Ajker Patrika

দুর্গোৎসবে কুমারদের ব্যস্ততা বেড়েছে

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৮: ০০
দুর্গোৎসবে কুমারদের ব্যস্ততা বেড়েছে

মেলামাইন, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে বগুড়ার কুমারপল্লিগুলোর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। তবে দুর্গাপূজার উৎসবকে সামনে রেখে বগুড়ার মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু প্রতিমাই নয়, তাঁরা তৈরি করছেন মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস।

এসব জিনিসের মধ্যে তাঁরা ছোটবড় আকৃতির খেলনা তৈরি করেন। সেসব খেলনা পূজার মেলাতে বিক্রি হবে। এ ছাড়া মাটির অনেক তৈজসপত্রেরও চাহিদা থাকে দুর্গাপূজার মেলাগুলোতে। তবে পূজা উপলক্ষে কুমারপল্লিতে যে ব্যস্ততা দেখা যায় তা শুধু বছরের এই সময়টাতেই। অন্য সময়ে তাঁদের এমন ব্যস্ততা থাকে না।

তারপরও এ পেশায় আর্থিক সংকটে থেকেও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছেন অনেকেই। বগুড়ার কুমারপল্লিগুলোতে দইয়ের সরা, কাপ ও টব ছাড়া চোখে পড়ার মতো এখন আর কোনো পণ্য তৈরি হচ্ছে না।

তবে পূজা উপলক্ষে কুমারপল্লিতে যে ব্যস্ততা দেখা যায়, তা শুধু বছরের এই সময়টাতেই থাকে। অন্য সময়ে তাঁদের এমন ব্যস্ততা থাকে না।

সম্প্রতি বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, গাবতলী ও নন্দীগ্রাম উপজেলার কুমারপল্লি ঘুরে দেখা গেছে, মাটির কলস, হাঁড়ি, দইয়ের সরা, বাসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, পিঠা তৈরির নানা ছাঁচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আগে বাসাবাড়িতে গ্রহণযোগ্য ছিল। বর্তমানে এসবের ব্যবহার কমে গেছে। গ্রামে সামান্য পরিমাণে ব্যবহৃত হলেও শহরে চলে না মাটির পাত্র। তবে দইয়ের সরা, মাটির টব ও হাঁড়ির ব্যবহার এখনো আছে। এটুকুকে আশ্রয় করেই এখন বেঁচে আছেন এ পেশার সঙ্গে জড়িত সহস্রাধিক পরিবার। বগুড়ায় তৈরি এসব পণ্য রাজশাহী, ঢাকা, নওগাঁ ও সিলেট, গাইবান্ধা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়।

বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় মৃৎ কারিগর মনোহর পালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দুই যুগ আগেও আমাদের এখানে তৈরি হতো ছোটবড় পাতিল, কলসি, সানকিসহ আরও অনেক কিছু। কিন্তু বর্তমানে বাজারে এগুলোর আর চাহিদা নেই।’ তিন বেলা অন্ন জুটছে না তাঁদের মুখে। তবে এখন দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমাসহ মাটির অন্যান্য সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁদের।

মৃৎশিল্পীরা দাবি করেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করে মাটির জিনিসপত্রের প্রয়োজনীয়তা জনসাধারণের কাছে তুলে ধরা দরকার। তা না হলে তাঁদের স্থান হবে শুধুই বইয়ের পাতায়। আর্থিক সংকটে তাঁরা এ পেশা পুরোপুরি ছাড়তে বাধ্য হবেন।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের বগুড়ার উপব্যবস্থাপক জিন্নাত বলেন, ‘মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে তাঁদের পাশে আমরা দাঁড়াব। আর্থিক সাহায্যের জন্য আমাদের কাছে কেউ এলে নিয়ম অনুযায়ী আমরা তাঁকে সাহায্যে করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ