলাকায় মাটি কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। নদীর পাড় থেকে ধানি জমির এই মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। মিনা ইটভাটা চরমোনাই এবং ফুজি চরকাউয়ায় মাটি কাটছে।

এদিকে নগরীর ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন কীর্তনখোলা তীরে যে বাঁধ দেওয়া হয়েছিল সেখানকার ব্লক খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাঁধ ভেঙে ওই এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। একই খবর পাওয়া গেছে, লামছড়ি ও চরআবদানী এলাকায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন দাস এ প্রসঙ্গে বলেন, ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদী রক্ষায় ব্লক ফেলে যে বাঁধ দেওয়া হয়েছিল তার একাংশ প্রয়াত মেয়র হিরনের সময় সিটি করপোরেশন এবং বাকি অংশ পাউবো করেছে। খতিয়ে দেখতে হবে যেসব স্থান থেকে ব্লক তুলে নেওয়া হয়েছে তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিনা।

জানতে চাইলে কীর্তনখোলা তীর ঘেঁষা পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক মুনাওয়ারুল ইসলাম অলি বলেন, এই এলাকা বহু আগ থেকেই অবহেলিত। নদী ভাঙন সবচেয়ে বড় সমস্যা চরকাউয়া, চরমোনাই, শায়েস্তাবাদ, চরবাড়িয়া ইউপির। তার ওপর কীর্তনখোলা নদীর দুই পারের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটার দুর্বৃত্তরা। উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। একদিকে ভাঙন বাড়ছে, অপরদিকে মাটি আর বালু কেটে সাবাড় করছে। এ জন্যই তারা এই এলাকা নিয়ে আলাদা উপজেলা গড়ে তোলার দাবি তুলে আসছেন।

এদিকে ব্য ব্যাপারে চেষ্টা করেও ফুজি ও মিনা ইটভাটার কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান জানান, গত বছরও নদী তীরে মাটি কাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিয়েছেন। এবারও নদী ভাঙন রোধে একই ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এ জন্য কোন কোন স্থানের মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিখোঁজের দুই দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা উদ্ধার

পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন হত্যায় দুই শুটারসহ ৫ জন গ্রেপ্তার

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১২ নভেম্বর ২০২৫

বিহারে বিজেপি-নীতীশ জোট এগিয়ে, বলছে বুথফেরত জরিপ

ট্রাফিক সার্জেন্টকে গালিগালাজ: কর কর্মকর্তা ফাতেমার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে লঘুদণ্ড

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ